পঁচিশ বিঘা পর্যন্ত ভূমি উন্নয়ন কর মওকুফ

বিল পাস, বাংলা সনের পরিবর্তে আদায় হবে অর্থবছরে বিভিন্ন সংস্কার কার্যক্রমে হয়রানি কমছে : ভূমিমন্ত্রী

আজাদী ডেস্ক | সোমবার , ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ at ৬:১১ পূর্বাহ্ণ

বিদ্যমান বাংলা সনের পরিবর্তে ভূমি উন্নয়ন কর আদায় হবে অর্থবছরে (জুলাইজুন)। এমন বিধান যুক্ত করে ‘ভূমি উন্নয়ন কর বিল ২০২৩’ পাস হয়েছে। এই আইনে কৃষি জমির মোট পরিমাণ ২৫ বিঘা পর্যন্ত হলে ভূমি উন্নয়ন কর দিতে হবে না। গতকাল জাতীয় সংসদে ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী বিলটি পাসের জন্য প্রস্তাব করলে তা কণ্ঠ ভোটে পাস হয়। ১৯৭৬ সালের ল্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ট্যাক্স অর্ডিন্যান্স রদ করে নতুন আইনটি পাস হলো। খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি ও বান্দরবান এই তিন পার্বত্য জেলায় এই আইন কার্যকর হবে না। এ বিলের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে বিরোধী দলের সদস্যরা ভূমি অব্যবস্থাপনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন। খবর বাংলানিউজের।

ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেন, সাধারণ মানুষকে এসব হয়রানির থেকে রেহাই দিতে বিভিন্ন সংস্কার কার্যক্রম নেওয়া হয়েছে। অনলাইনে রাজস্ব আদায়ের কাজ শুরু হওয়ায় হয়রানি কমে আসছে। প্রতিদিন সরকার অনলাইনেই ৫ কোটি টাকার ওপরে রাজস্ব পাচ্ছে। এটা বিশাল অগ্রগতি। খবর বাংলানিউজ ও বাসসের।

তিনি বলেন, নতুন এই আইনের আওতায় অনলাইনে ভূমি উন্নয়ন কর আদায় করার ফলে ভূমির মালিক সর্বসাধারণ উপকৃত হবেন এবং স্মার্ট ভূমি ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে সহায়ক হবে। এতে সরকারের রাজস্ব বাড়বে। তিনি বলেন, আইনে জনস্বার্থে ২৩টি ধারা সন্নিবেশ করা হয়েছে।

পাস হওয়া বিলে বলা হয়েছে, একনাগাড়ে তিন বছর ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধ না করা হলে প্রথম থেকে তৃতীয় বছর পর্যন্ত বার্ষিক ৬ দশমিক ২৫ শতাংশ হারে জরিমানা হবে। তৃতীয় বছর শেষে বকেয়া ভূমি উন্নয়ন কর সার্টিফিকেট মামলা করে আদায় করা হবে। কৃষি কাজের ওপর নির্ভরশীল ব্যক্তি বা পরিবারভিত্তিক কৃষি জমির মোট পরিমাণ ৮ দশমিক ২৫ একর বা ২৫ বিঘা পর্যন্ত হলে ভূমি উন্নয়ন কর দিতে হবে না। তবে এই জমির পরিমাণ ২৫ বিঘার বেশি হলে সম্পূর্ণ কৃষি ভূমির ওপর ভূমি উন্নয়ন কর দিতে হবে।

এছাড়া বর্তমানে বাংলা সন (বৈশাখচৈত্র) হিসাবে ভূমি উন্নয়ন কর আদায় করা হয়। পাস হওয়া বিলে বলা হয়েছে, ভূমি উন্নয়ন কর আদায় হবে জুলাইজুন অর্থবছর হিসাবে। প্রতি বছর জুলাইয়ের ১ তারিখ থেকে পরবর্তী বছরের ৩০ জুনের মধ্যে ভূমি উন্নয়ন কর জরিমানা ছাড়া দেওয়া যাবে।

এতে আরও বলা হয়, আখ ও লবণ চাষের ভূমি এবং কৃষকের পুকুরও (বাণিজ্যিক মৎস্য চাষ ব্যতীত) মওকুফের আওতায় থাকবে। এতে বলা হয়েছে, কৃষি ভূমি পল্লি এলাকা বা পৌর এলাকা যেকোনো স্থানে অবস্থিত হোক, সব ক্ষেত্রে অভিন্ন ভূমি উন্নয়ন কর হার ও শর্ত প্রযোজ্য হবে। সরকার যেকোনো ব্যক্তি বা শ্রেণির ব্যক্তিবর্গ বা সংস্থার উন্নয়ন কর মওকুফ করতে পারবে।

ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা প্রতি বছর জুলাইয়ের মধ্যে এলাকা পরিদর্শন করে ভূমির ব্যবহারভিত্তিক অবস্থা বিবেচনায় নির্ধারিত ফরমে সব মৌজার ভূমি উন্নয়ন কর নির্ধারণ করে তা সহকারী কমিশনারের (ভূমি) কাছে পাঠাবেন। সহকারী কমিশনার তা পরীক্ষা করে অনুমোদন করবেন। ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে ভূমি উন্নয়ন কর আদায় করা যাবে। ইলেকট্রনিক পদ্ধতি সারা দেশে পূর্ণরূপে প্রবর্তিত না হওয়া পর্যন্ত এই পদ্ধতির পাশাপাশি প্রচলিত পদ্ধতিতে যেকোনো ব্যাংকের মাধ্যমে ভূমি উন্নয়ন কর আদায়ের ব্যবস্থা নিতে পারবে। সংসদে পাস হওয়া বিলে কার কত ভূমি উন্নয়ন কর, তা আগেই জমির মালিককে জানিয়ে দেয়ার বিধান রাখা হয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবিএফডিসিকে পাহাড়তলীতে জমি হস্তান্তর করল বিটিভি
পরবর্তী নিবন্ধডেঙ্গুতে আরও এক নারীর মৃত্যু