পাহাড়ে কিংবা সমতলে কোনোভাবেই নিজেদের অবস্থান জোরদার করতে পারছে না নতুন জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বিয়া। তাই তাদের নতুন পরিকল্পনা ছিল নৌ ইউনিট গঠনের। কিন্তু র্যাবের গোয়েন্দা তৎপরতায় তাদের এ তথ্যও জানাজানি হয়ে গেছে। র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, সামরিক প্রশিক্ষণ নিয়ে সমতলে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়লে আইনশৃংখলা বাহিনী তৎপর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সবাই নৌ ইউনিটে গিয়ে আশ্রয় নেবে, এমনটাই পরিকল্পনা ছিল সংগঠনটির। এই ইউনিট করতে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল সম্প্রতি গ্রেপ্তার হওয়া জঙ্গি কাজী সিরাজ উদ্দিন ওরফে সিরাজকে। জঙ্গি সংগঠন হুজি থেকে শারক্বিয়ায় যোগ দেওয়া সিরাজ র্যাবকে জিজ্ঞাসাবাদে এ তথ্য জানায়।
র্যাব বলছে, প্রশিক্ষণের পর সমতলে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকার পর যদি তারা মনে করে সমতলে টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়ছে সে বিষয়টি মাথায় রেখে আগে থেকেই নৌ ইউনিটের পরিকল্পনা করা হয়। এই নৌ ইউনিটের অর্থায়নের পেছনে অর্থদাতা হিসেবে ছিল আনসার আল ইসলাম। পটুয়াখালী ভোলার মধ্যে থাকা বড় নদীগুলোকে টার্গেট করে এই নৌ ইউনিট করার পরিকল্পনা ছিল। বড় নদীগুলো পার হয়ে যেসব চর রয়েছে সেখানে অবস্থান করারও পরিকল্পনা ছিল তাদের। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি টের পেলে নৌপথ ব্যবহার করে নিজেদের অর্থায়নে বানানো বড় বড় নৌকার মাধ্যমে বড় নদীগুলোতে অবস্থান করবে এমনটাই পরিকল্পনা ছিল তাদের।
র্যাব আরও জানায়, এতকিছু পরিকল্পনা করার পর নৌ ইউনিট করার জন্য অর্থলগ্নী করলেও পরবর্তীতে সেটি কিছুটা পিছিয়ে যায়। কারণ পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকায় তারা একটি মানানসই জায়গা পেয়েছিল যার সহায়তা করে বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন কেএনএফ। যেখানে সামরিক প্রশিক্ষণ নেওয়ার সুযোগ পায় শারক্বিয়ায় যুক্ত হওয়া সদস্যরা।
র্যাবের তথ্য মতে, শারক্বিয়ার সঙ্গে জড়িত ১২ থেকে ১৫ জন এখনও ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছে। তার মধ্যে পাহাড়ে গিয়ে প্রশিক্ষণ নেওয়া ১০ জন রয়েছে। আবার তাদের প্রশিক্ষক হিসেবে ছিল দুইজন; যারা উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন বিস্ফোরক বা আইইউডি তৈরিতে পারদর্শী।
র্যাবের তথ্য বলছে, ২০২২ সালের অক্টোবর থেকে ২০২৩ সালের ৩০ জুলাই পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন জায়গা এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বিয়ার ৮২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের সহযোগিতার অভিযোগে পাহাড়ি বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন কেএনএফের ১৭ জন নেতাকে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে।