অন্তর্বর্তী সরকারের ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেছেন, শিক্ষা ও সমাজের ইসলামিকীকরণে আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রামের (আইআইইউসি) ভূমিকা রয়েছে। নানা অগ্রগতির মাধ্যমে যার প্রমাণ ইতোমধ্যে দৃশ্যমান হয়েছে। আইআইইউসি শুধু বাংলাদেশের জন্য নয়, দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়ার জন্যও গৌরব বয়ে এনেছে। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের গৌরবময় পাণ্ডিত্য ও পেশাগত দক্ষতা রয়েছে। তারা শুধু দেশে নয়, বিদেশেও প্রসিদ্ধ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কৃতিত্বের সঙ্গে ডিগ্রি অর্জন করছেন।
গতকাল সোমবার সকালে আইআইইউসির কেন্দ্রীয় মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত আইআইইউসির ‘ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এবং সমসাময়িক চ্যালেঞ্জসমূহ’ শীর্ষক দুই দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক সম্মেলন উদ্বোধনকালে তিনি এসব কথা বলেন।
আইআইইউসি ও মিশরের কায়রোর ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় লিগের যৌথ আয়োজনে অনুষ্ঠিত এই ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্সে সভাপতিত্ব করেন আইআইইউসির ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আলী আজাদী। প্রধান অতিথি ছিলেন আইআইইউসি ট্রাস্টের জেনারেল কাউন্সিলের চেয়ারম্যান, সৌদি আরবের ইসলামিক কাউন্সিল ফর দাওয়াহ অ্যান্ড রিলিফের সেক্রেটারি জেনারেল প্রফেসর ড. আবদুল্লাহ আবদুল আজিজ আল–মুসলিহ। দুদিনব্যাপী এই ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্সে বাংলাদেশসহ বিশ্বের ২৪টি দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাবিদ, ইসলামী চিন্তাবিদ ও গবেষক–প্রতিনিধিগণ অংশগ্রহণ করেন। এদের মধ্যে ৮ জন কি–নোট স্পিকার রয়েছেন। কনফারেন্সে মোট প্রাপ্ত প্রবন্ধের সংখ্যা ১১০টি। যার অধিকাংশ প্রবন্ধ কনফারেন্সে উপস্থাপিত হবে। মোট ৭টি একাডেমিক সেশন অনুষ্ঠিত হবে।
বক্তব্যে ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, বিশ্বের ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়গুলো গৌরবের আলোকবর্তিকা। নৈতিকতা ও মূল্যবোধ প্রসারে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভূমিকা অনস্বীকার্য। তাই আমাদের বসে থাকলে চলবে না। অপার সম্ভাবনা আমাদের হাতছানি দিচ্ছে। আইআইইইউসির মতো ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যেসব শিক্ষার্থী বের হবে, তারাই আগামীদিনে পৃথিবীর নেতৃত্ব দেবে। এ কারণে আমাদের ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সেরকম গ্র্যাজুয়েট বের করতে হবে। জনগণের যে আকাঙ্ক্ষা ও চাহিদা, সেটা পূরণের জন্য ইসলামিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের প্রয়োজন।
তিনি বলেন, সারা বিশ্বের মুসলিমরা আজ নানাভাবে বিভক্ত। নানা বিভাজন মুসলিম উম্মাহর শক্তিকে দুর্বল করেছে। তাই তাওহিদের ভিত্তিতে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আমাদের দৃষ্টিভঙ্গী আরও উদার এবং হৃদয়কে অনেক বড় করতে হবে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. আবদুল্লাহ বিন আব্দুল আজিজ আল–মুসলেহ বলেন, একটা কঠিন স্বপ্ন নিয়ে এই বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। সেই স্বপ্নের বাস্তবায়ন আজ দেখতে পাচ্ছি। এ সময় তিনি কুরআন ও হাদীস উদ্ধৃত করে ইসলামের গৌরবময় ঐতিহ্য তুলে ধরেন।
বিশিষ্টজনদের মধ্যে আইআইইউসির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যানের পক্ষে বক্তব্য রাখেন বিওটি সদস্য ও ইন্টারন্যাশনাল এফেয়ার্স ডিভিশনের চেয়ারম্যান ড. আ জ ম ওবায়দুল্লাহ, ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ শামসুল আলম, ইসলামিক ইউনিভার্সিটিজ লীগের সেক্রেটারি জেনারেল প্র্রফেসর ড. সামী মোহাম্মদ রাবী আল শরীফ এবং আইআইইউসির এমিরেটাস প্রফেসর ড. একেএম আজহারুল ইসলাম। স্বাগত বক্তব্য রাখেন কনফারেন্স আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক, আইআইইউসির গবেষণা ও প্রকাশনা কেন্দ্রের মহাপরিচালক প্রফেসর ড. নাজমুল হক নাদভী।