নেদারল্যান্ডের লিলিয়াম দেড় মাসেই ফুটেছে ফুল

চাষ হচ্ছে খাগড়াছড়িতে, লাভজনক হওয়ায় আগ্রহী চাষিরা

সমির মল্লিক, খাগড়াছড়ি | সোমবার , ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪ at ১০:২৪ পূর্বাহ্ণ

খাগড়াছড়িতে প্রথমবারের মতো চাষ হচ্ছে নেদারল্যান্ডের ফুল লিলিয়াম। পরীক্ষামূলকভাবে মূল্যবান এই ফুল চাষে ইতোমধ্যে সাফল্য এসেছে। পাহাড়ের আবহাওয়া ও মাটি লিলিয়াম চাষে উপযোগী বলছে উদ্যোক্তারা। কমলা রঙের লিলিয়াম ফুলের চাষ সমপ্রসারিত হলে সমৃদ্ধ হবে স্থানীয় কৃষি অর্থনীতি।

খাগড়াছড়ি সরকারি মহিলা কলেজ সড়কের ওয়াইল্ড গার্ডেনে শীতে পেখম মেলেছে লিলিয়াম। প্রসারিত পাঁপড়ি, মন মাতানো রঙ আর সুঘ্রাণের কারণে চাহিদার শীর্ষে লিলিয়াম ফুল। দেশে এর ব্যাপক চাহিদা থাকায় শীতপ্রধান দেশ থেকে আমদানি করা হয় এ ফুল। সমপ্রতি এই ফুলের চাষ হয়েছে খাগড়াছড়িতে। কমলা রঙের এশিয়াটিক লিলিয়াম চাষে সাফল্যও পেয়েছে উদ্যোক্তারা। প্রাথমিকভাবে পরীক্ষামূলক চাষে লাগানো ২০০ গাছে ফুল ধরেছে। লিলিয়ামের সৌন্দর্য দেখে মুগ্ধ নিসর্গপ্রেমীর। লাভজনক হওয়ায় লিলিয়াম চাষে আগ্রহী চাষিরা। স্থানীয় ফুল প্রেমী অনিমেষ ত্রিপুরা ও ছোটন বিশ্বাস জানান, প্রথমবার ফুলটি দেখেছি। খুব সুন্দর। এটির ঘ্রাণও দারুণ। মানুষ শোভা বর্ধনের জন্য এটি নিয়ে যায়। দামও বেশ ভালো। আগে বিভিন্ন নার্সারিতে দেখতাম। এখন পাহাড়ের মাটিতে চাষ হচ্ছে। আশা করি এটি প্রচুর চাষাবাদ শুরু হবে। শীতপ্রধান দেশগুলোতে সাদা, হলুদ, কমলা, গোলাপি, লাল ও বেগুনি বর্ণের লিলিয়াম ফুল দেখা যায়। খাগড়াছড়ির মাটি ও আবহাওয়া লিলিয়াম চাষের উপযোগী। রোপণের মাত্র দেড় মাসের মধ্যে ফুল ফুটেছে জানিয়েছেন লিলিয়াম চাষের মূল উদ্যোক্তা ও পরিকল্পনাকারী সাথোয়াই মারমা। তিনি বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের সব জনগোষ্ঠী এই ফুল চাষ করে যাতে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হতে পারে সেজন্য এটি পরীক্ষামূলকভাবে চাষাবাদ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে পাহাড়ের মাটিতে এটি চাষ হয়েছে এবং ফুল ফুটেছে। লিলিয়াম চাষের উপযোগিতা সফলভাবে পরীক্ষা করেছি। কন্দ রোপণের মাত্র ৪৫ দিনের মধ্যে ফুল ফুটেছে। ২০ অক্টোবর কন্দ রোপণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে সবগুলো গাছ ফুলে ফুলে রঙিন হয়ে উঠেছে। বাজারে প্রতিটি লিলিয়াম ফুলের স্টিক বিক্রি হয় তিনশ থেকে চারশ টাকায়।

লিলিয়াম চাষের মাধ্যমে স্থানীয় জনগোষ্ঠী লাভবান হবে আশা বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তার। তিনি বলেন, পাহাড়ি এলাকাতে লিলিয়াম এটা খুব পজেটিভ বিষয়। এখানকার চাষিরা লিলিয়াম চাষ করে লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এর আগে এটির চাষাবাদ হয়নি। প্রথমবারেই ফুলটি পাহাড়ের মাটি ও আবহাওয়ার সাথে মানিয়ে নিয়েছে। এটির চাষ বাড়লে লিলিয়ামের আমদানি নির্ভরতা অনেকটা কমে আসবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধক্যান্সারের যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে মুক্তিযোদ্ধার আত্মহত্যা
পরবর্তী নিবন্ধসাধারণ মানুষ সংস্কার বোঝে না, তারা চায় ভোট দিতে : ফখরুল