বিশ্বকাপে দারুণ শুরু করেছে ব্রাজিল। তবে সে ম্যাচে গোল করতে পারেননি নেইমার। তবে দ্যুতি ছড়িয়েছেন রিচার্লিসন। তার দুই গোলে ব্রাজিল করেছে ছন্দময় সূচনা। কিন্তু আনন্দের সে রাতে ব্রাজিলকে পেতে হয়েছিল দুঃসংবাদ। কারন সে ম্যাচেই আঘাত পেয়ে পরের দুই ম্যাচের জন্য ছিটকে গেছেন নেইমার। তাকে ছাড়াই আজকের ম্যাচে জিতে নক আউট পর্ব নিশ্চিতের লক্ষ্যেই মাঠে নামবে ব্রাজিল।
দারুন পারফরমেন্স উপহার দিয়ে ব্রাজিল প্রথম ম্যাচেই সমর্থকদের প্রত্যাশা পূরণে অনেকটাই সফল হয়েছে। বিশ্বকাপের শুরুতেই তিতেসহ পুরো দলই ইঙ্গিত দিয়েছিল ব্রাজিল এখন আর শুধুমাত্র নেইমার নির্ভর নয়। তার প্রমাণ প্রথম ম্যাচেই মিলেছে। সে কারনেই আগের দুই বিশ্বকাপে যে চাপ নিয়ে নেইমার মাঠে নেমেছিলেন তার থেকেই অনেকটাই নির্ভার হয়ে এবার তিনি নেমেছিলেন। কিন্তু আবারো সেই ইনজুরি তার ছায়াসঙ্গী হয়েই থেকে গেল। এবারের টুর্নামেন্টে ব্রাজিলের প্রথম ম্যাচের প্রতিপক্ষ সার্বিয়াকে ডার্ক হর্স হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছিল। কিন্তু সেলেসাওরা তাদের আধিপত্য দিয়ে সার্বিয়াকে দাঁড়াতেই দেয়নি। দ্বিতীয়ার্ধে রিচার্লিসনের জোড়া গোলে সার্বিয়া পরাজিত হয়। বিশ্বকাপের শুরুতে ব্রাজিলিয়ান ও ব্রিটিশ গণমাধ্যমে রিচার্লিসনকে মূল একাদশে খেলানো নিয়ে যে আলোচনা শুরু হয়েছিল তার জবাব অনেকটাই দিয়ে দিয়েছেন ২৫ বছর বয়সী এই তারকা। এদিকে সুইজারল্যান্ড তাদের প্রথম ম্যাচে ক্যামেরুনের রিুদ্ধে নিজেদের ভালই প্রমাণ করেছে। গোলরক্ষক ইয়ান
সোমারকে খুব বেশী পরীক্ষায় ফেলতে পারেনি ক্যামেরুন। নতুন কোচ মুরাত ইয়াকিন সেই একই কৌশলে সুইসদের এগিয়ে নিয়ে গেছেন। এই জয়ে ইয়াকিন সন্তুষ্ট হতেই পারেন। তার উপর দল কোন গোল হজম করেনি। শেষ ১০ ম্যাচে এনিয়ে দ্বিতীয়বার সুইজারল্যান্ড কোন গোল হজম না করে ম্যাচ শেষ করেছে। তবে সেই ম্যাচগুলোর বেশীরভাগই নেশন্স লিগে শীর্ষ দলগুলোর বিপক্ষে ছিল। ইউরো ২০২০ এর বাছাইর্বে শেষ ছয়টি ম্যাচ সুইসরা মাত্র এক গোল খেয়েছিল। ঐ সময়ই ইয়াকিন দলের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। চার বছর আগে গ্রুপ পর্বে তারা ব্রাজিলের সাথে ১-১ গোলে ড্র করেছিল। ক্যামেরুনের সাথে জয়ী হয়ে টানা চার ম্যাচে তারা অপরাজিত রয়েছে। এই জয়ে স্পেন ও পর্তুগালের মত দলও রয়েছে। ব্রাজিলের বিপক্ষে এই সংখ্যা পাঁচ করতে পারলে নক আউট পর্বও নিশ্চিত হয়ে যাবে। প্রথম ম্যাচের গোলদাতা বিল এম্বোলোর জন্য গোলের মুহূর্তটি ছিল অন্যরকম এক অনুভূতি। নিজের জন্মভূমির বিরুদ্ধে গোল করে তিনি দলকে প্রথম জয় উপহার দিয়েছেন। এ দিকে গোঁড়ালির লিগামেন্ট ইনজুরিতে পড়ে গ্রুপ পর্ব মিস করা নেইমারের অনুপস্থিতিতে ব্রাজিল শিবিরে কিছুটা হলেও অস্বস্তি বিরাজ করছে। এ কারনে তিতেকে কিছুটা কৌশলগত পরিবর্তন আনতে হচ্ছে। মধ্যমাঠে ফ্রেডকে বদলী বেঞ্চ থেকে উঠিয়ে আনা হতে পারে। রাইট-ব্যাক ডানিলোও একই ইনজুরিতে ছিটকে গেছেন। এ কারনে অভিজ্ঞ ডানি আলভেসের সামনে সুযোগ আছে ২০১৪ সালের পর বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে মাঠে নামার। রিয়াল মাদ্রিদের এডার মিলিটাওয়ের ওপর রক্ষনভাগ সামলানোর দায়িত্ব আসতে পারে। ব্রাজিল চাইবে একম্যাচ হাতে রেখেই শেষ ষোল নিশ্চিত করতে। কারন শেষ ম্যাচের ঝুকি নিশ্চয়ই নিতে চাইবেন না ব্রাজিল কোচ। নেইমার না থাকলেও সেটাকে মোটেও বড় করে দেখছেন না ব্রাজিল কোচ তিতে। তার লক্ষ্য একটাই । আর সেটা হচ্ছে শেষ খেলার আগেই নক আউট নিশ্চিত করা। নেইমারকে ছাড়াও সে কাজ করা সম্ভব বলে মনে করেন ব্রাজিল কোচ।