নিহত শ্রমিকদের পরিবারে ৫০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেয়ার দাবি

বাঁশখালীতে ডা. জাফরুল্লাহ

বাঁশখালী প্রতিনিধি | সোমবার , ২৬ এপ্রিল, ২০২১ at ৬:২৫ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রামে বাঁশখালীর গন্ডামারায় নির্মিতব্য এস এস পাওয়ার প্ল্যান্টে পুলিশ-শ্রমিক সংঘর্ষে নিহত শ্রমিকদের পরিবার ও আহতদের দেখতে ও খাদ্য সহায়তা প্রদানের জন্য গতকাল রবিবার (২৫ এপ্রিল) দুপুর আড়াইটার দিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। এ সময় বিদ্যুৎ কেন্দ্রে দায়িত্বরত এস আলম গ্রুপের চিফ কো-অর্ডিনেটর ফারুক আহমদ ও বাঁশখালী থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ সফিউল কবীরের সাথে কথা বলেন তিনি। কেন্দ্রের ভিতরে প্রবেশ না করে গেটে তিনি ফারুক আহমদের সাথে কথা বলে ঘটনার বিষয়ে অবগত হন। পরে সংঘর্ষে নিহত শ্রমিক ওই ইউনিয়নের পূর্ব বড়ঘোনা গ্রামের মাহমুদ রেজা মিয়াহানের বাড়িতে যান এবং পরিবারের সদস্যদের সাথে কথা বলেন। এ সময় আহত শ্রমিক খোরশেদ আলম জানান, তার চোখের সামনে ১০ জনের মত মৃত্যু হয়েছে অথচ প্রচার করা হয়েছে ৫ জনের কথা পরে আরো দুজন মারা যায়। খোরশেদ এ সময় আরো বলেন, অনেককে বালি চাপা দেওয়া হয়েছে। পরে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন ও নিহত প্রত্যেক শ্রমিক পরিবারকে কমপক্ষে ৫০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেয়ার দাবি জানান। তিনি নিহত শ্রমিক পরিবারের সদস্যদের বিদ্যুৎ কেন্দ্রে চাকুরি দেয়ারও দাবি জানান। এ সময় তিনি সংঘর্ষে নিহত ও আহতদের পরিবারের প্রতি সহানুভূতি জানান এবং তাদের পরিবারের কাছে ১ মাস চলার মতো খাদ্য সহায়তা প্রদান করেন। খাদ্য সহায়তার মধ্যে ছিল প্রতি পরিবারে ২০ কেজি চাল, ৪ কেজি আটা, ৫ কেজি আলু, ১ কেজি মশুর ডাল, ১ কেজি ছোলা, ১ কেজি পেঁয়াজ, ১ কেজি চিনি, আধা কেজি লবণ, আধা লিটার সয়াবিন তেল, ৮০ গ্রাম সরিষার তেল এবং ৩০ গ্রাম শুকনা মরিচ। বিদ্যুৎ কেন্দ্র পরিদর্শন ও খাদ্য সহায়তা প্রদানকালে তার সফর সঙ্গী ছিলেন ভাসানী অনুসারী পরিষদের মহাসচিব শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, মুক্তিযোদ্ধা নঈম জাহাঙ্গীর, মুক্তিযোদ্ধা ইসতিয়াক আজিজ উলফত, রাষ্ট্র চিন্তার এডভোকেট হাসনাত কাইউম, গণস্বাস্থ্যের প্রেস উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু ও ভাসানী অনুসারী পরিষদের সদস্য ব্যারিস্টার সাদিয়া আরমান শাহেদুল ইসলাম, মোঃ নাছির, মোজাফফর আহমদ, মোঃ হাসান মারুফ, ছৈয়দুল আলম, মোঃ হাশেম, ফরিদ আহমদ, সেলিম নুর, মোঃ নাছির, হাজী নবী হোসেন, দিদারুল ইসলাম, মোঃ জাবেদ, মোক্তার আহমদ প্রমুখ। জাতীয় প্রেস ক্লাবে এ ঘটনার বিস্তারিত জানাবেন বলে স্থানীয় সংবাদকর্মীদের জানিয়ে রওনা দেন।
উল্লেখ্য, ১৭ এপ্রিল গন্ডামারা ইউনিয়নে এস আলম গ্রুপের নির্মাণাধীন ১৩২০ মোগাওয়াট ক্ষমতার ‘এস এস পাওয়ার প্ল্যান্টে’ বিভিন্ন দাবিতে আন্দোলনরত শ্রমিকদের উপর গুলি চালায় পুলিশ। তাতে ঘটনাস্থলেই চারজনের মৃত্যু হয়। পরে হাসপাতালে আরও দুজনের মৃত্যু ঘটে। এছাড়া ওই ঘটনায় অন্তত ২০ জন শ্রমিক এবং তিন পুলিশ সদস্য আহত হন। ঘটনা পর হামলা, লুটপাট ও ভাঙচুরের ঘটনায় পাওয়ার প্ল্যান্ট ফাঁড়ির দায়িত্বরত কর্মকর্তা এস আই মো. রাশেদুজ্জামান বেগ ও এসএস পাওয়ার প্ল্যান্টের চিফ কো-অর্ডিনেটর ফারুক আহমেদ বাদী হয়ে ২টি মামলা করেন। এতে জ্ঞাত ২২ জন সহ সাড়ে ৩ হাজার জনকে আসামি করা হলেও গতকাল পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবাঁশখালীর সংঘর্ষ : বিচারিক তদন্ত ও ক্ষতিপূরণ নিয়ে হাই কোর্টে শুনানি আজ
পরবর্তী নিবন্ধগ্রেনেড হামলার জঙ্গিদের ঘনিষ্ঠ মামুনুল পাকিস্তানেও ছিলেন