ক্ষমতাসীনদের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে বিএনপি মহাসিচব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সরকার যে পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে তাতে কোনো দলের পক্ষেই নির্বাচনে আসা সম্ভব নয়।
তিনি বলেন, আজকে কী করেছে তারা (সরকার)? তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে দিয়ে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করছে। এই সরকার তার অধীনে তিন তিনটা নির্বাচন পার করেছে। এই তিনটা নির্বাচনই প্রহসন হয়েছে। প্রধান নির্বাচন কমিশন বলছেন, ‘এভাবে বৈরি রাজনৈতিক পরিবেশে কখনো সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।’ অর্থাৎ আওয়ামী লীগ যে পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে তাতে কোনো দলই তো নির্বাচনে আসে না। তাহলে নির্বাচন হচ্ছে কোথায়? সে কারণে নির্বাচন ব্যবস্থাটা ভেঙে পড়েছে। গতকাল সোমবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে জিয়াউর রহমানের ওপর আলোচনা অনুষ্ঠানে মির্জা ফখরুল কথা বলছিলেন। খবর বিডিনিউজের।
সব ধরনের তিক্ততা পরিহার করে রাজনৈতিক দলেগুলোকে আলোচনার টেবিলে বসতে ফের তাগিদ দিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল। গত রোববার আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে তিনি বলেছেন, দেশে প্রকটভাবে বিরাজমান বৈরিতা নিয়ে সামনে এগিয়ে যাওয়া কমিশনের জন্য আগামীতে ‘কঠিন হয়ে দাঁড়াবে’।
গতকালের অনুষ্ঠানে সরকারি দলের উদ্দেশ্যে মির্জা বলেন, সুষ্ঠু ভোট দিলে উনারা ১০টা আসনও পাবে না। আমি বার বার বলি, তাদেরকে বলছি, সাহস থাকে আসেন না, আপনি নির্বাচন করেন, যেখানে নিরপেক্ষ সরকার ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন থাকবে। কার কত জনপ্রিয়তা বোঝা যাবে।
সাবেক আইজি বেনজীর আহমেদ এবং সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদ নিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, বলা হচ্ছে নজিরবিহীন দুর্নীতি করেছেন বেনজীর। একই সঙ্গে সাবেক সেনা প্রধানকে স্যাংশন দিয়ে দিয়েছে। আরেকজন তথাকথিত এমপি, তাকে কলকাতা নিয়ে টুকরা টুকরা করেছে…এই তো হচ্ছে চেহারা। এখন সেনাবাহিনীর অবস্থা কী? একটা ইন্সটিটিউশন হিসেবে তার সম্মান–ইজ্জত কোথায় থাকে যখন তার সাবেক প্রধানকে স্যাংশন দেয়? সেই পুলিশ বাহিনীর মর্যাদা কোথায় থাকে যার সাবেক প্রধান ও র্যাবের সাবেক ডিজিকে পালিয়ে যেতে হয় দেশ থেকে, কার সম্মান কোথায় থাকে? আজকে এরা (সরকার) দেশটাকে এভাবে ধবংস করে দিয়েছে।
‘দ্রব্যমূল্য সাধারণ মানুষের ঘরের শান্তি কেড়ে নিয়েছে’ বলে মন্তব্য করে ফখরুল বলেন, তারা (সরকার) গত ১৫ বছরে একটা দানবের মত শাসন দিয়ে বাংলাদেশের শুধু রাজনীতিকে ধ্বংস করেনি, অর্থনীতিকেও ধ্বংস করে ফেলেছে। জিনিসপত্রের দাম শুনে কেমন লাগে বলেন? ঘরে শান্তি আছে? নাই। গ্যাসের দাম, বিদ্যুতের দাম, সবজির দাম, চালের দাম এক কথায় অবিশ্বাস্য।
মহিলা দলের নেতা–কর্মীদের উদ্দেশে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আপনারা সবাইকে বলেন, চুপ করে থাকবেন না, বের হন, কথা বলেন। সকলকে বেরিয়ে আসতে হবে। এটা শুধু বিএনপির দায়িত্ব না, এই মানুষকে তার আত্মরক্ষার্থে কথা বলতে হবে তো।