নির্বাচনি কর্মপরিকল্পনার খসড়া চূড়ান্ত

আইনশৃঙ্খলা নিয়ে উদ্বেগ নেই : ইসি সচিব

| মঙ্গলবার , ১৯ আগস্ট, ২০২৫ at ৮:৩৬ পূর্বাহ্ণ

ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের কর্মপরিকল্পনার খসড়া চূড়ান্ত হয়েছে এবং চলতি সপ্তাহেই পূর্ণাঙ্গ রোডম্যাপ প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ। নির্বাচন নিয়ে প্রসু্ততির এই সময়ে আইনশৃঙ্খলা নিয়ে উদ্বেগের কারণ নেই বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। ইসি সচিব আখতার আহমেদ বলেছেন, এবারে কেন্দ্র না বাড়িয়ে ভোটার উপস্থিতি বাড়াতে ভোটকক্ষভিত্তিক ভোটার সংখ্যা বাড়াতে চায় নির্বাচন কমিশন। গতকাল সোমবার নির্বাচন ভবনে মাঠ কর্মকর্তাদের সমন্বয় নিয়ে বৈঠক করছে ইসি সচিবালয়। এরপর সাংবাদিকদের সঙ্গে নির্বাচনের সার্বিক প্রস্তুতির কথা তুলে ধরেন সচিব। খবর বিডিনিউজের।

আখতার আহমেদ বলেন, একটা কর্মপরিকল্পনার ব্যাপারে বলা হয়েছিল এই সপ্তাহে। এটা (রোডম্যাপ) কোঅর্ডিনেট করা হচ্ছে, কর্মপরিকল্পনা আন্ত অনুভাগ প্রাসঙ্গিক বিষয়গুলো নিয়ে ড্রাফটটা করা হয়েছে। ড্রাফটটা এখন কমিশনে দিয়ে আমরা এপ্রুভ করবো। এটা আমরা এই সপ্তাহের ভিতরে দিতে পারব। এ সময় এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নির্বাচনকালীন আইনশৃঙ্খলা তো আরও পরের ব্যাপার। আমাদের কনসার্ন হওয়ার এই মুহূর্তে কোন কারণ আছে? আমরা আমাদের জিনিসটা গুছিয়ে নিচ্ছি, যে যার জায়গাটাকে গুছিয়ে নিলেই তো হয়ে যাবে। সেটা নির্বাচন ব্যবস্থাপনার সাথে আমরা এই মুহূর্তে জড়িত। আইনশৃঙ্খলা নিয়ে এই মুহূর্তে আমার কোন উদ্বেগ প্রকাশ করার কোন যুক্তিসংত কারণ নেই।

আখতার আহমেদ জানিয়েছেন, মাঠ প্রশাসনে নিয়োজিত দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের সাথে সমন্বয় কীভাবে হবে, তাদের কার্যপরিধি কি হবে, ফোকাল পার্সন নির্ধারণের ব্যাপার, পরিপত্র নির্দেশনা ইত্যাদি বিষয় সম্পর্কিত যে কাগজপত্র তৈরি করাএ বিষয়ে এখন বৈঠক চলছে। আমরা কোঅর্ডিনেট করার চেষ্টা করছি যেন কাজগুলোকে গুছিয়ে রাখতে পারি।

সীমানা আপত্তি শুনানি রোববার :

এবার ৩০০ আসনের মধ্যে ৮৩টি আসনের দেড় সহস্রাধিক দাবিআপত্তি এসেছে। শুনানি শেষ করে দ্রুত নিষ্পত্তির প্রক্রিয়া চলছে। ইসি সচিব বলেন, সীমানা নির্ধারণের যেসব আপত্তি এসেছে, ২৪ আগস্ট থেকে শুনানি শুরু করব। একটানা চারদিন চলবে এবং এটাকে ফাইনালাইজ করব।

ভোটকেন্দ্র ও ভোটকক্ষ নিয়ে পরিকল্পনা, বিবেচনায় ভোটার উপস্থিতি :

এবার পৌনে ১৩ কোটি ভোটার দাঁড়াবে নির্বাচনের সময়। সবশেষ গত সংসদ নির্বাচনে ১২ কোটি বেশি ভোটারের জন্য ৪২ হাজারেরও বেশি ভোট কেন্দ্র ছিল।

এবার ভোটকেন্দ্র না বাড়িয়ে কীভাবে সমন্বয় করা যায় সে বিষয়ে পরিকল্পনা নিচ্ছে ইসি সচিবালয়। সচিব আখতার আহমেদ বলেন, মান্থলি কোঅর্ডিনেশন কমিটি মিটিংয়ে ভোট কেন্দ্র স্থাপনের নীতিমালা নিয়ে আলোচনা করেছি। আমরা বলেছি যে ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা বাড়বে না। বাড়বে না এর অর্থ এই নয় যেঅতীতে যা ছিল সেটাই একদম হুবহু এটা রাখতে হবে বা সংখ্যা। যৌক্তিক বিবেচনায় যদি বাড়ে সেটা হবে। প্রতি ৩০০০ ভোটারের জন্য একটা কেন্দ্র করে ভোটার উপস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে পরিকল্পনা করছে ইসি। তিনি বলেন, আমাদের ধারণা, ভোট কেন্দ্র না বাড়িয়েও শুধু ভোটার উপস্থিতির বিষয়টাকে যদি আমরা বিবেচনায় নেই তাহলে হয়ত দেখা যাবে যে এটাকে সমন্বয় করতে পারছি। সচিবের ভাষ্য, উদাহরণ হিসেবে প্রতি কেন্দ্রে পুরুষদের জন্য এটা আছে ৫০০ জনের জন্য একটা বুথ। এটাকে যদি ৬০০ জনের জন্য করতে পারি তাহলে দেখা যেতে পারে যে একোমোডেট করতে পারব। সেইভাবে আমরা একটু হিসাব করছি এবং হিসাব করে যদি আমরা দেখি এটা গ্রহণযোগ্য, তাহলে আমরা সেই মাত্রায় কাজ করব।

তরুণদের জন্য আলাদা বুথ করার বিষয়ে সরকারের আগ্রহ থাকলেও ইসি কি উদ্যোগ নিচ্ছে? জানতে চাইলে সচিব আখতার আহমেদ বলেন, এখনো পর্যন্ত এটা আমাদের কোন আলোচনায় আসেনি। যদি কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত হয়, তাহলে হবে। যদি না হয় এটা সেটা ভোট কেন্দ্র ব্যবস্থাপনার মধ্যে। এখন আমরা এই মুহূর্তে হচ্ছে ভোট কেন্দ্রের সংখ্যার ভেতরে কিভাবে ব্যবস্থাপনাটা করবে সেটা পরের ব্যাপার।

২২ দলের তদন্ত শুরু :

নিবন্ধন প্রত্যাশী বাছাইয়ে টিকে থাকা ২২টি দলের অফিস, কমিটির তদন্তের জন্য চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন সচিব। তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলের যে ২২টা দল প্রাথমিকভাবে বাছাই হয়ে, তাদের তদন্ত মাঠ পর্যায়ে পাঠানো দরকার সেটা পাঠিয়ে দিয়েছি। আর যাদেরটা বাতিল বা বিবেচনাযোগ্য হয়নি তাদেরকে আমরা চিঠি দিয়ে জানিয়ে দিচ্ছি। এবার কোনো কারণে বা কোনো শর্তের অপূর্ণতার কারণে তাদেরটা বিবেচনা করা যায়নি সেটা স্পেসিফিক করে জানিয়ে চিঠি দেওয়া হচ্ছে। আখতার আহমেদ বলেন, ভোট কেন্দ্রের নীতিমালার ব্যাপারটা সুযোগ এসেছে বলে পর্যালোচনা করা যাচ্ছে। কোনো জিনিসই একদম অবধারিত না, এটা পরিবর্তন হতে পারে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধরায় শুনে অসুস্থ,হাসপাতালে নেওয়ার পথে মৃত্যু
পরবর্তী নিবন্ধআরো ৯ কর্মকর্তা বরখাস্ত