বিশ্বের নানা দেশ থেকে এলসিএল কন্টেনারে আমদানিকৃত পণ্য নির্ধারিত সময়ে খালাস করা না হলে আগামীকাল থেকে চার গুণ হারে স্টোর রেন্ট আরোপের ঘোষণা দিয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। বন্দরকে গুদাম বানানোর প্রবণতা ঠেকাতে বন্দর কর্তৃপক্ষ এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান।
বন্দর সূত্র জানিয়েছে, বিশ্বের নানা দেশ থেকে এলসিএল (একাধিক আমদানিকারকের পণ্য একই কন্টেনারে) কন্টেনার বোঝাই করে বিভিন্ন আমদানিকারক লাখ লাখ টন পণ্য আমদানি করেন। উন্নত বন্দরগুলোর কোনোটিতেই এলসিএল কন্টেনার বন্দরের অভ্যন্তরে খোলার নজির নেই। কিন্তু চট্টগ্রাম বন্দরে এলসিএল কন্টেনার জাহাজ থেকে নামিয়ে ইয়ার্ডে পণ্যগুলো আনস্টাফিং করে। এখান থেকে পরবর্তীতে সংশ্লিষ্ট আমদানিকারকেরা পণ্য নিয়ে যান। কিন্তু বেশ কিছুদিন ধরে অনেক আমদানিকারক তাদের পণ্য খালাস করছেন না। এলসিএল কন্টেনার থেকে খালাসকৃত পণ্য শেডে রাখা হয়। বর্তমানে পণ্যের পরিমাণ এত বেড়ে গেছে যে, শেডে স্থানাভাব প্রকট হয়ে উঠেছে। বন্দর কর্তৃপক্ষ বারবার তাগাদা দিয়েও এলসিএল কন্টেনারে আমদানিকৃত পণ্য খালাসে প্রত্যাশিত গতি আনতে পারছে না। এই অবস্থায় আগামীকাল ১১ এপ্রিল থেকে এলসিএল কার্গোর ওপর চার গুণ হারে স্টোর রেন্ট আদায় করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। জাহাজ থেকে কন্টেনার খালাসের পর নির্ধারিত সময়ে পণ্য ডেলিভারি না নিলে চার গুণ হারে ভাড়া আদায় করা হবে। গত মার্চ মাসেও বন্দর কর্তৃপক্ষ এমন একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। কিন্তু পরে গার্মেন্টস মালিকদের অনুরোধে সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে। গার্মেন্টস মালিকেরা এলসিএল কার্গো খালাসে গতি আনার আশ্বাস দিলেও তা হয়নি। উন্নতি হয়নি বন্দর পরিস্থিতির। এই অবস্থায় এক মাসের মাথায় আবারও কঠোর অবস্থানে যেতে হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা জানান।
চট্টগ্রাম বন্দরে বর্তমানে জাহাজ থেকে খালাসের পর শেডে প্রথম ৪ দিন ফ্রি পণ্য রাখা যায়। এরপর ৭ দিন পর্যন্ত প্রতিদিন টন প্রতি ১৬ দশমিক ৭২ টাকা স্টোর রেন্ট দিতে হয়। ৮ম দিন থেকে ১৪তম দিন পর্যন্ত টন প্রতি ৪১ দশমিক ৮০ টাকা এবং পরবর্তী দিনগুলোতে প্রতিদিন ৬৬ দশমিক ৮৮ টাকা স্টোর রেন্ট দিতে হয়।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের পরিচালক (ট্রাফিক) স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এলসিএল কন্টেনার আনস্টাফিংয়ের পর দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হলেও বিভিন্ন আমদানিকারক মালামাল খালাস নেয়নি। এ কারণে শেডগুলোতে স্থান সংকুলান হচ্ছে না। এতে এলসিএল কন্টেনার আনস্টাফিংয়ে বিলম্ব হচ্ছে।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মোহাম্মদ ওমর ফারুক বলেন, আমরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। পণ্য খালাসে গতি এলে কিংবা শেডের পরিস্থিতি উন্নতি হলে এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করা হবে।