দেশের মাটিতে সাকিব আল হাসান আবারও খেলতে পারবেন কিনা তা নিয়ে আলোচনা চলছে বেশ কদিন ধরেই। কেননা ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে সরকার পরিবর্তনের পর হত্যা মামলা হয়েছে তার নামে। তাই ঘরের মাঠে খেলা নিয়ে শুধু সমর্থকই নন, অনিশ্চয়তা কাজ করছে খোদ সাকিবের মনেই। কানপুর টেস্ট খেলতে নামার আগে গতকাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে টেস্ট ও টি–টোয়েন্টি থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন সাকিব। টি–টোয়েন্টির শেষ ম্যাচটি তিনি গত বিশ্বকাপে খেলে ফেলেছেন বলে জানিয়ে দিয়েছেন সাকিব। তবে আগামী অক্টোবরে দেশের মাটিতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজ খেলেই লাল বলের ফরম্যাটকে বিদায় জানাতে চান সাকিব। দক্ষিন আফ্রিকার বিপক্ষে মিরপুর টেস্টকেই নিজের ক্যারিয়ারের শেষ টেস্ট বলছেন সাকিব। তবে সে জন্য নিরাপদে দেশ ছাড়ার নিশ্চয়তা পেলেই কেবল দেশে ফিরবেন এই অলরাউন্ডার। তা না হলে আজ থেকে শুরু হতে যাওয়া ভারতের বিপক্ষে কানপুর টেস্টই হবে সাদা পোশাকে তার শেষ ম্যাচ। গতকাল সংবাদ সম্মেলনে সাকিব বলেন, বিসিবি সভাপতি ফারুখ আহমেদ ও নির্বাচকদের সঙ্গে আমার এভাবেই কথা হয়েছে। যদি সুযোগ থাকে, আমি যদি দেশে গিয়ে খেলতে পারি, তাহলে মিরপুর টেস্ট হবে আমার জন্য শেষ টেস্ট। সেই কথাটা বোর্ডের সবার সঙ্গে বলা হয়েছে। তারা চেষ্টা করছেন কিভাবে সুন্দরভাবে আয়োজন করা যায়। আমি যেন গিয়ে খেলতে পারি এবং নিরাপদ অনুভব করি। যখন দেশের বাইরে আসার দরকার হবে, দেশের বাইরে আসতেও যেন আমার কোন সমস্যা না হয়। অবশ্য বোর্ড সে সব খেয়াল করছে বলে জানিয়েছেন তিনি। বিষয়গুলোর সঙ্গে যারা জড়িত তারা দেখছেন। তারা হয়তো আমাকে একটা সিদ্ধান্ত দেবে, যেটার ভিত্তিতে আমি দেশে গিয়ে খুব ভালোভাবে খেলে অন্তত টেস্ট ফরম্যাটটা ছাড়তে পারব।
টেস্টের সঙ্গে আন্তর্জাতিক টি–টোয়েন্টি থেকেও অবসর নিয়ে ফেলেছেন সাকিব। গত বিশ্বকাপেই এই ফরম্যাটে নিজের শেষ ম্যাচটা খেলে ফেলেছেন তিনি। তবে দিয়েছেন অবসর ভেঙে ফেরার ইঙ্গিতও। সাকিব বলেন আমার মনে হয়েছে টি–টোয়েন্টি ক্রিকেট থেকে সরে দাঁড়ানোর এটাই সঠিক সময়। আগামী সিরিজগুলোতে কিছু নতুন খেলোয়াড়কে সুযোগ দেওয়া উচিত। একইসঙ্গে আমি যদি ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে ফিট থেকে ভালো পারফর্ম করি এবং ছয় মাস বা এক বছরে বিসিবি যদি মনে করে আমার টি–টোয়েন্টিতে অবদান রাখার সুযোগ আছে, তাহলে হয়তো আমরা সিদ্ধান্ত নিতে পারব। এই মুহূর্তে আমি নিজেকে টি–টোয়েন্টি দলে দেখছি না। তাই বলা যায় দুই ফরম্যাটে আমি আমার শেষ দেখছি। আমার মনে হয়, আমি আমার শেষ টি–টোয়েন্টি ম্যাচটি খেলে ফেলেছি বিশ্বকাপে আফগানিস্তানের বিপক্ষে। আশা করি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি দিয়ে ওয়ানডে থেকেও বিদায় নেব। সে হিসেবে আমার সামনে আরও নয়টি ওয়ানডে ম্যাচ আছে। দেশের পরিস্থিতি নিয়ে সাকিব বলেন দেখুন এখন পর্যন্ত আমি তো এভেলেবল আছি। দেশে যেহেতু অনেক পরিস্থিতি আছে, সবকিছু অবশ্যই আমার ওপরে না। আমি বিসিবির সঙ্গে এসব নিয়ে আলোচনা করেছি। তাদেরকে বলা হয়েছে আমার কি পরিকল্পনা। এই সিরিজ আর হোম সিরিজটা আমি অনুভব করেছিলাম আমার শেষ সিরিজ হবে। বিশেষ করে টেস্ট ক্রিকেটে।