মায়ের হাত ধরে চিকিৎসার উদ্দেশ্যে চট্টগ্রাম শহরে গিয়ে আত্মীয়ের বাসা থেকে দোকানে গিয়ে পথভ্রষ্ট হয়ে ২০ বছর পূর্বে ২০০৪ইং সালে নিখোঁজ হয়েছিলেন মহেশখালীর মানসিক প্রতিবন্ধী যুবক জিয়াবুল হক ভেডু। তিনি মহেশখালী উপজেলার হোয়ানক ইউনিয়নের পূঁইছড়া গ্রামের আব্দুস সালামের পুত্র। মানসিকভাবে হাবাগোবা টাইপের কথাবার্তা ও চালচলনের কারণে সবাই তাকে ‘ভেডু পাগলা’ নামে ডাকতো। শুধু তাই নয়, ৩ ভাই ৩ বোনের মধ্যে ভেডুসহ ২ ভাই ২ বোন ছিলেন মানসিক প্রতিবন্ধী। প্রতিবন্ধীদের মধ্যে ১ ভাই ১ বোন মারা গেছেন।
দেশের বিভিন্ন স্থানে ছেলেকে খোঁজাখুঁজি করতে করতে পুত্র শোকে অবশেষে মারা গেলেন গর্ভধারিণী মা। কিন্তু রাখে আল্লাহ মারে কে? অবশেষে ২০ বছর পর গতকাল ২২ জানুয়ারি আচমকা নিজ ঘরে ফিরে এলেন জিয়াবুল হক ভেডু। আশ্চর্যের বিষয় হল যুব বয়সে হারিয়ে যাওয়া ভেডু ফিরেছেন ৫৫ বছরের বার্ধক্যের ছাপ নিয়ে। এলাকায় এসে নিজ বাড়িতে যাওয়ার আগে তিনি খুঁজতে থাকেন তার আগের পরিচিত প্রিয়জন স্থানীয় ধনাঢ্য জমিদার মরহুম জাকের উল্লাহ সিকদারকে। গেলেন তার বাড়িতে। কিন্তু পেলেন না জাকের উল্লাহ সিকদারকে। ৩ বছর পূর্বে মারা গেলেন তিনি। প্রিয়জনকে না পেয়ে কাঁদলেন। এরপরে গেলেন বাড়িতে। সেখানে বৃদ্ধ বাবাকে পেলেও দুই ভাই বোনসহ গর্ভধারিণী মাকে না পেয়ে কাঁদলেন অঝোর ধারায়। পরক্ষণেই বাড়ি থেকে বেরিয়ে স্থানীয় হোয়ানক টাইম বাজারে গিয়ে সাক্ষাৎ করতে থাকেন তার পূর্ব পরিচিতজনদের সাথে।
২০ বছর কোথায় ছিলেন, এমন প্রশ্নের জবাবে হাবাগোবা কণ্ঠে জিয়াবুল হক ভেডু বলেন, সিলেটের জকিগঞ্জের শ্রীপুরে। সেখানে জনৈক চাচা তাকে মৎস্য ও গরুর খামারে কাজে নিয়োজিত করেছিলেন। ফিরে আসার পথ না চেনায় গেল ২০ বছরে আর ফিরতে পারেননি। এখন জনৈক পুলিশ সদস্য তাকে নিজ এলাকায় ফিরে আসতে সহায়তা করেন। আচমকা ফিরে আসায় তাকে দেখে স্থানীয় লোকজনের মধ্যে কৌতূহল দেখা দিয়েছে।