ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে গত এক মাস আগে পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, চট্টগ্রামের সাবেক দুই মন্ত্রী ও ছয় এমপিসহ ৭৩৫ জনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় আরো ১ হাজার থেকে ১২’শ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
সোমবার (২৪ সেপ্টেম্বর) মধ্যরাতে সিএমপির কোতোয়ালী থানায় এ মামলা দায়ের করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামী স্টাডিজ বিভাগের চতুর্থ বিভাগের শিক্ষার্থী মো. তাফহীমুল ইসলাম (২৬)। সে নগরীর উত্তর আগ্রাবাদ মিস্ত্রি পাড়ায় বসবাস করেন।
মামলায় উল্লেখযোগ্য অন্য আসামিরা হলেন- সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, সাবেক সংসদ সদস্য আবু রেজা মো. নেজামুদ্দিন নদভী, সাবেক সংসদ সদস্য এম এ লতিফ, সাবেক সংসদ সদস্য মহিউদ্দিন বাচ্চু, সাবেক সংসদ সদস্য মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী, সাবেক সংসদ সদস্য নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী, সাবেক সংসদ সদস্য নোমান আল মাহমুদ, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিন, দক্ষিণ জেলার সাধারণ সম্পাদক মুজিবর রহমান, চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান এটিএম পেয়ারুল ইসলাম, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান, সাবেক কমিশনার হাসান মাহমুদ চৌধুরী, সাবেক কমিশনার হাসান মুরাদ বিপ্লব, সাবেক কমিশনার শৈবাল দাশ সুমন, হেলাল আকবর চৌধুরী বাবরসহ প্রমুখ।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, গত ১৪ জুলাই বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে থাকা সক্রিয় শিক্ষার্থীদের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ‘রাজাকার’ সম্বোধন করলে আন্দোলনরত ছাত্ররা এর বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের ডাক দেন। এর আগে গত ১০ জুলাই আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের দমন করতে ছাত্রলীগকে নির্দেশনা দেন। এরপর গত ১৬ জুলাই সারাদেশে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, শ্রমিক লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করে।
বিজ্ঞাপন
গত ৪ আগস্ট নগরীর নিউমার্কেট এলাকায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর আগ্নেয়াস্ত্র, ককটেল, কিরিচ, হকিস্টিক, রামদা নিয়ে হামলা করেন। এছাড়া অভিযুক্তরা ছাত্র-জনতাকে উদ্দেশ্য করে এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ করে। গুলিবর্ষণের একপর্যায়ে মামলার বাদী তাফহীমুলের ডান হাতের কব্জিতে গুলি লাগে, যা হাতের এক পাশে ঢুকে অন্য পাশ দিয়ে বের হয়ে যায়। পরে তাকে তার সহপাঠীরা উদ্ধার করে চট্টগ্রাম ন্যাশনাল হাসপাতালে চিকিৎসা করান। এরপর তাকে চট্টগ্রাম মেডিলে কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। একই সময়ে বায়েজীদ, এনামুল হক সৈকতসহ অসংখ্য ছাত্র গুরুতর আহত হন।
এ প্রসঙ্গে কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ ফজলুল কাদের চৌধুরী বলেন, ‘চবির এক শিক্ষার্থী গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৭৩৫ জনের নাম উল্লেখ একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় ১০০০-১২০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে। তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’