নিউজিল্যান্ডকে গুঁড়িয়ে দিয়ে ইতিহাস আফগানিস্তানের

স্পোর্টস ডেস্ক | রবিবার , ৯ জুন, ২০২৪ at ১০:২২ পূর্বাহ্ণ

বেশ ঘটা করে একাধিক অনুষ্ঠান করে বিশ্বকাপে খেলতে গিয়েছিল আফগানিস্তান। সাথে ছিল নতুন লক্ষ্যও। আর সে লক্ষ্যের পথে বেশ ভালভাবেই এগিয়ে যাচ্ছে আফগানরা। প্রথম ম্যাচে উগান্ডাকে উড়িয়ে দেওয়ার পর এবার শক্তিধর নিউজিল্যান্ডকেও উড়িয়ে দিল আফগানরা। রেকর্ড গড়া জুটিতে আফগানিস্তানকে লড়াইয়ের পুঁজি এনে দিয়েছিলেন রহমানউল।লাহ গুরবাজ ও ইব্রাহিম জাদরান। পরে বল হাতে নিউজিল্যান্ডের টপঅর্ডার ধসিয়ে দিলেন ফাজালহাক ফারুকি। মিডলঅর্ডারে স্পিনে ভোগালেন রাশিদ খান। পরে শেষটা করলেন ফারুকিই। আফগানরা পেল স্মরণীয় এক জয়। গায়ানার প্রভিডেন্সে গতকাল শনিবার নিউজিল্যান্ডকে ৮৪ রানে হারায় আফগানিস্তান। ১৫৯ রানের সংগ্রহ নিয়ে তারা কিউইদের গুটিয়ে দেয় মাত্র ৭৫ রানে। টিটোয়েন্টি বিশ্বকাপে রানের হিসেবে এটিই নিউজিল্যান্ডের সর্বোচ্চ ব্যবধানে হার। বৈশ্বিক এই টুর্নামেন্টে এর চেয়ে কম রানে তারা অলআউট হয়েছে একবার। সেটা ২০১৪ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৬০ রান। বিশ্বকাপ তো বটেই, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে আফগানিস্তানের প্রথম জয় এটি। পরপর দুই ম্যাচ জিতে সুপার এইটের পথে অনেকটা এগিয়ে গেল আফগানরা। উগান্ডার বিপক্ষে আগের ম্যাচে ৭৬ রান করা গুরবাজ এবার খেলেন ৮০ রানের ইনিংস। টিটোয়েন্টি বিশ্বকাপে এটিই আফগানিস্তানের কোনো ব্যাটসম্যানের সর্বোচ্চ। তার হাতেই ওঠে ম্যাচ সেরার পুরস্কার। টসে হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে আফগানিস্তনের উদ্বোধনী জুটিতে ১০৩ রান যোগ করেন গুরবাজ ও ইব্রাহিম। আগের ম্যাচে তাদের জুটিতে এসেছিল ১৫২ রান। টিটোয়েন্টি বিশ্বকাপে উদ্বোধনী জুটিতে টানা দুই ম্যাচে শতরানের জুটি হলো এই প্রথম। সব মিলিয়ে যে কোনো উইকেটে এমন ঘটনা দেখা গেছে দুবার। ২০১২ ও ২০১৪ বিশ্বকাপে পরপর দুই ম্যাচে শতকছোঁয়া জুটি গড়েন ইংল্যান্ডের অ্যালেক্স হেলস ও ওয়েন মরগ্যান। ২০১৪ সালে ভারতের রোহিত শার্মা ও ভিরাট কোহলিও গড়েন একই কীর্তি। ১০ ওভারে আফগানদের সংগ্রহ দাঁড়ায় মাত্র ৫৫ রান। এরপর শুরু আফগানিস্তানের ব্যাটারদের ঝড়। ৪০ বলে টানা দ্বিতীয় পঞ্চাশ পূর্ণ করেন গুরবাজ। ১৫তম ওভারে উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন হেনরি। ৩ চার ও ২ ছক্কায় ৪১ বলে ৪৪ রান করে ফিরেন ইব্রাহিম। হেনরির পরের ওভারে দুটি ছক্কা মারেন ওমারজাই। ১৯তম ওভারে ড্যারেল মিচেলের বলে জোড়া ছক্কা মারেন গুরবাজ। এর মধ্যে দ্বিতীয়টি যায় ১০৫ মিটার দূরে। শেষ ওভারে মাত্র ৩ রান নিতে ৩ উইকেট হারায় আফগানিস্তান। বোল্টের দারুণ ডেলিভারিতে বোল্ড হন ৫৬ বলে ৫টি করে চারছক্কায় ৮০ রান করা গুরবাজ। ২২ রানে ২ উইকেট নেন বোল্ট। ১৬০ রান তাড়া করতে নেমে প্রথম বলেই অ্যালেনকে বোল্ড করেন ফারুকি। তার পরের ওভারে ফিরেন আরেক ওপেনার ডেভন কনওয়ে। পঞ্চম ওভারে ড্যারেল মিচেলকে ফিরিয়ে কিউইদের চাপে ফেলে দেন বাঁহাতি পেসার। পাওয়ার প্লে শেষ হওয়ার পর আক্রমণে এসে প্রথম বলেই কেইন উইলিয়ামসনকে আউট করেন রাশিদ। আফগান অধিনায়কের পরের ওভারে পরপর দুই বলে ফিরেন মার্ক চ্যাপম্যান ও ব্রেসওয়েল। পঞ্চাশের আগে ৬ উইকেট হারিয়ে ফেলে নিউজিল্যান্ড। এরপর গ্লেন ফিলিপস ১৮ ও হেনরি ১২ রান করে পরাজয়ের ব্যবধান কমান। এই দুজন ছাড়া আর কেউ দুই অঙ্ক ছুঁতে পারেননি। হেনরিকে আউট করে আফগানিস্তানের জয় নিশ্চিত করেন ফারুকি। নিউজিল্যান্ড অল আউট হয় ৭৫ রানে। বোলিংয়ে ৪টি করে উইকেট নেন ফারুকি ও রাশিদ। আগের ম্যাচে ৯ রানে ৫ উইকেট নেওয়া ফারুকি এবার ১৭ রানে নেন ৪ উইকেট। বিশ্বকাপে প্রথম বোলার হিসেবে পরপর দুই ম্যাচে ৪ বা তার বেশি উইকেট নিলেন ফারুকি। মোহাম্মদ নাবি নেন ২ উইকেট।

পূর্ববর্তী নিবন্ধএরকম চাপের ম্যাচ কখনোই খেলেননি শান্ত
পরবর্তী নিবন্ধভারত-পাকিস্তান মহারণ আজ