বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে সুপেয় পানির সংকট বাড়ছে, যা নারীদের স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তার ওপর গভীর প্রভাব ফেলছে। সমপ্রতি ঢাকার প্রথম আলো কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক গোলটেবিল বৈঠকে বিশেষজ্ঞরা এ বিষয়ে আলোচনা করেন।
ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আইনুন নিশাত জানান, লবণাক্ত পানির কারণে নারীদের প্রজনন স্বাস্থ্য ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। সাতক্ষীরার গাবুরায় এক নারী জানান, বাড়িতে এক গ্লাস পানিই আছে, যা তিনি তাঁর স্বামীর জন্য রেখেছেন। এমন পরিস্থিতিতে নারীরা বাড়তি চাপের মুখে পড়ছেন।
মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের গবেষণায় দেখা যায়, পানি সংগ্রহ ও সংরক্ষণে ৯১.৯% নারীর অবদান রয়েছে, যা পুরুষের তুলনায় অনেক বেশি। তবে, এই দায়িত্ব নারীদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে, যা তাঁদের প্রান্তিক অবস্থানে নিয়ে যাচ্ছে।
মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তরের যুগ্ম সচিব মুহাম্মদ আবদুল হাই আল মাহমুদ জানান, তাঁদের প্রকল্পের অধীনে ৪৩ হাজার নারীর জীবনমান উন্নয়নে কাজ চলছে। এ ধরনের পাইলট প্রকল্পের অভিজ্ঞতা জাতীয় কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত।
গবেষণায় উঠে এসেছে, পানি সংগ্রহের সময় নারী নিরাপত্তা সংকটে ভোগে। এছাড়া, বন্যাসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগে কিশোরীদের অংশগ্রহণ বাড়ছে, যা স্কুল থেকে ঝরে পড়ার হার বাড়াচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা সুপারিশ করেন, পানি ব্যবস্থাপনায় নারীর অবদানকে স্বীকৃতি দিতে হবে এবং সরকারি–বেসরকারি কাজের মধ্যে সমন্বয় বাড়াতে হবে। এছাড়া, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় রাজনৈতিক সদিচ্ছা ও বাজেট বরাদ্দ বাড়ানো প্রয়োজন।