টানা তিন ম্যাচ হারার পর একটা জয়ের জন্য পাগলপারা হয়ে গিয়েছিল পাকিস্তান। চেন্নাইতে গতকাল বাগেও পেয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকাকে। দুর্দান্ত লড়াইয়ে জয়ের পথেই হাঁটছিল তারা। ২৭১ রানের লক্ষ্য দিয়ে বোলারদের নৈপুণ্যে প্রোটিয়াদের চেপে ধরেছিল বাবর আজমের দল। কিন্তু হলো না। চাপে ভেঙে পড়ার ইতিহাস থাকলেও দক্ষিণ আফ্রিকা ঠিক ঘুরে দাঁড়ায়। ১ উইকেটের শ্বাসরুদ্ধকর নাটকীয় জয়ে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে খেলার স্বপ্ন আরও বর্ণিল করে তুললো তারা। ২৭১ রানের মোটামুটি লক্ষ্য দিয়ে পাকিস্তান লড়াই শুরু করে। পাওয়ার প্লেতে দুই ওপেনার কুইন্টন ডি কক (২৪) ও টেম্বা বাভুমাকে (২৪) ফেরায় তারা ৬৭ রানের মধ্যে। কিন্তু রাসি ফন ডার ডুসেনকে নিয়ে দাঁড়িয়ে যান এইডেন মারক্রাম। দুজনের ৫৪ রানের জুটি ভাঙেন উসামা মীর। ১৫তম ওভারে শাদাব খানের বদলি নামেন তিনি। ওয়ানডে বিশ্বকাপ ইতিহাসে প্রথম কনকাশন সাব হয়ে দারুণ ব্রেকথু আনেন ফন ডার ডুসেনকে এলবিডব্লিউ করে। ২০ ওভারের মধ্যে ৩ উইকেট তুলে নেয় পাকিস্তান। ক্লাসেনকে ১২ রানে উসামার ক্যাচ বানান মোহাম্মদ ওয়াসিম। ১৩৬ রানে চার উইকেট হারালেও মারক্রাম ও ডেভিড মিলারের জুটিতে দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচ নিয়ন্ত্রণে নেয়। শাহীন শাহ আফ্রিদির বল মিলারের (২৯) ব্যাটে ছুঁয়ে মোহাম্মদ রিজওয়ানের গ্লাভসে জমা হয়। ৭০ রানের এই জুটি ভেঙে যেন স্বস্তি ফিরে পায় পাকিস্তান। মারক্রামের আগে মার্কো ইয়ানসেনকে (২০) থামান হারিস রউফ। উসামা আনেন বড় ব্রেকথু। পেছনে কভার পয়েন্টের দিকে দৌড়ে মারক্রামের ক্যাচ চমৎকারভাবে ধরেন বাবর। ৯১ রানে থামেন প্রোটিয়া ব্যাটার। পরের ওভারেই জেরাল্ড কোয়েটজেকে (১০) রিজওয়ানের ক্যাচ বানান আফ্রিদি। ২৫০ রানে ৮ উইকেট নিয়ে ম্যাচে উত্তেজনা ফেরায় পাকিস্তান। তখনও ৮ ওভারের বেশি বাকি। লুঙ্গি এনগিডি ও কেশব মহারাজ সতর্ক ব্যাটিংয়ে লক্ষ্য কমাতে থাকেন। এনগিডির ডিফেন্সিভ শট সামনে ঝাঁপিয়ে বাঁ হাতে দুর্দান্ত ক্যাচ ধরেন হারিস রউফ। তখনও জয়ের জন্য ১১ রান দরকার দক্ষিণ আফ্রিকার, আর পাকিস্তানের চাই ১ উইকেট। তাবরেইজ শামসি নেমেই দুটি রান নেন। পরের বলটি ছিল বিতর্কিত ওয়াইড। আরেকবার আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত হতাশ করে পাকিস্তানকে। রউফের শেষ বলে এলবিডব্লিউর আবেদন আম্পায়ার নাকচ করে দিলে রিভিউ নেয় পাকিস্তান। কিন্তু আম্পায়ার্স কলে বেঁচে যান শামসি। পাকিস্তানের ক্রিকেটারদের মাথায় হাত।
শেষ উইকেটে শামসি ও মহারাজ ঠান্ডা মাথায় মোহাম্মদ ওয়াসিমকে সামাল দিয়ে ৩ রান তুলে নেন। ৪৮তম ওভারে লক্ষ্য দাঁড়ায় ৫ রান। মোহাম্মদ নওয়াজ প্রথম বলে এক রান দেন। পরের বলে মহারাজ স্কয়ারের পেছন দিয়ে চার মেরে সব উত্তেজনার অবসান ঘটান। ৪ উইকেট এবং অপরাজিত ৪ রানে প্লেয়ার অব দি ম্যাচ হন দক্ষিণ আফ্রিকার তাবরেইজ শামসী।
এর আগে নিজেদের ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে পাকিস্তান সবক’টি উইকেট হারিয়ে ২৭০ রান করে। এর মধ্যে সউদ শাকিল ৫২, বাবর আজর ৫০ এবং শাদাব খান ৪৩ রান করেন।