রেলওয়ের চিটাগাং গুডস পোর্ট ইয়ার্ডে (সিজিপিওয়াই), পাহাড়তলী ওয়াগন শপের ইয়ার্ডে এবং ষোলশহর স্টেশন এলাকায় বছরে পর বছর অযত্ন–অবহেলায় পড়ে আছে মূল্যবান পার্সেল বগি, রেল বিটসহ গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রপাতি। কোটি কোটি টাকার রেলের এসব বগি ও
রেল বিট বছরের পর বছর পড়ে থাকায় একটি চক্র
রেলের এসব বগিসহ যন্ত্রপাতি চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে। অথচ রেলওয়ের এসব পুরনো স্ক্র্যাপের দাম অনেক। নির্দিষ্ট সময়ে এসব বগি স্ক্র্যাপ হিসেবে বিক্রি করলে রেলের রাজস্ব আয় হতো অনেক। কিন্তু রেলওয়ের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা বিভিন্ন ইয়ার্ডে পড়ে থাকা এসব স্ক্র্যাপ চোর সিন্ডিকেটকে দিয়ে রাতে আঁধারে নিয়ে যাওয়ার সুযোগ সৃষ্টি করে দিচ্ছে।
সরেজমিনে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের হালিশহরস্থ চিটাগাং গুডস পোর্ট ইয়ার্ডে (সিজিপিওয়াই) গিয়ে দেখা গেছে, বছরের পর বছর রেলের শত শত পার্সেল বগি, রেল বিট পড়ে আছে। বগিগুলোতে কিছুই আর অবশিষ্ট নেই। বগির দামি দামি জানালা–দরজা–নিচের চাকা থেকে শুরু করে লোহার সমস্ত যন্ত্রাংশ রাতে আঁধারে চুরি হয়ে গেছে। রেলের মূল্যবান যন্ত্রাংশ চুরিতে স্থানীয় বেশ কয়েকটি চক্র গড়ে উঠেছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। চিটাগাং গুডস পোর্ট ইয়ার্ডের (সিজিপিওয়াই) পাশ্ববর্তী বেশ কয়েকজন আজাদীকে বলেন, ইয়ার্ড ম্যানেজারসহ আরএনবির সদস্যদের ছত্রছায়ায় রেলের বগিগুলোর সমস্ত মূল্যবান যন্ত্রপাতি চুরি হয়ে গেছে। এখন শুধুমাত্র বগির বডিটা আছে। আর কোনও কিছুই অবশিষ্ট নেই। কোনও কোনও বগির সিটও কেটে নিয়ে গেছে চোরেরা।
এদিকে ষোলশহর স্টেশন এলাকায় গিয়েও দেখা গেছে একই চিত্র। এই স্টেশনের আশেপাশে অসংখ্য পার্সেল বগি, রেল বিট পড়ে আছে। তবে বগিগুলোতে কোনও মূল্যবান যন্ত্রাংশ নেই। সব খুলে নিয়ে গেছে। এখানেও রেলের অসাধু কর্মকর্তা এবং আরএনবি সদস্যদের ছত্রছায়ায় এগুলো চুরি হয়েছে বলে স্থানীয় দোকানদারদের অনেকেই অভিযোগ করেছেন। এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পাহাড়তলীতেও এভাবে অনেকগুলো পুরনো বগি পড়ে আছে। এ বগিগুলো রেলওয়ে বিক্রি করলে অনেক রাজস্ব আয় হতো।
ষোলশহর রেল স্টেশনের পাশ ঘেঁষেই গড়ে উঠেছে পাঁচশ’র বেশি অবৈধ বস্তিঘর। স্থানীয় প্রভাবশালী এবং সন্ত্রাসীদের ছত্রছায়ায় পুলিশ প্রশাসনকে ম্যানেজ করে রাতদিন চলে জুয়ার আসর। স্টেশনে কর্মরত এক কর্মচারী আজাদীকে জানান, স্টেশনের আশপাশের বস্তিতে মাদক বিক্রি হয়। মাদক সেবীদের নিরাপদ আস্তানায় পরিণত হয়েছে ষোলশহর রেল স্টেশন এলাকা। স্টেশনের পেছনে স্তুপ হয়ে পরে আছে লাখ লাখ টাকা রেলের পার্সেল বগি। স্টেশনের কর্মকর্তা–কর্মচারীরা জানান, প্রতিনিয়ত একটি চক্র রেলের এসব বগির যন্ত্রপাতি চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে। পুলিশ প্রশাসন এবং রেলওয়ে পুলিশ–আরএনবি কোনও উদ্যোগই নিচ্ছে না।