কক্সবাজারের চকরিয়ায় সদ্য ভূমিষ্ঠ শিশুকে তুলে নিয়ে বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে দুই নানীর (আপন নানী ও তার বোন) বিরুদ্ধে। গত ২৭ আগস্ট বেলা ১১টায় উপজেলার ডুলাহাজারা ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের মালুমঘাটের ডুমখালী এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত দুই নারীকে আটক করেছে। বিক্রি করে দেওয়া শিশুকে উদ্ধারে পুলিশ চট্টগ্রাম মহানগরীর কর্ণফুলী এলাকাসহ সম্ভাব্য স্থানে অভিযান চালিয়েছে।
পুলিশ জানায়, প্রায় এক সপ্তাহ আগে ভূমিষ্ঠের পর নাতিকে লুকিয়ে রেখে বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগে আপন নানী ও তার বোনকে আটক করা হয় পৃথক অভিযানে। এরপর এক নানীকে নিয়ে গতকাল রাতে তদন্ত কর্মকর্তা এসআই নাসির উদ্দিনের নেতৃত্বে শিশুটিকে উদ্ধারে অভিযান শুরু করে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তৌহিদুল আনোয়ার বলেন, শিশু বিক্রিতে সহায়তাকারী নানী এবং তার বোনকে আটক করা হয়েছে। বিভিন্ন কৌশলে চাপ প্রয়োগের পর শিশুর ক্রেতারা চট্টগ্রাম থেকে শিশুকে নিয়ে চকরিয়া থানায় আসছে।
অভিযোগে জানা গেছে, ভিক্ষাজীবী মা নুরুন্নাহার ও মেয়ে জেসমিন আক্তার একসঙ্গে বসবাস করেন। ঘটনার দিন মেয়ে তার সদ্য ভূমিষ্ঠ নবজাতককে নানীর (মা) কাছে রেখে পার্শ্ববর্তী দোকানে যান সওদা করতে। কিন্তু বাড়িতে ফিরে দেখেন সন্তানসহ মা নিরুদ্দেশ। শিশু সন্তান হারিয়ে তিনি নির্বাক হয়ে পড়েন। তিনদিনের মাথায় ঘরে ফিরলে মায়ের কাছে সন্তানের কথা জানতে চাইলে তিনি ক্ষেপে যান। এ ঘটনায় জেসমিন আক্তার বাদী হয়ে নুরুন্নাহারের বিরুদ্ধে চকরিয়া থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
আটক নুরুন্নাহার জানান, আমার বোনের ছেলে (ভাগিনা) নবজাতককে আদর করার কথা বলে নাতীকে নিয়ে উধাও হয়ে যায়। পরে জানতে পানি চট্টগ্রামের কর্ণফুলী ব্রিজ এলাকায় ওই নবজাতককে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। জেসমনি আক্তার জানান, স্বামী দ্বিতীয় বিয়ে করায় আমাকে ভরণ–পোষণ দেয় না। আমি ভিক্ষা করে জীবিকা নির্বাহ করি। আমার দুই বছর তিন মাস বয়সী আরও একটি সন্তান রয়েছে। ২০ দিন আগে চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আমার একটি কন্যা সন্তান হয়। অভাবের সংসারে দুই সন্তানকে নিয়ে আমার স্বপ্নের কমতি ছিল না। কিন্তু একটি অনাকাক্সিখত ঘটনা আমার স্বপ্ন ধুলিস্যাৎ করে দিয়েছে। এ ঘটনায় আমার মা, খালা, খালাতো ভাই (মায়ের বোন ও তার ছেলে) জড়িত রয়েছে। টাকার বিনিময়ে আমার শিশুকে বিক্রি করে দিয়েছে।












