কক্সবাজারের চকরিয়ার ডুলাহাজারাস্থ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে বেষ্টনীতে থাকা পুরুষ সিংহ সোহেল ও সিংহী টুম্পার মধ্যে দাম্পত্য জীবন গড়ে ওঠে। মাঝখানে সেই টুম্পাকে আলাদা করে বেষ্টনীতে রাখা হয় আরেক সিংহী ১১ বছরের নদীকে। দীর্ঘদিন ধরে সেই সিংহী নদীর সঙ্গে গাটছড়া বাঁধে সিংহ সোহেল। কিন্তু সোহেলের স্বাভাবিক বয়স পেরিয়ে বার্ধক্যে পরিণত হলে গত তিনমাস ধরে পার্কের বন্যপ্রাণী হাসপাতালের কোয়ারেন্টাইন শেডে রেখে নিয়মিত পরিচর্যাসহ যাবতীয় চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিল। এই বিষয়টি যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকেও অবহিত করে রাখা হয়েছিল।
সর্বশেষ গত মঙ্গলবারও চিকিৎসা দেওয়া হয় এই সিংহকে। এর একদিন পর গতকাল বুধবার বিকেলে নদীসহ পার্কের সিংহের বেষ্টনীতে থাকা অপরাপর সতীর্থকে কাঁদিয়ে সোহেল চলে গেছেন পরপারে। বার্ধক্যজনিত কারণে সিংহ সোহেলের মৃত্যুতে পার্কের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাঝেও নেমে এসেছে শোকের ছায়া। বিশেষ করে যারা সিংহের বেষ্টনীর রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে ছিলেন তারা বেশ শোকাচ্ছন্ন। গতকাল মারা যাওয়া সিংহ সোহেলের ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন তৈরি করেন চকরিয়া উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা (ভেটেরিনারী সার্জন) ডা. সুপন নন্দী। তিনি দৈনিক আজাদীকে বলেন, সচরাচর প্রত্যেক সিংহ বা সিংহী স্বাভাবিক অবস্থায় প্রকৃতিতে বেঁচে থাকে ১৫ থেকে ১৮ বছর। সাফারি পার্কে মারা যাওয়া সিংহের বর্তমান বয়স ছিল ২২ বছর। তাই কয়েকবছর ধরে এই সিংহ বার্ধক্যজনিত সমস্যায় ভুগছিল। বার্ধক্যজনিত কারণে সিংহ সোহেল মারা যাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে চকরিয়ার বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কের ভারপ্রাপ্ত তত্ত্বাবধায়ক মো. মাজহারুল ইসলাম দৈনিক আজাদীকে বলেন, পুরুষ সিংহ সোহেল গত তিনমাস ধরে বার্ধক্যের যন্ত্রণায় ভুগছিল। তাই তাকে বেষ্টনী থেকে বন্যপ্রাণী হাসপাতালের কোয়ারেন্টাইন শেডে রেখে নিয়মিত পরিচর্যাসহ চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিল। সর্বশেষ গত মঙ্গলবারও তাকে চিকিৎসা দেওয়া হয়। কিন্তু সে দাঁড়ানোর পর্যন্ত শক্তিসামর্থ্য ছিল না।
তত্ত্বাবধায়ক মাজহার জানান, বর্তমানে পার্কে দুটি করে বিপরীত লিঙ্গের সিংহ রয়েছে। তন্মধ্যে পুরুষ সিংহ দুটির নাম যথাক্রমে ৮ বছরের সম্রাট ও ১৩ বছরের রাসেল। অপরদিকে সিংহী রয়েছে ৮ বছরের টুম্পা ও ১১ বছরের নদী। মারা যাওয়া সোহেল সর্বশেষ দাম্পত্যজীবন গড়ে তুলেছিল সিংহী নদীর সঙ্গে। বার্ধক্যজনিত কারণে সোহেল মারা যাওয়ায় নিয়মানুযায়ী থানা সাধারণ ডায়েরি রুজু করা হয়েছে।