নতুন পথে প্রকৃতির সাথে

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেললাইনে ভ্রমণ হবে মনোরম

আজাদী প্রতিবেদন | বৃহস্পতিবার , ১০ মার্চ, ২০২২ at ৭:২৩ পূর্বাহ্ণ

‘ঢাকা থেকে কক্সবাজার/ সরাসরি রেল গাড়ি/ দুই পাশে দেখা যাবে/ গর্জনের সারি। / সাগরের ঢেউ দেখে/ মনটা জুড়ায়/ ফিরে এসে কাজ করি/ দেশটা গড়ায়।’
চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেল লাইন প্রকল্পের কাজ করতে গিয়ে রেল লাইনের দুপাশে প্রকৃতির অপার সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে সহকারী প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী আবুল কালাম চৌধুরী এভাবে সৌন্দর্যের বর্ণনা করেছেন তার ছড়ার ছন্দে। দোহাজারী থেকে কক্সবাজার ১০০ কিলোমিটার রেল লাইনের দুই পাশ জুড়ে সত্যিকারের এই সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন যাত্রীরা। পুরো রেললাইনের ৩৩ কিলোমিটারে কখনো দেখা মিলবে পাহাড়ি সেগুন, গর্জন, আকাশি আর মেহগনি বন। কখনো অভয়ারণ্য, আবার কখনো পাহাড়ের অনাবিল সৌন্দর্য, পাহাড়ি ছড়া, ঝরনা, রাবারড্যাম, নদীর অপরূপ সৌন্দর্য কিংবা বনের সবুজে হারাবে পর্যটকবাহী ট্রেন। ট্রেনযাত্রায় কালুরঘাট সেতু পার হলেই যাত্রীরা উপভোগ করবেন বোয়ালখালীর শান্ত-শ্যামল গ্রামগুলো। এরপর পটিয়া এবং চন্দনাইশের বিশাল সবুজ পাহাড়ের পাশ ঘেঁষে অতিক্রম করবে ট্রেন। দোহাজারী পার হতেই সাতকানিয়া-লোহাগাড়ার পথে দুইপাশে চুনতি সংরক্ষিত অরণ্যের সারি সারি গাছ স্বাগত জানাবে যাত্রীদের। লোহাগাড়া পার হতেই হারবাং থেকে চকরিয়া পর্যন্ত ঘন বন, চকরিয়া সদরে ঢোকার পর কিছু সমতল ভূমি পার হলেই ফাঁসিয়াখালী থেকে ডুলাহাজারায় আবারও সংরক্ষিত সবুজ বনাঞ্চলের দেখা মিলবে। এরই মধ্যে দেখা মিলতে পারে হরিণ শাবক, বুনো হাতি কিংবা বানরের দলের। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার ট্রেন ভ্রমণে এমন দুর্দান্ত সব দৃশ্য দেখে চোখ জুড়াবে যাত্রীদের।
প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, চুনতি, ফাঁসিয়াখালী, মেধাকচ্ছপিয়ার মতো সংরক্ষিত বন পশুপাখি ও বন্য প্রাণীর অভয়ারণ্যের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে রেললাইন। এ ছাড়া লোহাগাড়ায় টঙ্কাবতী খাল ও চকরিয়ার মাতামুহুরী নদীর কিছু অংশ দেখতে পাবেন যাত্রীরা। বলতে গেলে পুরো ট্রেন জার্নিটাই প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্যে আনন্দময় ও ক্লান্তিহীন হবে। তাছাড়া চট্টগ্রাম-কক্সবাজার ১০০ কিলোমিটার রেললাইনের যেসব স্থানে সবুজ প্রকৃতি নেই (সমতল ভূমি) সে সব এলাকায় রেল লাইনের দুইপাশে ৭ লাখ গাছ লাগানো হচ্ছে। ফলে পুরো রেললাইন জুড়েই থাকবে সবুজের সমারোহ। এর মধ্যে গত বর্ষায় বেশ কিছু এলাকায় রেল লাইনের দুইপাশে গাছ লাগানো হয়েছে। আগমী বর্ষায় আরও গাছ লাগানো হবে বলে জানান চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেল লাইন প্রকল্পের সহকারী প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী আবুল কালাম চৌধুরী।
জানা যায়, এমন আনন্দময় ভ্রমনের জন্য অপেক্ষা করতে হবে আরো প্রায় এক বছরের মতো। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে এই নতুন রেলপথ চালুর পরিকল্পনা আছে সরকারের।
চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে পর্যটকবাহী ট্রেনের পাশাপাশি আরো ছয় জোড়া লোকাল ট্রেনও চলবে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা। এসব ট্রেন দোহাজারী, সাতকানিয়া, লোহাগাড়া, হারবাং, চকরিয়া, ডুলাহাজারা, ইসলামাবাদ, রামু ও কক্সবাজারের আইকনিক স্টেশনসহ সব মিলিয়ে নয়টি কক্সবাজার আইকনিক স্টেশনে থামবে। নান্দনিকভাবে নির্মাণ করা হচ্ছে রেলওয়ে স্টেশনসহ প্ল্যাটফর্মগুলো।

পূর্ববর্তী নিবন্ধহত্যার অভিযোগে বাবার মামলা
পরবর্তী নিবন্ধর‌্যাবের হাতে গ্রেপ্তারের পর আসামির মৃত্যু