বিপিএলের এবারের আসর শুরু হকে ৩০ ডিসেম্বর। বিপিএল শুরুর আগে থেকেই এবারের বিপিএলে ব্যাপক পরিবর্তন আনার ঘোষনা দিয়ে রেখেছে বিসিবি। গতকাল বিপিএলের স্পন্সরশিপ ঘোষণার দিনে সে সব প্রতিশ্রুতি আবার দিলেন বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্য সচিব নাজমুল আবেদীন ফাহিম। এবারের বিপিএলে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন হবে দর্শকদের বাড়তি গুরুত্ব দেওয়া। এবারের বিপিএলের টাইটেল স্পন্সর ডাচ–বাংলা ব্যাংক। পাওয়ার্ড বাই ও কো–স্পন্সর হিসেবে থাকছে ডাচ–বাংলা ব্যাংকেরই দুটি সেবা মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিস ‘রকেট’ ও ই–ওয়ালেট ‘নেঙাসপে’ অ্যাপ। স্পন্সরশিপের অর্থের পরিমাণ অবশ্য আগের সময়গুলোর মতো এবারই প্রকাশ্য করা হয়নি আনুষ্ঠানিকভাবে। সরকার পরিবর্তনের পথ ধরে বিসিবিতেও পরিবর্তনের পর বিপিএলকে আরও জনসম্পৃক্ত করা ও আরও ছড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনার কথা জানালেন গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্য সচিব। তিনি বলেন বিপিএল হোক বা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট, বাংলাদেশে মাঠে এসে খেলা দেখা কখনোই খুব সুখকর অভিজ্ঞতা হয় না দর্শকদের জন্য। এবার পরিবর্তন টের পাবেন দর্শকরা, বললেন নাজমুল আবেদীন। কয়েকটা ব্যাপারে এবার পরিবর্তন আসার সম্ভাবনা আছে। প্রথমত, খেলা দেখতে যারা আসবেন, তারা যেন একটি ভালো অভিজ্ঞতা নিয়ে ফেরত যেতে পারেন। স্টেডিয়ামে ঢোকা থেকে শুরু করে খেলা দেখা এবং বাড়ি ফিরে যাওয়া, সবকিছুতে যেন ভালো অভিজ্ঞতা হয়। কোনো বাবা–মা যেন তার ছেলেমেয়ে নিয়ে মাঠে আসতে পারে, খেলাটা উপভোগ করতে পারে এবং ভালোভাবে ফিরে যেতে পারে, এখানে একটা বড় পরিবর্তনের চেষ্টা আমরা করব।
দর্শকদের মাঠে প্রবেশের সময় হেনস্তা হওয়া অভিযোগ পাওয়া গেছে অনেক সময়ই। মাঠের ভেতর পানিসহ খাবারের দাম থাকে অবিশ্বাস্যরকমের বেশি। সেগুলো মান নিয়েও সংশয় থাকে প্রায়ই। এবার দর্শকরা ভিন্ন কিছুর স্বাদ পাবেন, আশ্বাস দিলেন নাজমুল আবেদীন। একজন দর্শক যখন মাঠে আসবেন, তিনি হেনস্তার শিকার হবেন না। মাঠের ভেতর খাবারের দাম যেমন হওয়া উচিত, তেমনই যেন হয়। ওয়াশরুম সুবিধা যেন ভালো হয়। পানি খাওয়ার যেন যথেষ্ট ব্যবস্থা থাকে। এমনও হতে পারে, পানির জন্য কোনো পয়সাই দিতে হবে না। এই ধরনের ব্যবস্থাগুলো এবার থাকবে। দর্শকরা যেন এটাকে নিজের মনে করতে পারে। তারা যেন মনে করতে পারে, এটা তাদের মাঠ। খেলা উপভোগ করবে পরিবার নিয়ে এবং পরের দিন আসার জন্য উন্মুখ হয়ে থাকবে। এটা যদি আমরা করতে পারি, তাহলে মনে করব আমরা সফল। যদি না করতে পারি, তাহলে আমরা ব্যর্থ। এবারের বিপিএল নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের আন্তরিক আগ্রহের কথা আগেই বলেছিলেন বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ। এবার বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্য সচিব জানালেন, বিপিএলকে সমাজের নানা পর্যায়ে ছড়িয়ে দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা।
তিনি বলেন আমাদের প্রধান উপদেষ্টার দৃষ্টিভঙ্গির ব্যাপারটাও বলতে হবে। ক্রীড়ার সঙ্গে উনার সামপ্রতিক যে সম্পর্ক, বিশেষ করে অলিম্পিক দিয়ে, সেই জিনিসটাকেই তিনি বিপিএলে নিয়ে আসতে চেয়েছেন। এবারের বিপিএলকে শুধু সামাজিকভাবে না দেখে, এটাকে সামাজিকভাবে কীভাবে ব্যবহার করা যায়, সমাজের বিভিন্ন জায়গায়, সেটা সাংস্কৃতিক হোক বা ব্যবসায়ের জায়গায়, বা যে কোনো জায়গায় কীভাবে ব্যবহার করা যায়। কারণ এই মুহূর্তে এটা বোধহয় একমাত্র উপলক্ষ্য যেটি নিয়ে সবাই আগ্রহ নিয়ে বসে থাকে। কখন বিপিএল হবে আর কেমন হবে। সমালোচনা যে প্রচুর হয় না, তা কিন্তু না। তবে আগ্রহটা এখানে থাকে। এই আগ্রহকে আমরা কিভাবে ব্যবহার করতে পারি সমাজের বিভিন্ন জায়গায় সেই চেষ্টা থাকবে। বিপিএলকে শুধু খেলায় সীমাবদ্ধ না রেখে বা স্টেডিয়াম এলাকার মধ্যে না রেখে দেশজুড়ে উৎসবের উপলক্ষ করে তুলতে চায় বিসিবি। ফাহিম বলেণ আগের যে কোনো বিপিএল থেকে এবার আলাদা হবে। এসবকে রূপ দেওয়াটা সহজ হবে না সেটা আমরা জানি। তবে আমরা চেষ্টা করছি।