এক গার্মেন্টস কর্মকর্তাকে ‘অপহরণ’কাণ্ডে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে নগর ছাত্রদলের আহ্বায়ক মো. সাইফুল আলমকে। ওই অপহরণের ঘটনায় সাইফুল সম্পৃক্ত না থাকলেও চান্দগাঁও থানা ছাত্রদলের এক নেতার বিরুদ্ধে জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠে। এরপর কেন্দ্র থেকে বিষয়টি খতিয়ে দেখে দ্রুত রিপোর্ট করে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু তা করতে সময়ক্ষেপণ করায় গতকাল রোববার সাইফুলকে নোটিশ দেওয়া হয়।
জানা গেছে, চান্দগাঁও থানার বিসিক শিল্প এলাকা থেকে একটি গার্মেন্টসের সিনিয়র সুপারভাইজার পদে কর্মরত শফিউল আলমকে গত শনিবার রাত ১০টার দিকে অপহরণ করা হয়। অপহরণকারীরা তার কাছে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। অপহরণের অভিযোগ পেয়ে চান্দগাঁও থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে রাতেই তাকে উদ্ধার করে। উদ্ধারের পর মো. সোহেল নামে এক যুবদল নেতার নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে চান্দগাঁও থানায় এজাহার দিয়েছেন শফিউল আলম।
অপহৃত শফিউল আলম সাংবাদিকদের বলেন, আমাকে অপহরণ করে সিঅ্যান্ডবি রেললাইন টেকবাজারের ভেতর অন্ধকার জায়গায় নিয়ে যায়। সেখানে শারীরিকভাবে আঘাত করে। তারা অনেকগুলো স্ট্যাম্পে আমার স্বাক্ষর নিয়েছে।
চান্দগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আফতাব উদ্দিন বলেন, টেকবাজার রেললাইন থেকে শফিউল আলমকে উদ্ধার করা হয়। আমাদের উপস্থিতি টের পেয়ে অপহরণকারীরা পালিয়ে যায়।
এদিকে অপহরণের পর শফিউল আলমের ছেলে আমজাদ হোসেন হৃদয় দাবি করেন, যুবদল নেতা সোহেল ও চান্দগাঁও থানা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আলফাজের নেতৃত্বে তার বাবাকে অপহরণ করেছে। তিনি কেন্দ্রীয় ছাত্রদল নেতৃবৃন্দকে বিষয়টি অবহিত করেন। এরপর এ ঘটনায় আলফাজের সম্পৃক্ততা আছে কিনা তা খতিয়ে দেখে কেন্দ্রকে জানাতে নগর ছাত্রদলের আহ্বায়ক সাইফুল আলমকে নির্দেশনা দেওয়া হয়।
সর্বশেষ তাকে কারণ দর্শানো নোটিশ দেওয়া হয়। কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর আলম স্বাক্ষরিত নোটিশে বলা হয়, চট্টগ্রাম মহানগর শাখা ছাত্রদলের দায়িত্বশীল পদে আসীন থেকে সাংগঠনিক দায়িত্ব অবহেলার কারণে তার (সাইফুল আলম) বিরুদ্ধে কেন স্থায়ী সাংগঠনিক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের উপস্থিতিতে সংগঠনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে লিখিত ব্যাখ্যা প্রদানের নির্দেশ দেওয়া হলো।
এ বিষয়ে সাইফুল আলম আজাদীকে বলেন, অপহরণের ঘটনায় আলফাজের কোনো সম্পৃক্ততা আছে কিনা তা খবর নিয়ে সেন্ট্রাল থেকে আমাকে জানাতে বলে। রাতে তাৎক্ষণিক সবাইকে তো এক জায়গায় পাওয়া যায় না। আর আমি শতভাগ শিউর না হয়ে তো রিপোর্ট দিতে পারি না। তাই সবার সঙ্গে কথা বলে রিপোর্ট দিতে একটু দেরি হয়েছে।
তিনি বলেন, আমি আলফাজের সম্পৃক্ততা পাইনি। তার সাথে কথা বলেছি। সে বলেছে, সে এ ঘটনায় জড়িত নেই। জড়িত প্রমাণ করতে পারলে যে কোনো সাংগঠনিক ব্যবস্থা সে মাথা পেতে নেবে। অপহরণের ঘটনায় অভিযোগ আসা অন্যদের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখানে আলফাজ ছাত্রদল করে, তাই বিষয়টি খতিয়ে দেখেছি। অন্যদেরটা বলতে পারব না।