চট্টগ্রাম মহানগরে ৯টি কেন্দ্রে করোনার টিকা দেওয়া হতে পারে। অনলাইন রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে টিকা প্রদানের কার্যক্রম চলবে। এর জন্য আসছে ‘সুরক্ষা’ নামে একটি অ্যাপস।
চলতি জানুয়ারি মাসের মধ্যে দেশে করোনার টিকা আসবে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। গতকাল সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম এ তথ্য জানান। ২৫ জানুয়ারির মধ্যে টিকা পাওয়া যাবে উল্লেখ করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, ২৬ জানুয়ারি থেকে টিকার জন্য অনলাইনে নিবন্ধন শুরু হবে। করোনার ভ্যাকসিন ব্যবস্থাপনা ও বিতরণের সার্বিক বিষয় তুলে ধরা হয় সংবাদ সম্মেলনে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, ভ্যাকসিন প্রদানে প্রাথমিকভাবে টিকাদান কেন্দ্র নির্বাচন করা হয়েছে। ভ্যাকসিন প্রদানের কেন্দ্র হিসেবে প্রাথমিকভাবে সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বিশেষায়িত হাসপাতাল, পুলিশ-বিজিবি হাসপাতাল, সামরিক হাসপাতাল, জেলা সদর হাসপাতাল ও উপজেলায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেঙ নির্বাচন করা হয়েছে। লিখিত নির্দেশনা না পেলেও মৌখিকভাবে এমন তথ্য জানতে পেরেছেন বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি।
স্বাস্থ্য বিভাগের এই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, চট্টগ্রাম মহানগরে ৯টি কেন্দ্রে করোনার ভ্যাকসিন প্রদান কার্যক্রম পরিচালিত হতে পারে। মহানগরে সরকারি পর্যায়ে একটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (চমেকহা), একটি জেলা সদর হাসপাতাল (জেনারেল হাসপাতাল), একটি বিশেষায়িত হাসপাতাল (বিআইটিআইডি) এবং একটি পুলিশ হাসপাতাল ও একটি সামরিক হাসপাতাল (সিএমএইচ) রয়েছে।
আর বেসরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল রয়েছে ৪টি। এগুলো হল, মা ও শিশু হাসপাতাল মেডিকেল কলেজ, মেরিন সিটি মেডিকেল কলেজ, সাউদার্ন মেডিকেল কলেজ এবং ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।
সরকারি পর্যায়ে ৫টি হাসপাতাল এবং ৪টি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ মহানগরে মোট ৯টি হাসপাতালকে করোনার টিকাদান কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হতে পারে। যদিও বেসরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সংখ্যা বেশি থাকলে কেন্দ্র হিসেবে সবকটি ব্যবহার করা হবে কিনা, তা এখনো চূড়ান্ত নয় বলে জানান সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি।
এদিকে, টিকা প্রদানে সারাদেশে ৭ হাজার ৩৪৪টি টিম তৈরি করা হয়েছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। প্রতিটি দলে ৬ জন সদস্য থাকবেন। এর মধ্যে দুজন টিকাদানকারী (নার্স, স্যাকমো, পরিবারকল্যাণ সহকারী) ও চারজন স্বেচ্ছাসেবক থাকবেন।
অনলাইন রেজিস্ট্রেশনে আসছে অ্যাপস : স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, অনলাইন রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে এই ভ্যাকসিন প্রদান কার্যক্রম পরিচালিত হবে। এর জন্য ‘সুরক্ষা’ নামের একটি অ্যাপস প্রস্তুত করা হচ্ছে, যার কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। এই অ্যাপস দিয়েই অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে বলে জানিয়েছেন সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, তালিকাভূক্তদের মধ্য থেকে যাদের রেজিস্ট্রেশনের জন্য নির্র্দেশনা দেয়া হবে, তাদের এই অ্যাপসের মাধ্যমে অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। মোবাইল নম্বর ও জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) দিয়ে এই রেজিস্ট্রেশন করা যাবে।
রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়ায় কেন্দ্র পছন্দের সুযোগ থাকবে জানিয়ে ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি (রেজিস্ট্রেশনকারী) ভ্যাকসিন গ্রহণের তারিখ ও কেন্দ্র সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পেয়ে যাবেন। নির্দিষ্ট তারিখে নির্ধারিত কেন্দ্রে গিয়ে সংশ্লিষ্ট রেজিস্ট্রেশনকারী ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ নিতে পারবেন। তবে আজ মঙ্গলবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কাছ থেকে এ সংক্রান্ত বিস্তারিত নির্দেশনা পাওয়া যেতে পারে বলে জানান সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি।