নতুন করে দেশের ২ হাজার ৫১টি স্কুল ও কলেজ এমপিওভুক্তিতে (মান্থলি পে অর্ডার) সম্মতি দিয়েছে সরকার। গতকাল বুধবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জারিকৃত এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের উপ-সচিব সোনা মনি চাকমার স্বাক্ষরে জারিকৃত প্রজ্ঞাপনে এমপিওভুক্তির জন্য নির্বাচিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর তালিকাও প্রকাশ করা হয়েছে। এ তালিকায় ৬৬৬টি নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ১ হাজার ১২২টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ১৩৬টি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ১০৯টি উচ্চ মাধ্যমিক কলেজ ও ১৮টি ডিগ্রি কলেজ রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন ভাতার সরকারি অংশ (এমপিও) সরকার দিতে সম্মত হয়েছে মর্মে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত তালিকা পর্যালোচনায় দেখা যায়, বৃহত্তর চট্টগ্রামের ১২০টি স্কুল-কলেজ এই তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে। এর মধ্যে মহানগরের ৮টি সহ চট্টগ্রাম জেলায় ৪২টি, কঙবাজার জেলায় ১৫টি, রাঙামাটি জেলায় ৩১টি, খাগড়াছড়ি জেলায় ২১টি এবং বান্দরবান জেলায় ১১টি স্কুল-কলেজ নতুন করে এমপিওভুক্ত হয়েছে।
তালিকা বিশ্লেষণে দেখা যায়, মহানগরসহ চট্টগ্রাম জেলায় এমপিওভুক্ত মোট ৪২টি স্কুল-কলেজের মধ্যে নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে ১৩টি, মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে ১৯টি, উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৮টি এবং উচ্চ মাধ্যমিক কলেজ ও ডিগ্রি কলেজ রয়েছে ১টি করে। কঙবাজার জেলায় মোট ১৫টি এমপিওভুক্ত স্কুল-কলেজের মধ্যে নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১০টি ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে ৫টি। রাঙামাটি জেলায় এমপিওভুক্ত মোট ৩১টি স্কুল-কলেজের মধ্যে নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১৮টি, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১১টি এবং উচ্চ মাধ্যমিক কলেজ রয়েছে ২টি।
খাগড়াছড়ি জেলায় এমপিওভুক্ত মোট ২১টি স্কুল-কলেজের মধ্যে ১০টি নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং ১১টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়। আর বান্দরবান জেলায় এমপিওভুক্ত মোট ১১টি স্কুল-কলেজের মধ্যে ২টি নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ৮টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও একটি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতার সরকারি অংশ সরকার কর্তৃক প্রদানের সম্মতিতে বেশ কিছু শর্তও দিয়েছে মন্ত্রণালয়।
এসব শর্তের মধ্যে রয়েছে, শিক্ষক কর্মচারীদের বেতন-ভাতাদি ও শৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিষয়াদি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের (স্কুল ও কলেজ) জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা-২০২১ অনুযায়ী কার্যকর হবে। সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের যোগ্যতা বা অভিজ্ঞতা নিয়োগকালীন বিধি-বিধান ও সংশ্লিষ্ট পরিপত্র মোতাবেক প্রযোজ্য হবে। শিক্ষক নিবন্ধন চালু হওয়ার আগে বিধিসম্মতভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষক ও কর্মচারীরা এমপিওভুক্তির সুযোগ পাবেন। পরবর্তীতে নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির জন্য অবশ্যই নিবন্ধন সনদ প্রযোজ্য হবে।
এমপিওভুক্তির জন্য বিবেচিত হওয়া প্রতিষ্ঠান নীতিমালা অনুযায়ী কাম্য যোগ্যতা বজায় রাখতে ব্যর্থ হলে, সে প্রতিষ্ঠানের এমপিও স্থগিত করা হবে। পরবর্তীতে কাম্য যোগ্যতা অর্জন করলে স্থগিত এমপিও অবমুক্ত করার বিষয়টি বিবেচনা করা হবে। যেসব তথ্যের ভিত্তি করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা হয়েছে, তার কোনোটি ভুল বা মিথ্যা প্রমাণিত হলে এমপিও বাতিলসহ তথ্য সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির এ আদেশ জারির তারিখ (৬ জুলাই) থেকে কার্যকর হবে।
এছাড়াও যোগ্যতা সাপেক্ষে কোনো প্রতিষ্ঠান প্রাথমিক তালিকা থেকে বাদ গেছে মনে করলে প্রতিষ্ঠান প্রধান ও কমিটির সভাপতির যৌথ স্বাক্ষরে ১৫ দিনের মধ্যে আপিল করতে পারবে বলে মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব বরাবর আবেদন করতে হবে। ১৫ দিনের মধ্যে শুনানি গ্রহণ করে মন্ত্রণালয় আপিল নিষ্পত্তি করবে।
এমপিওভুক্ত নগরীর ৮ প্রতিষ্ঠান : পাঁচলাইশের প্রবর্তক স্কুল অ্যান্ড কলেজ, হোসেন আহমদ চৌধুরী সিটি কর্পোরেশন স্কুল অ্যান্ড কলেজ, কর্ণফুলীর আইয়ুব বিবি সিটি কর্পোরেশন স্কুল অ্যান্ড কলেজ, পাহাড়তলীর কাট্টলী সিটি কর্পোরেশন গার্লস হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজ, চান্দগাঁওয়ের সিডিএ পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ, কোতোয়ালীর চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন মিউনিসিপ্যাল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, কাজেম আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজ এবং ডবলমুরিংয়ের পোস্তারপাড় সিটি কর্পোরেশন বালক উচ্চ বিদ্যালয়।