বাংলাদেশসহ বিশ্বে মৃত্যু এবং অক্ষমতার একটি উল্লেখযোগ্য কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে রোড ট্রাফিক ইনজুরি (আরটিআই)। প্রতি বছর বিশ্বে প্রায় ১২ লক্ষ মানুষ ‘রোড ক্র্যাশ’র কারণে প্রাণ হারায়।
ব্লুমবার্গ ফিলানথ্রপিস ইনিশিয়েটিভ ফর গ্লোবাল রোড সেফটির (বিআইজিআরএস) সহযোগিতায় চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) এবং ভাইটাল স্ট্র্যাটেজিস আয়োজিত ‘২য় সড়ক নিরাপত্তা সাংবাদিকতা কর্মশালা’য় এ তথ্য জানানো হয়। গতকাল নগরের একটি রেস্টুরেন্টে অনুষ্ঠিত এ কর্মশালায় বিভিন্ন গণমাধ্যমের মোট ১৯ জন সাংবাদিক অংশগ্রহণ করেন।
কর্মশালায় জানানো হয়, চসিক ও সিএমপি থেকে যৌথভাবে প্রকাশিত চট্টগ্রাম রোড সেফটি রিপোর্ট ২০২০–২২ প্রকাশ করে। এতে দেখা গেছে, চট্টগ্রাম শহরে ২০২০ থেকে ২২ সালের মধ্যে ২৬৩ জন রোড ক্র্যাশে প্রাণ হারিয়েছেন। একই সাথে প্রতিবেদনটিতে শহরের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ১০টি সড়ক করিডোর এবং স্পট চিহ্নিত করা হয়েছে, যেখানে সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করা প্রয়োজন। কর্মশালায় সড়ক নিরাপত্তা ঝুঁকির কারণ হিসাবে গতি এবং দুর্ঘটনার তথ্য–উপাত্তের প্রয়োজনীয়তা ও সল্যুশন জার্নালিজমের উপর আলোকপাত করা হয়। কর্মশালার সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন চসিকের ভারপ্রাপ্ত মেয়র গিয়াস উদ্দিন। বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) মাসুদ আহমেদ, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) সহকারী পরিচালক আতিকুর রহমান এবং ভাইটাল স্ট্র্যাটেজিস–সিঙ্গাপুর অফিসের প্রোগ্রাম অফিসার সুগান্থি সারাভানান। এতে সভাপতিত্ব করেন চসিকের প্রধান প্রকৌশলী শাহিন উল ইসলাম চৌধুরী। সঞ্চালনা করেন বিআইজিআরএস–চট্টগ্রামের ইনিশিয়েটিভ কো–অর্ডিনেটর লাবিব তাজওয়ান উৎসব।
বক্তব্য রাখেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ন্যাশনাল প্রফেশনাল অফিসার–এনসিডি ড. সৈয়দ মাহফুজুল হক, জন্স হপকিন্স ইন্টারন্যাশনাল ইনজুরি রিসার্চ ইউনিট–জেএইচআইআইআরইউ এর গবেষণা সহযোগী শিরিন ওয়াধানিয়া ও সহকারী বিজ্ঞানী জাবির হোসেন, ওয়ার্ল্ড রিসোর্সেস ইনস্টিটিউট–ডব্লিউআরআই এর কনসালটেন্ট স্থপতি ফারজানা ইসলাম তমা, বিআইজিআরএস–চট্টগ্রামের সার্ভিল্যান্স কো–অর্ডিনেটর কাজী মো. সাইফুন নেওয়াজ, টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজার আমিনুল ইসলাম সুজন ও ভাইটাল স্ট্র্যাটেজিস ও মো. মাহামুদুল হাসান, ভাইটাল স্ট্র্যাটেজিসের সার্ভেইল্যান্স বিভাগের ডেপুটি ডিরেক্টর ইজাকুয়েল দন্তেস ও সিনিয়র টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজার মিরিক পালা।
ভারপ্রাপ্ত মেয়র গিয়াস উদ্দিন চট্টগ্রাম শহরে সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে রোড ক্র্যাশ হ্রাস ও প্রতিরোধে জরুরি পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন। তিনি সড়ক নিরাপত্তার চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় জনসচেতনতামূলক প্রচারণা এবং ট্রাফিক আইন প্রয়োগের গুরুত্বের ওপর জোর দেন। ভবিষ্যতে সড়ক নিরাপত্তাকে বিবেচনায় নিয়ে চট্টগ্রামে সড়ক অবকাঠামো নির্মাণ করা হবে বলেও তিনি আশ্বাস দেন।