নগরীতে পৃথক তিনটি ধর্ষণের ঘটনায় মামলা

ওয়াসা শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদকসহ গ্রেপ্তার ২

আজাদী প্রতিবেদন | শুক্রবার , ২২ জুলাই, ২০২২ at ৫:৩৭ পূর্বাহ্ণ

নগরীতে পৃথক তিনটি ধর্ষণের ঘটনায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে দুইজনকে। ঘটনা তিনটি বায়েজিদ বোস্তামী, সদরঘাট ও পতেঙ্গা থানায় সংঘটিত হয়েছে। নগরীর ধর্ষণ মামলায় ওয়াসার শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক তাজুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত বুধবার রাতে নগরীর চান্দগাঁও আবাসিক এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বায়েজিদ থানার এসআই মো. আব্দুল্লাহ। তিনি বলেন, গত বুধবার রাতে তাজুল ইসলামের বাসার এক ভাড়াটিয়া তার বিরুদ্ধে একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেছে। মামলা দায়েরের পর পরই অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশ জানায়, মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, বায়েজিদ বোস্তামী থানাধীন আরবান হাউজিং সোসাইটির এক ভাড়াটিয়া (গৃহবধূ) তাজুলের কুপ্রস্তাবে রাজি না হলে স্বামী ও সন্তানদের হত্যার হুমকি দিয়ে ওই গৃহবধূকে ধর্ষণ করেন তিনি। স্বামী ও দুই ছেলে বাসায় না থাকার সুযোগে তাজুল প্রায়ই বাসায় এসে ওই গৃহবধূকে ধর্ষণ করত। স্বামী ও দুই ছেলেকে হত্যার হুমকিতে গৃহবধূ ধর্ষণের বিষয়টি কাউকে জানাননি।
এদিকে নগরীর পতেঙ্গায় মায়ের অনুপস্থিতিতে ১৪ বছর বয়সী এক কিশোরীকে একাধিকবার ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে সৎ বাবার বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত সৎ বাবা মোহাম্মদ জাহাঙ্গীরকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পতেঙ্গা থানার ওসি কবির হোসেন। গ্রেপ্তার মোহাম্মদ জাহাঙ্গীরের বাড়ি ভোলা জেলার দৌলতখান উপজেলায়। কাজের সুবাদে পতেঙ্গায় ভাড়া বাসায় থাকতেন।
একাধিকবার ওই কিশোরীকে ধর্ষণ করা হলেও ঘটনা গত বুধবার প্রকাশ পায়। ওইদিন রাতেই থানায় ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন কিশোরীর মা। পতেঙ্গায় চায়ের দোকান করে জীবিকা নির্বাহ করতেন অভিযুক্ত জাহাঙ্গীর।
জানা যায়, ৬ বছর আগে জাহাঙ্গীরের সাথে ওই কিশোরীর মায়ের বিয়ে হয়। ওই কিশোরী তার মায়ের প্রথম ঘরের সন্তান। কিশোরীর মা পেশায় গার্মেন্টস কর্মী। দিনের বেশির ভাগ সময় গার্মেন্টসে থাকেন। এই ফাঁকে সৎ বাবা সুযোগ নেন একাধিকবার। দোকান ফেলে বাসায় এসে কিশোরী মেয়েকে ধর্ষণ করতেন। ওসি কবির হোসেন আরও বলেন, ওই কিশোরীর মা বাদী হয়ে সৎ বাবার বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের পর জাহাঙ্গীরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ওই কিশোরীকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে ভর্তি করা হয়েছে।
অন্যদিকে নগরীর সদরঘাটে আপন চাচাতো ভাইয়ের হাতে ১৫ বছরের এক কিশোরী ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। সদরঘাট থানার পশ্চিম মাদারবাড়ী হাজী বিল্ডিংয়ে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনাটি আরও চারদিন আগে ঘটলেও গতকাল বৃহস্পতিবার তা প্রকাশ পায়। এ ঘটনায় অভিযুক্ত চাচাতো ভাই ইসমাইল হোসেনকে আসামি করে সদরঘাট থানায় একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করা হয়েছে।
জানা যায়, গত ১৭ জুলাই ওই কিশোরীর বাসায় তার চাচাতো ভাই বেড়াতে আসে। কিশোরীর মা রিনা বেগম অসুস্থ থাকায় তিনি হাসাপাতালে ভর্তি ছিলেন। এই সুযোগে অভিযুক্ত চাচাতো ভাই ওই কিশোরীকে একা পেয়ে ধর্ষণ করেন। বর্তমানে ওই কিশোরী চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তি রয়েছেন।
সদরঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খাইরুল ইসলাম বলেন, ওই কিশোরীর সাথে তার চাচাতো ভাই ইসমাইলের নিয়মিত মোবাইল ফোনে যোগাযোগ ছিল। তাছাড়া বাসায়ও যাতায়াত ছিল। ঘটনার আগের দিন কিশোরীর মা অসুস্থ থাকায় ইসমাইল তাদের বাসায় আসেন। সুযোগ বুঝে একা পেয়ে তাকে ধর্ষণ করেন। ওই কিশোরীর মা থানায় মামলা করেছেন। আসামি পলাতক রয়েছে। তবে যেহেতু আত্মীয়ের মধ্যে ঘটনা, সেহেতু বেশি দিন পালিয়ে থাকতে পারবে না। আমরা তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসরকারি কর্মকর্তাদের গাড়ির তেলের বরাদ্দ কমল
পরবর্তী নিবন্ধচট্টগ্রামের চার উপজেলাকে ভূমিহীন ও গৃহহীন ঘোষণা