দেশজুড়ে একের পর এক ধর্ষণের ঘটনা নিয়ে শোরগোল চলছে। প্রায় প্রতিদিনই ধর্ষণের ঘটনা শোনা যাচ্ছে। ধর্ষণের জন্য মূলত বিকৃত মানসিকতাই দায়ী। সাধারণ মানুষের মনে প্রশ্ন, কোন পথে এগোচ্ছে দেশ ? এদেশে কি ধর্ষণ ক্রমশ বাড়ছে? দিন-দিন চিন্তার কারণ হয়ে উঠছে ধর্ষণের মতো জঘন্য একটি বিষয়। আমাদের দৃষ্টিভঙ্গিতে পরিবর্তন আনতে হবে। নিম্ন আয়ের পরিবারগুলোতে ধর্ষণের ঘটনা সবচেয়ে বেশি ঘটে। এসব পরিবার সব সময়ই নানা ধরনের টানাপোড়েনের মধ্যে থাকে। এর সুযোগ নেয় এক ধরনের নরপশুরা। তারা সুযোগ বুঝে এসব পরিবারের শিশুদের নিজের কাছে নেয় এবং অবুঝ শিশুরা তাদের লালসার শিকার হয়। সামাজিক লোকলজ্জার ভয়ে ধর্ষণের শিকার হয়ে বেশিরভাগ নারীই বিচার চাইতে যান না। আবার যেসব নারী বিচার চাইতে যান, তাদের পুলিশ, প্রশাসন ও সমাজের বিভিন্ন পর্যায়ে যথেষ্ট হেনস্তা হতে হয়। তাই শ্রমজীবী মানুষের দাবি, ধর্ষণের শাস্তি একটাই, ফাঁসি হোক ধর্ষকের। তাদের মতে, ধর্ষকদের অধিকাংশই রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে প্রভাবশালী হওয়ায় ‘গরীবের কোনো বিচার নাই’।
তাগো কাছে এসব কাম না করার মিনতি করি
জসিম উদ্দিন
আচার বিক্রেতা
আচার বিক্রেতা জসিম উদ্দিন বলেন, ‘সবাই খারাপ না। কিছু লোক খারাপ। তাগো জইন্যে দুঃখ অয়। তারা বুজবার পারে না, তাগো মা বইনেরে কেউ এ কাম কইরলে তাগো কেমন জ্বইলতো। হেই চিন্তা করি যারা খারাপ কাজ করে তাগো কাছে এসব কাম না করার মিনতি করি।’ ধর্ষণের শাস্তি কী হওয়া উচিত জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘শাস্তিতো অইতাছে। আকাম কি বন্ধ আছে? খোদাতালারে যদি ভয় করতো তাইলে মাইনষে এসব কাম করতো না।’
মেয়ে আছে, চিন্তায় থাকতে হয়
সিরাজুল ইসলাম
পান সিগারেট বিক্রেতা
পান সিগারেট বিক্রেতা সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা কষ্ট করে জীবন চালাই। তারপরেও দিন শেষে ঘরে ফেরার সময় ভয়ে থাকতে হয়। নারীদের যেন কোনো নিরাপত্তা নেই! কী বলবো। কারা শুনবে আমাদের কথা! আমার মেয়ে আছে। তাদের নিয়ে চিন্তায় থাকতে হয়। কারো তো বিচার হয় না। বিচার দিয়ে লাভ কী!’
ধর্ষককে ধরার সাথে সাথেই বিচার করতে হবে
মো: মোনাফ
সিএনজি টেক্সি চালক
সিএনজি টেক্সি চালক মো: মোনাফ বলেন, ‘আমরা সিএনজি চালাই। এতোকিছু বুঝি না। তারপরেও মানুষের থেকে মাঝে মাঝে শুনি। এ ধরনের ঘটনা যারা ঘটায় তাদের শাস্তি হওয়া দরকার। কিন্তু হয় নাতো। এখনতো ধর্ষণে জড়িতরা গ্রেপ্তার হচ্ছে দেশের আনাচে কানাচে।’ এ কথা শেষ করতে না করতেই মোনাফ বলেন, ‘ওই আপনেরা লেহালেহি করতেছেন বইলা , বাধ্য হইয়া অগোরে ধরতাছে।’ তার মতে ধর্ষণের বিচার করতে হবে ধর্ষককে ধরার সাথে সাথেই। ধরলাম, মামলা হলো, সাজা হবে; এভাবে করলে কখনোই ধর্ষণ বন্ধ হবে না।
হে গো ফাঁসি চাই
আয়েশা বেগম
পান সিগারেট বিক্রেতা
পুরাতন রেল স্টেশনে পান সিগারেট বিক্রেতা আয়েশা বেগম বলেন, ‘আমার ঘরেও মাইয়া আছে। কাজেই মাইয়া হওনের জ্বালা আমি বুঝি। একটা মাইয়ার যহন বেইজ্জতি হয়, তহন পোলাগো কোনো দোষ থাহে না। মাইয়াডারেই ছি ছি করে।’ তিনি বলেন, ‘পোলাপাইনে কী না কী খায়, ওই কি সব ট্যাবলেট। ওইসব খাইয়াই তো এইসব কাম করে। হে গো ফাঁসি চাই। ওরা যেন খারাপ জিনিস না খাইবার পারে হেইডাও দেহা উচিত সরকারের।’