ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতনের শিকার নারী বিচার চাইতে গেলে তার চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন তোলার যে সুযোগ দেড়শ বছরের পুরনো সাক্ষ্য আইনে বহাল রাখা হয়েছে, তা বাতিলে হাই কোর্টে রিট আবেদন হয়েছে। ১৮৭২ সালের সাক্ষ্য আইনের ১৫৫ (৪) ও ১৪৬ (৩) ধারার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে গতকাল রোববার বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্ল্যাস্ট), আইন ও সালিস কেন্দ্র (আসক) ও নারীপক্ষ আবেদনটি করেছে। খবর বিডিনিউজের।
ধারা দুটিকে কেন বাতিল ও অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না এবং সংবিধানের ২৭, ২৮, ৩১ ও ৩২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী যৌন স্বাধীনতা ও সমতার ক্ষেত্রে মৌলিক অধিকার পরিপন্থি ঘোষণা করা হবে না সেই প্রশ্নে রুল চাওয়া হয়েছে। আবেদনে আইন সচিবকে বিবাদী করা হয়েছে।
বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাই কোর্ট বেঞ্চে চলতি সপ্তাহে রিটটির ওপর শুনানি হতে পারে বলে জানিয়েছেন আবেদনকারী পক্ষের আইনজীবী শারমিন আকতার। তিনি বলেন, রিট আবেদনটি সংশ্লিষ্ট বেঞ্চে রোববার উপস্থাপন করা হয়েছে। কাল বা এই সপ্তাহের যে কোনো দিন শুনানি হতে পারে।
১৫৫(৪) ধারায় বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি যখন বলাৎকার কিংবা শ্লীলতাহানির চেষ্টার অভিযোগে ফৌজদারিতে সোপর্দ হন, তখন দেখানো যেতে পারে যে অভিযোগকারিণী সাধারণভাবে দুশ্চরিত্রা। আর ১৪৬ (৩) এ বলা হয়েছে, তাহার চরিত্রের প্রতি আঘাত করে তার বিশ্বাসযোগ্যতা সম্পর্কে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করা যায়, যদিও এ রূপ প্রশ্নের উত্তরের দ্বারা সে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কোনো অপরাধের সহিত জড়িত হতে পারে, কিংবা সে দণ্ডলাভের যোগ্য সাব্যস্ত হতে পারে, অথবা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে তাহার দণ্ডলাভের যোগ্য সাব্যস্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে, তথাপি অনুরূপ প্রশ্ন করা যাবে।
মানবাধিকারকর্মী ও আইনজীবীরা দীর্ঘ দিন ধরে সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক এই ঔপনিবেশিক আইনটি সংশোধনের দাবি জানিয়ে এলেও স্বাধীন বাংলাদেশের পঞ্চাশ বছরেও তা অক্ষত আছে। এর মধ্যে সাক্ষ্য আইনের ধারা ১৫৫(৪) বাতিলের প্রস্তাব আগামী জানুয়ারিতে জাতীয় সংসদে তোলা হতে পারে শনিবার একটি গণমাধ্যমকে বলেছেন আইনমন্ত্রী।