ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষার অভাবই আত্মহত্যার অন্যতম কারণ

মোহাম্মদ শাহজাহান | মঙ্গলবার , ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ at ৮:০৭ পূর্বাহ্ণ

বার্ধক্য মানে অসহায়ত্ব। আর এই অসহায়ত্ব আরো হাজার গুণ বেড়ে যায়, মানুষ যখন একাকী হয়ে যায়, আপনজন ও সন্তানেরা দূরে সরে যায়। একাকীত্ব জন্ম দেয় মানসিক দুশ্চিন্তা, হতাশা, আর স্বজন হারানোর যন্ত্রণা। যৌবনে সাফল্যের প্রতিটা বাঁকজয়ী সিংহপুরুষও বার্ধক্যে এসে জীবন যুদ্ধে পরাজিত সৈনিকে পরিণত হন। আর তখনই জীবনাকাশে দেখা দেয় হতাশা, দুর্দশা ও অনামিশার ঘনঘটা। একসময় হতাশা আরো ঘণীভূত হয়ে তিমিরাচ্ছন্নতাকে তীব্র থেকে তীব্রতর করে তোলে, এমন মুহূর্তে মানুষ চূড়ান্ত মুক্তির একমাত্র অবলম্বন হিসেবে বেছে নেয় আত্মহত্যাকে। তেমনি এক অবসাদগ্রস্ত ব্যক্তি হচ্ছেন মহসিন সাহেব। যিনি গত সম্প্রতি ফেসবুক লাইভে এসে পিস্তল দিয়ে নিজের মাথায় গুলি করেন। অর্থ, বিত্ত- বৈভব কিছুর কমতি ছিল না তাঁর। প্রাচুর্যের নাম যদি সুখ হয়, তবে তিনি চরম সুখী একজন মানুষ। কিন্তু সুখী মানুষ আত্মহত্যা করতে যাবেন কেন? আপাতত দৃষ্টিতে এই অপমৃত্যুর পশ্চাতে দুটি প্রধান কারণ দৃশ্যমান বলে মনে হয়-
প্রথমত: সন্তানদের তিনি উচ্চশিক্ষিত করেছিলেন বটে, কিন্তু নৈতিক ও ধর্মীয় শিক্ষার অভাবটা ছিল পূর্ণ। কারণ বার্ধক্যে একাকিত্ব জীবন কিংবা বৃদ্ধাশ্রমে যাওয়া ব্যক্তিরা মোটামুটি পুরোটাই তথাকথিত আধুনিক শিক্ষিত সন্তানদের বাবা-মা। এক্ষেত্রে কোনো ধর্মীয় শিক্ষায় শিক্ষিত ব্যক্তির মা-বাবা কেউ বৃদ্ধাশ্রমে আছে! এরূপ দৃষ্টান্ত এখনো খবরের শিরোনাম হয়নি।
দ্বিতীয়ত: মহসিন সাহেব স্বীয় চিন্তাশীলতাকে ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে বিচার করার অবকাশ পাননি, বিধায় ইসলামে আত্মহত্যার মত মহাপাপের শাস্তির ভয়াবহতা সম্বন্ধে তাঁর ধারণা ছিল অস্পষ্ট। নতুবা তিনি এ কাজ কখনো করতেন না। আমরা নিজেরা এবং আমাদের সন্তানদের যদি সাধারণ শিক্ষার পাশাপাশি নৈতিক ও ধর্মীয় শিক্ষায় দীক্ষিত করতে পারি, তবে বার্ধক্যে একাকীত্ব ও অসহায়ত্বের অবসাদ অনেকাংশে হ্রাস পাবে।
লেখক: প্রভাষক ও প্রাবন্ধিক

পূর্ববর্তী নিবন্ধলঞ্চের পরিবেশ রক্ষায় প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি
পরবর্তী নিবন্ধআসুন, অভিভাবকরা আগে সচেতন হই