দ. জেলা বিএনপি নেতা আব্বাসের সুদ মওকুফের নথি চেয়েছে হাই কোর্ট

| মঙ্গলবার , ২৫ মে, ২০২১ at ৫:৪৩ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রামে কৃষি ব্যাংকের আগ্রাবাদ শাখা থেকে বিএনপির সাবেক নেতা মোহাম্মদ আলী আব্বাসের নেওয়া ৮৫ কোটি টাকা ঋণের বিপরীতে ৪৮ কোটি টাকার সুদ মওকুফ করা সংক্রান্ত নথি তলব করেছে হাই কোর্ট। জনস্বার্থে করা রিট আবেদন শুনে বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সরদার মো. রাশেদ জাহাঙ্গীরের বেঞ্চ গতকাল সোমবার রুলসহ এ আদেশ দেয়। রুলে সুদ মওকুফ করার সিদ্ধান্ত কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা রুল করা হবে না তা জানতে চেয়েছে আদালত। খবর বিডিনিউজের।
অর্থ সচিব, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, বাংলাদেশ ফিনান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট ও বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালককে চার সপ্তাহের মধ্যে নথি দাখিল করতে এবং রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী চঞ্চল কুমার বিশ্বাস। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অরবিন্দ কুমার রায়।
কর্ণফুলীর খোয়াজনগর এলাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ আলী আব্বাস চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক। বর্তমানে তিনি দলের কোনো কমিটিতে নেই। একসময় পাথরঘাটা ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার ছিলেন তিনি।
রিটের নথি থেকে জানা যায়, আন্দরকিল্লায় তার মালিকানাধীন আব্বাস ট্রেডিংকে ভোগ্য পণ্য আমদানির জন্য ঋণ দেওয়া হয় ২০১১ সালে। পণ্য এনে বিক্রির পর ঋণ পরিশোধের কথা থাকলেও ১০ বছরেও ব্যাংকের টাকা পরিশোধ করেননি আব্বাস। নিজের ও স্ত্রীর নামে সম্পদ অর্জনের মাধ্যমে এই টাকা রূপান্তর করা ও অর্থপাচারের অভিযোগে ২০১৩ সালে কোতোয়ালি থানায় মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন(দুদক)। এই মামলায় কারাগারে যান আব্বাস। পরে উচ্চ আদালত থেকে জামিন পান। মামলাটি এখন মহানগর বিশেষ আদালতে বিচারাধীন। একই অভিযোগে ওই বছর কৃষি ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আব্বাসের বিরুদ্ধে অর্থঋণ আদালতে মামলা করে। সেই মামলাও নিষ্পত্তি হয়নি।
তবে ২০১৯ সালের ৩০ জুন ঋণের সুদ মওকুফের আবেদন করলে কৃষি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের ৭৪০তম সভায় অনারোপিত সুদের ১০০ শতাংশ অর্থাৎ ৪৭ কোটি ৬৯ লাখ ৯৪ হাজার এবং স্থগিত সুদ ৪১ লাখ ৪২ হাজারের অর্ধেক ২০ লাখ ৭১ হাজার টাকাসহ সর্বমোট ৪৭ কোটি ৯০ লাখ ৬৫ হাজার টাকা সুদ মওকুফ করা হয়। অবশিষ্ট পাওনা ৯ শতাংশ সুদে ১০ বছরে মোট ৩৬টি ত্রৈমাসিক কিস্তিতে পরিশোধের প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়।
রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করা আইনজীবী চঞ্চল কুমার বিশ্বাস সাংবাদিকদের বলেন, কৃষি ব্যাংক সম্পূর্ণ রাষ্ট্রয়ত্ত ব্যাংক। এই ব্যাংকের সমস্ত টাকা জনগণের। যে কারণে ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদ ঋণের এই সুদের টাকা, যা কিনা জনগণের টাকা তা মওকুফ করতে পারে না। তাছাড়া যে ব্যক্তির ঋণের সুদ মওকুফ করা হয়েছে, তার বিরুদ্ধে এই ঋণ সংক্রান্ত দুটি মামলা রয়েছে। একটি অর্থঋণ আদালতে, আরেকটি আর্থপাচারের অভিযোগে দুদকের মামলা। দুদক প্রাথমিক তদন্তে প্রমাণ পেয়েছে ঋণের টাকা তিনি বিদেশে পাচার করেছেন। কিন্তু দুটি মামলার কোনোটি নিষ্পত্তি হওয়ার আগেই কৃষি ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ওই ঋণের প্রায় ৪৮ কোটি টাকা সুদ মওকুফ করে দিয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধশ্রীলংকার বিপক্ষে প্রথম সিরিজ জয়ের হাতছানি
পরবর্তী নিবন্ধকর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নে ৮০ ভাগ সাফল্যের দাবি