দক্ষিণ আফ্রিকার বেনোনির উইলোমুর পার্কে গতকাল বৃহস্পতিবার যুব ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে স্বাগতিকদের ১৩০ রানে হারায় বাংলাদেশ। ২৮৬ রানের লক্ষ্যে ১৫৫ রানে গুটিয়ে যায় প্রোটিয়ারা। ঝড়ো ব্যাটিংয়ে চমৎকার শুরু করেন জাওয়াদ আবরার। তার সঙ্গে রিজান হোসেন ও মোহাম্মদ আব্দুল্লাহর ফিফটিতে তিনশর কাছাকাছি পৌঁছাল বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব–১৯ দল। পরে প্রতিপক্ষ ব্যাটিং গুঁড়িয়ে দিলেন ইকবাল হোসেন, স্বাধীন ইসলাম। বড় জয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা সফর শুরু করেছে যুবারা। বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ ৭০ রানের ইনিংস খেলেন জাওয়াদ। রিজান ও আব্দুল্লাহর ব্যাট থেকে আসে সমান ৬৩ রান করে। চমৎকার ফাস্ট বোলিংয়ে ৩ উইকেট নেন ইকবাল। লেগ স্পিনার স্বাধীনের শিকারও ৩টি। টস হেরে ব্যাট করতে নেমে সপ্তম ওভারে রিফাত বেগের উইকেট হারায় বাংলাদেশ। দ্বিতীয় উইকেটে জুটিতে শুরুর চাপ সামাল দেন সহ–অধিনায়ক জাওয়াদ ও অধিনায়ক আজিজুল হাকিম। দুজন মিলে ৮৩ বলে যোগ করেন ৮২ রান। ভিহান প্রিটোরিয়াসের ফুল লেংথ বলে স্লগ করতে গিয়ে বোল্ড হন আজিজুল। ৪৭ বলে ২৬ রান করে ফেরেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। তবে অন্য প্রান্তে শুরু থেকেই আগ্রাসী মেজাজে ছিলেন জাওয়াদ। ১৮তম ওভারে চমৎকার কাভার ড্রাইভে মাত্র ৪২ বলে পঞ্চাশ পূর্ণ করেন তিনি। পরে বড় শট খেলতে গিয়েই ডিপ স্কয়ার লেগে ক্যাচ দেন তরুণ ওপেনার। ৬১ বলের ইনিংসে ৯ চারের সঙ্গে ২ ছক্কা মারেন তিনি। মিডল–অর্ডারে দলের হাল ধরেন রিজান ও আব্দুল্লাহ। ইতিবাচক ব্যাটিংয়ে মাত্র ৯৪ বলে ৯৯ রানের জুটি গড়েন দুজন। অফ স্টাম্পের বাইরের বল খোঁচা মেরে কট বিহাইন্ড হন ৫৫ বলের ইনিংসে ৫ চার ও ৩ ছক্কা মারা রিজান। ইনিংসের শেষ দিকে এলবিডব্লিউ হয়ে ফেরেন আব্দুল্লাহ। তার ৭৬ বলের ইনিংসে ছিল ৭টি চার। শেষ দিকে ফরিদ হাসান ১৬ ও দেবাশিষ দেবা ১৮ রানের অপরাজিত ইনিংসে দলকে তিনশর কাছে নিয়ে যান। দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে ৪ উইকেট নেন বাঁহাতি পেসার জেজে বাসন।
রান তাড়ায় শুরু থেকে একবারও তেমন সম্ভাবনা জাগাতে পারেনি স্বাগতিকরা। দ্বিতীয় ওভারে ইকবালের বলে পয়েন্টে চমৎকার ক্যাচ নেন সামিউন বশির। বিদায়ঘণ্টা বাজে জর্খ ফন স্কালভিকের। নিজের পরের ওভারে আরমান মানাককে বোল্ড করেন ইকবাল। মাত্র ৫ রানে ২ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা। পঞ্চম ওভারে তাদের বিপদ আরও বাড়ে আল ফাহাদের বলে জেসন রোলস থুতনির নিচে আঘাত পেয়ে ড্রেসিং রুমে ফিরে গেলে। তার কনকাশন বদলি হিসেবে সাত নম্বরে নামেন ভিহান প্রিটোরিয়াস। ১৫তম ওভারে রিজানের বলে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে ড্রেসিং রুমে ফেরেন ড্যানিয়েল বোসমান। এরপর স্বাধীনের জোড়া আঘাত। চমৎকার গুগলির জবাব দিতে পারেননি কিপার–ব্যাটসম্যান কামোগেলো পিরি। সুইপ করতে গিয়ে এলবিডব্লিউ হন কনকাশন বদলি নামা প্রিটোরিয়াস। তখনও একপ্রান্ত আগলে রেখে অপরাজিত ওপেনিংয়ে নামা অধিনায়ক মোহাম্মদ বুলবুলিয়া। আট নম্বরে নেমে তার সঙ্গে মিলে পাল্টা আক্রমণের চেষ্টা করেন পল জেমস। তবে এই জুটি বেশি বড় হতে দেননি আজিজুল। উইকেটের পেছনে চমৎকার ক্যাচ নিয়ে ১৪ বলে ২৪ রান করা জেমসের বিদায় নিশ্চিত করেন ফরিদ। এই জুটিতে আসে ২৬ বলে ৩০ রান। পরে একার লড়াইয়ে দলকে দেড়শ পার করান বুলবুলিয়া। নতুন স্পেলে ফিরে বাসনকে বোল্ড করেন ইকবাল। আর স্বাধীনকে সুইপ করার চেষ্টায় স্টাম্প এলোমেলো হতে দেখেন বুলবুলিয়া। শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে ফেরার আগে ৪ চার ও ৩ ছক্কায় ৭৯ বলে ৭২ রান করেন প্রোটিয়া অধিনায়ক। একই মাঠে শনিবার সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে লড়বে দুই দল।