দ্রুততার সঙ্গে জুলাই সনদের বাস্তবায়ন ঘটবে, আশা আলী রীয়াজের

| শনিবার , ১৮ অক্টোবর, ২০২৫ at ৬:৪৭ পূর্বাহ্ণ

রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্যের ভিত্তিতে যে জাতীয় সনদ হয়েছে, তার বাস্তবায়ন দ্রুততার সঙ্গে ঘটবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ। তিনি বলেছেন, আমরা মনে করি রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য আমাদের যে চেষ্টা, সকলের যে চেষ্টা, সে চেষ্টা একদিনে সাফল্য অর্জন করবে না। একটি দলিল কেবলমাত্র সেটা নিশ্চয়তা দেবে না। আমরা আশা করি, এই যে জাতীয় দলিল তৈরি হয়েছে, তার বাস্তবায়ন ঘটবে। দ্রুততার সাথে বাস্তবায়ন ঘটবে। নাগরিকদের মতামতের মধ্য দিয়ে এই দিক নির্দেশক বাংলাদেশ রাষ্ট্রকে ভবিষ্যতে পরিচালনা করবে। কিন্তু আমাদের অনেকটা পথ যেতে হবে।

গতকাল জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় ‘জুলাই জাতীয় সনদ’ সইয়ের আগে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। আলী রীয়াজ বলেন, আমাদের মতের পার্থক্য থাকবে, রাজনীতিতে মতপার্থক্য না থাকলে তা গণতান্ত্রিক হয় না। মতের পার্থক্য থাকবে, পথের পার্থক্য থাকবে। কিন্তু এক জায়গায় ঐক্যবদ্ধ হতে হবে, বহু স্রোত যেন মোহনায় এসে মেলে; যেন আমরা বলতে পারি যে, আমাদের অনেক স্রোত, মোহনা একটি; সেটি হচ্ছে একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ তৈরি করা। খবর বিডিনিউজের।

তিনি বলেন, আমাদের বহু স্রোত, আমরা সকলে এক জায়গায় যে, আমরা যেকোনো ধরনের স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে সবাই দাঁড়িয়ে থাকব। সেই স্বপ্ন, সেই প্রত্যাশা, সেই চেষ্টার স্মারক যতটুকু আমরা অর্জন করেছি, এটি প্রথম পদক্ষেপ।

আলী রীয়াজ বলেন, আজকের এই দিন, বাংলাদেশের ইতিহাসের একটি অভূতপূর্ব এবং অনন্য সময়। একটি ক্রান্তিকালে দাঁড়িয়ে থাকা বাংলাদেশের জন্য এটি হচ্ছে আমাদের দীর্ঘপথের যাত্রার ক্ষেত্রে একটি মাইলফলক। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে লক্ষ মানুষের আত্মদানের মধ্য দিয়ে সাম্য, মানবিক মর্যাদা এবং সামাজিক ন্যায়বিচারের আদর্শকে ধারণ করে যে রাষ্ট্র গঠনের প্রচেষ্টা শুরু হয়েছিল, গত ৫৩ বছর ধরে যা বারবার হোঁচট খেয়েছে। বাংলাদেশের নাগরিকরা তাদের প্রাণপণ লড়াই করে গণতন্ত্র এবং জবাবদিহিমূলক একটি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য যে প্রয়াস চালিয়েছেন, যার অনন্য উদাহরণ হচ্ছে ১৯৯০ সালের গণঅভ্যুত্থান, ২০১৮ সালে আমরা দেখতে পেয়েছি কোটা বিরোধী কোটা সংস্কার আন্দোলন, আমরা দেখতে পেয়েছি নিরাপদ সড়ক প্রতিষ্ঠার আন্দোলন এবং সর্বোপরি ২০২৪ সালের জুলাইঅগাস্টের যে গণঅভ্যুত্থান।

তিনি বলেন, সেই চেষ্টা, সেই সাহস, সেই ধারাবাহিকতায় আজকে আমরা এই জুলাই জাতীয় সনদ স্বাক্ষর করতে যাচ্ছি। আমাদের যে স্বপ্ন, বাংলাদেশের মানুষের যে আকাঙ্ক্ষা, তাকে ধারণ করে, তাকে অগ্রসর করে নিয়ে যাওয়ার জন্য সকলের জন্য একটি বৈষম্যহীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার যে চেষ্টা; তাতে একটি দিক নির্দেশনা দেওয়ার জন্যই বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলো প্রায় এক বছর ধরে পারস্পরিক আলাপআলোচনার মধ্য দিয়ে এই জাতীয় সনদে উপনীত হয়েছেন। সকলের আন্তরিকতা, সকলের প্রচেষ্টা প্রত্যেকটি পদে পদে তাদের অংশগ্রহণের জন্য আমি বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি কমিশনের পক্ষ থেকে জানাই আন্তরিক কৃতজ্ঞতা। কিন্তু কেবলমাত্র কমিশন নয়, কেবলমাত্র রাজনৈতিক দল নয়। বাংলাদেশের বিভিন্ন সমাজের বিভিন্ন অংশের মানুষ এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে অংশগ্রহণ করেছেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধজুলাই সনদের অঙ্গীকারনামায় যা আছে
পরবর্তী নিবন্ধকিছু দল ঐকমত্যের নামে জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করছে : নাহিদ