ইয়াছিন পছন্দ করে বিয়ে করেন আমেনাকে। কিন্তু ইয়াসিনের পরিবার আমেনাকে পারিবারিক ও সামাজিকভাবে মেনে নেয়নি। পরিবারকে রাজি করাতে না পারায় ইয়াসিন বিয়ের পর আমেনাকে আর ঘরে তুলতে পারেনি।
এর মাঝে গত ১৮ সেপ্টেম্বর পারিবারিক সম্মতিতে ইয়াসিন এক নারীকে বিয়ে করেন। সম্ভবত তার বাড়ি হাটহাজারীর ১১ মাইল এলাকায়। ইয়াছিনের দ্বিতীয় বিয়ের কথা আমেনা জানতে পারলে স্বামী–স্ত্রীর মাঝে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। এই দ্বিতীয় বিয়ের জের ধরে বিরোধের কারণে ইয়াসিন আমেনাকে খুন করেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম জেলা পিবিআইয়ের উপ–পরিদর্শক (এসআই) ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শাহাদাত হোসেন। তবে তিনি ইয়াছিনের বিয়ের বিষয়টি নিশ্চিত করলেও দ্বিতীয় স্ত্রীর নাম নিশ্চিত করতে পারেনি।
জানা যায়, ইয়াসিনের দ্বিতীয় বিয়ে নিয়ে আমেনার সাথে দ্বন্দ্ব শুরু হলে ইয়াসিন পুলিশে কর্মরত তার বন্ধু ইরফানের সঙ্গে বেড়ানোর কথা বলে আনোয়ারায় চায়না ইকোনমিক জোন এলাকায় নিয়ে খুন করেন আমেনাকে। গতকাল আমেনা হত্যাকাণ্ডে জড়িত তিনজনকে গ্রেপ্তারের পর গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) চট্টগ্রাম জেলা ইউনিট। এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ সদস্য ইরফান হোসেন (২৯), জাহেদ নাবিদ (৩০) ও মো. সোহেলকে (৩৫) গ্রেপ্তার করা হয়। তবে ঘটনার পর আমেনার স্বামী ইয়াছিন (২৭) বিদেশে পালিয়ে যাওয়ায় পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি।
চট্টগ্রাম জেলা পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার শেখ জয়নুদ্দীন সাংবাদিকদের জানান, আমেনা হত্যাকাণ্ডের মূল হোতা ঘাতক স্বামী পলাতক রয়েছে। টিকটকের মাধ্যমে ইয়াসিন সম্পর্কে জড়িয়ে আমেনাকে বিয়ে করে। কিন্তু সম্প্রতি আমেনাকে না জানিয়ে সে আরেকটি বিয়ে করলে ইয়াসিনের সাথে আমেনার পারিবারিক কলহ শুরু হয়। এক পর্যায়ে আমেনা ইয়াছিনের বাড়িতে গিয়ে হুমকি দেয় বলে আমরা জানতে পারি। মূলত এই ঘটনার জেরে আমেনাকে হত্যা করা হয়।
পিবিআইয়ের কর্মকর্তারা জানান, ৩ অক্টোবর আনোয়ারার বৈরাগ ইউনিয়নের প্রস্তাবিত চায়না ইকোনমিক জোন এলাকা থেকে অজ্ঞাতনামা এক নারীর ক্ষতবিক্ষত মরদেহ উদ্ধার করে আনোয়ারা পুলিশ। পরে ফিঙ্গারপ্রিন্টের সহায়তায় ওই নারীর পরিচয় শনাক্ত করে পিবিআই। এরপর অভিযান চালিয়ে আসামিদের গ্রেপ্তারের পর তাদের দেওয়া জবানবন্দি অনুযায়ী আমেনা হত্যার রহস্য উন্মোচিত হয়।