এবারের বিপিএলটা মোটেও মনে রাখতে চাইবেনা ঢাকা ক্যাপিটালস। কারণ কেবল হারই যে দলটির সঙ্গী। গতকালের আগ পর্যন্ত ৮ ম্যাচ খেললেও তাতে জয় ছিল কেবলই একটি। সেটি ছিল সিলেটে রাজশাহীর বিপক্ষে। চট্টগ্রামে এসেও ভাগ্য পরিবর্তন হয়নি খালেদ মাহমুদ সুজনের দলের। এই ভেন্যুতে প্রথম শ্যাচে বরিশালের কাছে হেরেছিল ঢাকা। তবে গতকাল দ্বিতীয় ম্যাচে এসে জয়ের দেখা পেল আবার। প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ম্যাচে সিলেট স্ট্রাইকার্সকে ৬ রানে হারিয়েছে ঢাকা ক্যাপিটালস। লিটন দাশের দারুণ ব্যাটিং এর পর থিসারা পেরেরার দারুণ বোলিং ঢাকাকে পাইয়ে দেয় দ্বিতীয় জয়। আরো একটি বড় স্কোরের ম্যাচে জয়টা ঢাকারই। এবারের বিপিএলে সিলেটের পারফরম্যান্সও মনে রাখার মত না। আগের ৭ ম্যাচে দুটিতে জিতেছিল তারা। গতকালের হারের ফলে দুই দলেরই জয় দুটি করে। ঢাকা ৯ ম্যাচে ৪ পয়েন্ট আর সিলেট ৮ ম্যাচে পেয়েছে ৪ পয়েণ্ট। তবে রান রেটে এগিয়ে থাকায় ঢাতা ষষ্ট স্থানে আর সিলেট সবার নিচে সপ্তম স্থানে।
টসে জিতে ব্যাট করতে নামা ঢাকা ক্যাপিটালস ২৮ রানে হারায় তানজিদ হাসানকে। অবশ্য এই ২৮ রানের মধ্যে ২২ রানই তানজিদের। এরপর কোটজে ফিরেছেন ৯ রান করে। আর মোসাদ্দেকও বেশিক্ষণ সঙ্গ দিতে পারেনি লিটন দাশকে। মোসাদ্দেকও ফিরেছেন ৪ রান করে। তবে শুরু থেকেই লড়াই করতে থাকা লিটন দাশ টানছিলেন দলকে। চতুর্থ উইকেটে সাব্বির রহমানের সাথে ৪২ রান যোগ করেন লিটন দাশ। ২১ বলে ২৪ রান করা সাব্বিরকে ফিরিয়ে এজুটি ভাঙ্গেন টিপু সুলতান। এরপর অধিনায়ক থিসারা পেরেরা যোগ দেন লিটনের সাথে। দুজন মিলে দ্রুত বাড়াতে থাকে রান। মাত্র ২৭ বলে ৮১ রানের জুটি গড়েন দুজন। আর তাতেই ঢাকা ক্যাপিটালসের রান গিয়ে পৌছে দুইশর কাছাকাছি। রওয়েল মিয়ার বলে লিটন দাশ ফিরলে ভাঙ্গে এজুটি। ফেরার আগে ৪৮ বলে ৪টি চার এবং ৪টি ছক্কার সাহায্যে ৭০ রান করে আসেন এই ওপেনার। পরের ওভারে ফিরেন থিসারা পেরেরা। তিনি খেলেন ১৭ বলে ৩টি চার এবং সমান সংখ্যক ছক্কায় ৩৭ রানের ঝড়ো ইনিংস। আর তাতেই ঢাকার সংগ্রহ গিয়ে দাঁড়ায় ১৯৬ রানে। সিলেট স্ট্রাইকার্সের পক্ষে ২টি করে উইকেট নিয়েছেন টিপু সুলতান এবং সামিউল্লাহ সেনওয়ারি। ১৯৭ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে দ্বিতীয় ওভারেই ওপেনার জর্জ মানসেকে হারায় সিলেট। মোসাদ্দেকের করা বল মানসের ব্যাটে লেগে গড়িয়ে গড়িয়ে স্টাম্পে আঘাত হানে। আগের ম্যাচে ভাল খেণা জাকির হাসান পারলেননা এবার। মোস্তাফিজের বলে মোসাদ্দেকের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন ৮ রান করে। তৃতীয় উইকেটে রনি তালুকদার এবং অ্যারন জোন্স মিলে যোগ করেন ৮০ রান। ক্রমশ জয়েল দিকে দলকে নিয়ে যাচ্ছিলেন দুজন। থিসারা পেরেরা এসে ভাঙ্গেন এজুটি। তার প্রথম শিকার ৩২ বলে ৩৬ রান করা জোন্স। ফিরতি ক্যাচ নিয়ে জোন্সকে ফেরান পেরেরা। পরের ওভারে বল করতে এসে আরেক সেট ব্যাটার রনি তালুকদারকেও ফেরান পেরেরা। বোল্ড হয়ে ফেরার আগে ৪৪ বলে ৬৮ রান করে আসেন সিলেটের এই ওপেনার। মেরেছেন ৯টি চার। ১২৭ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর জুটি বাধেন জাকের আলি এবং অধিনায়ক আরিফুল হক। ঝড়ের গতিতে রান তুলতে থাকেন দুজন। শেষ দুই ওভারে সিলেটের দরকার ছিল ৪০ রান। মুকিদুলের করা ১৯ তম ওভারের প্রথম তিন বলে তিনটি চার মারেন জাকের আলি । চতুর্থ বলে পেরেরার হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন ১৩ বলে ২৮ রান করা জাকের আলি। শেষ বলে ছক্কা সহ সে ওভারে মুকিদুল দেন ১৭ রান। শেষ ওভারে সিলেটের দরকার পড়ে ২৩ রান। মোস্তাফিজের করা ওভারের প্রথম বলে ছক্কা মারেন সামিউল্লাহ সেনওয়ারি। দ্বিতীয় বলটি ওয়াইড। পরের বল থেকে সেনওয়ারি নেন ৪ রান। পরের বলে নেন এক রান। পরের বলে ফিরলেন আরিফুল। ১৩ বলে ২টি চার এবং ৩টি ছক্কায় ২৯ রান করেন আরিফুল। শেষ দুই বলে ১১ রান দরকার। পরের বলে রান আউট হয়ে গেলেন সেনওয়ারি। ৪ বলে ১২ রানের ঝড় তুলে আসেন এই আফগান। শেষ বলে রুয়েল মিয়ে চার মারলেও তার দল সিলেট স্ট্রাইকার্স হারে ৬ রানে। আর ঢাকা তুলে নেয় টুর্নামেন্টে দ্বিতীয় জয়। ঢাকার পক্ষে ২টি করে উইকেট নিয়েছেন মোস্তাফিজুর রহমান এবং থিসারা পেরেরা।