দ্বন্দ্ব-সংঘাতে বাড়ছে উত্তেজনা

আজাদী প্রতিবেদন | শুক্রবার , ১৫ জানুয়ারি, ২০২১ at ৭:০৭ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচন ঘিরে আইনশৃঙ্খলা কতটা নিয়ন্ত্রণে থাকবে তা নিয়ে নগরীর সাধারণ মানুষের মধ্যে দুশ্চিন্তার শেষ নেই। সরেজমিন নগরীর বিভিন্ন ওয়ার্ডে ঘুরে জানা গেছে, একাধিক ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থীদের (আ.লীগের দলীয় প্রার্থী এবং বিদ্রোহী প্রার্থী) মধ্যে দ্বন্দ্ব-উত্তেজনা বিরাজ করছে।
বেশিরভাগ ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের দলীয় কাউন্সিলর ও বিদ্রোহী কাউন্সিলর প্রার্থীদের মধ্যে তীব্র দ্বন্দ্ব রয়েছে। নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে দ্বন্দ্ব-সংঘাতে বাড়ছে উত্তেজনা। বাড়ছে নির্বাচনী উত্তাপ। তাই নির্বাচনী পরিবেশ নিয়ে শঙ্কিত সাধারণ মানুষ। নগরীর ৪১ ওয়ার্ডের মধ্যে ৩৫ টিতে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছে।
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনকে সামনে রেখে সাধারণ ভোটাররা চান একটি অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনী পরিবেশ। আর সেই লক্ষ্যে কাজ করছে নির্বাচন কমিশন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্টরা। তারপরও প্রার্থীদের অভিযোগ আচরণবিধি লঙ্ঘনের।
এব্যাপারে চসিক নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও চট্টগ্রাম আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান আজাদীকে জানান, নির্বাচনকে ঘিরে সহিংসতার যে ঘটনা ঘটছে সেই বিষয়ে আমরা কঠোর নজরদারি করছি। এধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি বন্ধে প্রতিটি ওয়ার্ডে নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে কাজ করছি। ২৮ নম্বর পাঠানটুলী ওয়ার্ডে যে ঘটনা ঘটেছে আমরা সাথে সাথে প্রশাসনকে দিয়ে সেটি পুরো নিয়ন্ত্রণে এনেছি। জনগণকে নির্বিঘ্নে ভোটদানের পরিবেশ নিশ্চিত করছি। স্থানীয় জনগণ ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার কাছ থেকে জানা গেছে, নগরীর ১ নম্বর পাহাড়তলি, ২ নম্বর জালালাবাদ, ৪ নম্বর চান্দগাঁও, ৯ নম্বর পাহাড়তলি, ১০ নম্বর কাট্টলি, ১২ নম্বর সরাইপাড়া, ১৪ নম্বর লালখানবাজার, ২৩ নম্বর পাঠানটুলি, ২৭ নম্বর উত্তর হালিশহর, ২৮ নম্বর মোগলটুলি, ৩০ নম্বর পূর্ব মাদারবাড়ি, ৩১ নম্বর আলকরণ, ৩৩ নম্বর ফিরিঙ্গীবাজার, ৩৪ নম্বর পাথরঘাটা ওয়ার্ড সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে নগর জুড়ে আলোচিত হচ্ছে। নির্বাচনে এসব ওয়ার্ডে সহিংসতা বাড়তে পারে। তাই এলাকার সাধারণ মানুষ শঙ্কিত ।
এদিকে গত মঙ্গলবার রাতে ২৮ নম্বর পাঠানটুলী ওয়ার্ডে আওয়ামীলীগ সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাহাদুর ও বিদ্রোহী প্রার্থী আব্দুল কাদেরের অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় একজন নিহত হন।
আহত হন আরো দুইজন। নিহত বাবুল স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা। এ ঘটনায় বিদ্রোহী প্রার্থী কাদেরসহ ২৫ জনকে আটক করেছে পুলিশ। পুরো এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
এছাড়া চকবাজার, বাকলিয়া, ফিরিঙ্গীবাজার, পাহাড়তলি, চান্দগাঁও আবাসিক, পুরাতন চান্দগাঁও, আগ্রাবাদ, বায়েজিদ, মোহরাসহ বিভিন্ন এলাকায় গত কয়েকদিন ধরে সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে। এসব ঘটনায় কয়েকটি মামলাও হয়। তাই নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে-নির্বাচন কমিশনে দিনদিন অভিযোগের সংখ্যাও বাড়ছে।
আগামী ২৭ জানুয়ারি চসিক নির্বাচনে ৭ জন মেয়র প্রার্থী, ৫৭ জন সংরক্ষিত ওয়ার্ডের মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থী ও ১৭২জন সাধারণ ওয়ার্ডের কাউন্সিলরসহ মোট ২৩৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।৪১টি ওয়ার্ডে ৭৩৫টি ভোটকেন্দ্রে ভোটগ্রহণ হবে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম)। চসিক নির্বাচনে এবার মোট ভোটার ১৯ লাখ ৩৮ হাজার ৭০৬ জন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসহিংসতা রুখতে পুলিশের তৎপরতা বৃদ্ধি
পরবর্তী নিবন্ধতালিকায় থাকছেন যারা