দোহাজারীতে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের অধিগ্রহণকৃত জায়গা উদ্ধার অভিযানে বাধা ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে ক্রস বর্ডার রোড নেটওয়ার্ক ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্টের ডেপুটি ম্যানেজার ও উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী তাহসিনা বিনতে ইসলাম (৪০), ইঞ্জিনিয়ার সালাহউদ্দীন (৪৫), সেইফটি অফিসার মিজানুর রহমান (৪৫) ও স্কেবেটর চালক মো. নাসির উদ্দিন (৪০) আহত হয়েছেন। গত রবিবার বিকাল ৩টার দিকে এই ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ এবং আহতদের স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা প্রদান করেছে। এই ঘটনায় রাতে প্রজেক্ট ম্যানেজার মো. জাহিদ হোসাইন বাদী হয়ে বেআইনি সমাবেশ, সরকারি কাজে বাধা, মারধর ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে দুজনের নামোল্লেখ এবং ৫০/৬০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে চন্দনাইশ থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে বলে জানিয়েছেন দোহাজারী তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ আবদুল হালিম।
জানা যায়, ক্রস বর্ডার রোড নেটওয়ার্ক ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্টের আওতায় সড়ক প্রশস্তকরণ কাজের জন্য সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম-কঙবাজার মহাসড়কের দোহাজারী পৌরসদর এলাকায় সড়কের দু’পাশে দখল করে রাখা সরকারি অধিগ্রহণকৃত জায়গা উদ্ধারে অভিযান পরিচালনা করে। এর আগে সরকারি অধিগ্রহণকৃত জায়গা ছেড়ে দেয়ার জন্য ২ সপ্তাহের সময় দেয়া হলেও স্থানীয় ব্যবসায়ীরা নিজেদের উদ্যোগে জায়গা ছেড়ে না দেয়ায় সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর গত রবিবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে উচ্ছেদে অভিযান শুরু করে। এতে ২ শতাধিক স্থাপনা উচ্ছেদ করে চার একর জায়গা উদ্ধার করা হয়, যার আনুমানিক মূল্য ২শ কোটি টাকা বলে জানিয়েছে সওজ সূত্র। অভিযানে নেতৃত্বে দেন ক্রস বর্ডার রোড নেটওয়ার্ক ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্ট এর প্রজেক্ট ম্যানেজার (পিএম) ও নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জাহেদ হোসাইন, ডেপুটি প্রজেক্ট ম্যানেজার (ডিপিএম) ও উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী তাহসিনা বিনতে ইসলাম। এসময় সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা কর্মচারী, পুলিশ ও নিরাপত্তাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু অভিযান চলাকালে বিকেল ৩টার দিকে হঠাৎ স্থানীয় দোকানের মালিকরা সমাবেশ করে লাঠিসোটা নিয়ে উচ্ছেদে বাধা প্রদান এবং বেশ কয়েকজনকে মারধর করেন। তাদের ইটপাটকেলে বেশ কয়েকজন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী আহত হন।
ডেপুটি প্রজেক্ট ম্যানেজার ও উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী তাহসিনা বিনতে ইসলাম আজাদীকে বলেন, গত ৫ অক্টোবর অফিস থেকে ভূমি অধিগ্রহণ হস্তান্তরনামা পাওয়ার পর অধিগ্রহণকৃত জায়গা থেকে স্থাপনাসহ মালামাল সরিয়ে নেয়ার জন্য ২ সপ্তাহ সময় দেয়া হয়েছিল। কিন্তু এর মধ্যে কেউ স্থাপনা ও মালামাল সরিয়ে নেননি। ফলে আমরা গত রবিবার অধিগ্রহণকৃত জায়গা উদ্ধারে অভিযান চালাই। বাকি স্থাপনাগুলো সরিয়ে নিতে আগামী বুধবার পর্যন্ত সময় দেয়া হয়েছে। অভিযানে অধিগ্রহণকৃত প্রায় ৪ একর জায়গা থেকে বহুতল ভবনসহ প্রায় ২শ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে।
এদিকে হাজারী শপিং সেন্টার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো. লোকমান হাকিম বলেন, কোনো ধরনের পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই শত শত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান উচ্ছেদে হঠাৎ অভিযান শুরু করা হয়। অথচ অনেক ব্যবসায়ী এখনো ক্ষতিপূরণ পাননি। ব্যবসায়ীরা দোকান থেকে মালামালও বের করতে পারেননি। এতে ব্যবসায়ীদের লাখ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।