দেশ হতে দেশান্তরে

ফুল ফার্নিসড এন্ড ফুললি লোডেড

সেলিম সোলায়মান | রবিবার , ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ at ৮:২০ পূর্বাহ্ণ

অবশেষে হইলো শেষ রিয়াদে আমার হোটেলবাসের কাল। সাতসকালে তাই চেকআউট করে অফিসে এসে অফিস শেষে, সন্ধ্যাতেই ক্যান্টনমেন্টসুলভ তিনস্তরের নিরাপত্তা সম্বলিত গ্রানাডা কমপাউন্ড, যেটিকে সেই প্রথম দেখাতেই মনে হয়েছিল ধূসর মরুর বুকে তুমুল মুদ্রার জোরে আর অতীব যত্নের মেহনতে গড়ে ওঠা এক সবুজ অমরাবতী, গেরেছি আস্তানা সেইখানে, কমপক্ষে আগামী দু’মাসের জন্য। অবশ্য এখানকার কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থার গ্যাঁড়াকলে পরে দুপুরেও আসতে হয়েছিল একবার। ঘটনা হচ্ছে এইবার ঢাকা থেকে রিয়াদযাত্রা করার আগে, ব্যক্তিগত জিনিষপত্রের লটবহর, মানে আমার নানান জাতের জামাকাপড়, জুতা ও রান্নাঘরের অত্যাবশ্যকীয় সরঞ্জাম, ইত্যাদি সব প্যাক করে সর্বমোট ৬টা কার্টুন পাঠিয়ে দিয়েছিলাম কুরিয়ারে। ওইসবই ঝিমোচ্ছিল এতোদিন অফিসের স্টোরে। দুপুরে অফিসের ভ্যানে করে সেগুলোকে এই কমপাউন্ডস্থ আমার ফ্লাটে পাঠিয়ে দেবার পর, আটকে গিয়েছিল সেসব এখানকার নিরাপত্তাজালে। যদিও ভ্যানড্রাইভারের কাছে আমার নামে অফিসের সাথে যে কন্ট্রাক্ট হয়েছে এই কম্পাউন্ড কর্তৃপক্ষের, তার একটা কপি ছিল এবং তা দেখিয়ে সে প্রথম দুই স্তরের নিরাপত্তা বেষ্টনী পাড়ি দিতে পারলেও, শেষ পুলসিরাত আর পার হতে পারেনি!

এখানকার নিয়মানুযায়ী এরকম অবস্থায় এক্কেবারে মালবাহী ভ্যানে করে না হলেও তার আগে বা পরে খোদ ভাড়াটিয়াকেও এসে হাজির থাকতে হয় সশরীরে। নয়তো নিদেনপক্ষে মালবাহকের সাথে থাকতে হয়, ভাড়াটিয়ার অথোরাইজেশন লেটার, ছিল না যা ভ্যানের ড্রাইভারের কাছে, ফলে তৃতীয় স্তরের নিরাপত্তা জালে আটকে গতি তার রুদ্ধ হয়ে যেতেই, বাধ্য হয়ে আমাকেই আসতে হয়েছিল ড্রাইভার সাইফকে নিয়ে।

এতে অবশ্য ভালই হয়েছিল দুই দিক দিয়ে। প্রথমত, সেই প্রথম দিনের ক্ষণিক দেখাতেই এই কমপাউন্ডটিকে রফিক আজাদের “চুনিয়া আমার আর্কেডিয়া’ না হলেও সবুজ অমরাবতির মতোই মনে হওয়ায় অবাক বনে যে ভেবেছিলাম মনে, মরুরোদে ঝলসে যাওয়া আমার বাঙ্গাল চোখ তা হলে কী মরীচিকা দেখলো নাকি? আজ দুপুরে আসার পর সে প্রশ্নের মিমাংসা হয়েছিল সন্দেহাতীতভাবে। দ্বিতীয়ত কমপাউন্ড ম্যানেজারের মুখে বার বার উচ্চারিত হতে শুনেছিলাম যে বাসাটি ফুল ফারনিসডই নয় শুধু ফুললি লোডেডও, তাই কোনরকম পূর্বপ্রস্তুতি ছাড়াই যে কোন সময়টুক করে এতে ঢুকে পড়লেই করা যাবে বসবাস এখানে নির্ঝঞ্ঝাটে; প্রশ্ন জেগেছিল তাতে, আচ্ছা ফুল ফারনিসড তো অবশ্যই বুঝি, কিন্তু ফুললি লোডেড, এ কথার মানেটা কী?

তো দুপুরে আসার পর সাইফের নেতৃত্বে ভ্যানড্রাইভার তার সঙ্গী স্টোরবয়কে নিয়ে যখন, ঐ কার্টুনগুলো আর হোটেলফেরত সুটকেস নামাচ্ছিল, সেই ফাঁকে দোতালা এই বাংলোটির আমার জন্য নির্ধারিত উপরতলার ফ্ল্যাটটি ঘুরে ফিরে দেখে বেশ চমৎকৃত হয়েছিলাম। বড় আকারের রান্নাঘর আর স্নানঘরগুলো বাদে আগাগোড়া পুরু কার্পেটমোড়া, চোখ আন্দাজ আড়াই হাজার স্কয়ার ফুটের তিন বেডরুম, বিশাল ড্রয়িং কাম ডাইনিং রুমের এই ফ্ল্যাটটির ইউরোপিয়ান স্টাইলের আসবাবপত্র, বড় আকারের টিভি, ফ্রিজ, ওয়াশিং মেশিন, ওভেন, চার রকম বার্নার সম্বলিত বড়সর স্বয়ংক্রিয় চুলা এসব দেখে যতো না চমৎকৃত হয়েছিলাম, তারচেয়ে অবাক হয়েছিলাম বেশী ফ্লাটে কাপড়চোপড় শুকানোর ড্রায়ার ও বাসন কোসন ধোয়ার মেশিন আবিস্কার করে।

হ্যাঁ আমার এই নতুন আস্তানায় কাপড় শুকানোর ড্রায়ার ও বাসনকোসন ধোয়ার মেশিনের অভাবিত উপস্থিতিতে ম্যানেজারবর্ণিত ফুললিলোডেড কথাটির মাজেজা অনুধাবন করার সাথে সাথে ভাবছিলাম, বাসন ধোয়ার মেশিনের ব্যাপারটা না হয় বুঝলাম, কিন্তু জলন্ত উনুনের মতো তপ্ত রোদের এই মরুতে ঐ ড্রায়ারের দরকারটাই বা কী? হায়! আমেরিকান জেনারেল ইলেক্ট্রিক কোম্পানির ঝানু সেলসম্যান, সেলসের কোন ট্রিক খাঁটিয়ে যে ব্রিটিশ ঐ প্রবচনের মতোই অবশেষে খোদ নিউক্যাসেলেই কয়লা পাঠিয়ে দিল, কে জানে তা?

ওহ ভাল কথা! আরো একটা ব্যাপার মনে হয়েছিল তখন, তা হলো হোমএপ্লায়েন্স নামে পরিচিত এই সমস্ত জিনিষের আমাদের দেশের বাজারে একসময় একচেটিয়া জাপানি রাজত্ব কায়েম থাকলেও, সেই রাজত্বে পরে ক্রমশ ভাগ বসিয়েছিল কোরিয়া ও থাইল্যান্ড একসময়। পরবর্তী ধাপে অতপর সেই বাজারে এখন যখন দিন দিন রাজত্ব বিস্তার করতে শুরু করেছে খোদ চায়না কিম্বা তুমুল চায়না সমর্থিত দেশী ব্র্যান্ড সেখানে সৌদির সেই বাজারতো আছে মনে হচ্ছে এখনো আমেরিকারই দখলে। এর মানে তো হচ্ছে, শুধু মিসাইল, রকেট, মেশিনগান, ট্যাঙ্ক, বোমা, বুলেট, যুদ্ধবিমান ও রাস্তায় রাস্তায় উড়ে বা ঘুরে বেড়ানো গাড়িতেই না, আমেরিকার হাত তো দেখছি প্রলম্বিত সৌদির এক্কেবারে হেঁসেল পর্যন্তই! সে যাক, দুপুরে যতোই এই আস্তানাটিকে ফুললিলোডেড এন্ড অপারেশনাল মেনে হৃষ্টমনে ফিরে গিয়ে থাকি না কেন, এবং যতোই কর্তৃপক্ষ ফ্লাটটি পুরোপুরি সার্ভিসিং করেই কাগজে কলমে আমাকে হস্তান্তর করে থাকুক না কেন, সন্ধ্যায় আসার কিছুক্ষণের মধ্যেই আকস্মিক এক ধাক্কা খেয়ে ভেঙ্গেছিল ভ্রম!

আসলে, অফিস থেকে এদিকে আসতে আসতে সাইফকে বলেছিলাম কাঁচাবাজার করতে চাই। ম্যারিয়টে এতোদিন ঘুরিয়ে ফিরিয়ে মিশরি ফালাফাল সহ আরও নানান বিস্বাদ আরবি খাবার খেয়ে আত্মা একবারে ফালফালা হয়ে গিয়েছিল। ব্যতিক্রম ছিল গত শুক্রবার দুপুর। সেদিন হোটেলের দু দুটো রেস্টুরেন্টই কোন বিরাট শেখ না জানি রাজপরিবারের কেউ পুরো বুক করে ফেলায়, হোটেল থেকে রাগ করে বেরিয়ে হোটেলের পেছনের দুটো ব্লক পেরিয়ে কপালগুনে একটা বাংলা ছাপরা জাতের হোটেল পেয়ে, তাতে ম্যারিয়টের ১৫০/১৭৫ রিয়ালের লাঞ্চের বিপরীতে আলু সহকারে রান্না করা টেংরা মাছের ঢলে ঢলে ঝোল দিয়ে যে ভাত খেয়েছিলাম মাত্র ১৬ রিয়ালে, তাতেই ভরেছিল আত্মা। অবশ্য এইবার এই মরুতে পা রেখে প্রথম রাতেই জিয়ার বাসায় ভাবীর হাতের পঞ্চব্যঞ্জনে যে খেয়েছিলাম কব্জি ডুবিয়ে এক্কাবারে গলাপর্যন্ত তাও তো বেশ দূরবর্তি স্মৃতিই। অতএব উঠছি যেহেতু ফুললি লোডেড ফ্ল্যাটে, খাবো তাই আজ নিজে রেঁধেই।

আমার হুকুম তামিল করে সাইফ তাই হাজির হয়েছিল কমপাউন্ড থেকে দুই তিন কিলোমিটার দূরের কমপাউন্ডের নামের সাথে মিল রেখে হাল আমলে গড়ে ওঠা অত্যাধুনিক বিশালাকায় শপিংমল গ্রানাডা শপিং কমপ্লেক্সে, যার নীচ তলায় পেয়েছিলাম ফ্রেঞ্চ সুপারমার্কেট কারেফু র এক সুবিশাল স্টোর। বিশাল সেই স্টোরে বেশ কিছুক্ষন এলোপাথাড়ি ঘুরপাক খেয়ে অবশেষে সেটির কাঁচাবাজার অংশ পেয়ে, তাতে মাছ,মাংশ, চিংড়ি আর টাটকা সব্জির বিশাল সমাহার দেখে, দু হাতে দ্রুত এক্কেবারে ট্রলি বোঝাই করে সে সব তুলে দাম মেটানোর লাইনে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ভাবছিলাম, আচ্ছা নিলাম কেন এতো? ঘরে তো একা আমি! এতো নেয়া কি ঠিক হলো? কিছু জিনিষ নামিয়ে রাখবো কি?

এতে মনের দ্বিতীয়জন দ্বিমত করে বলেছিল সাথে সাথেই, আরে দূর কী যে বলো না! নিয়েছো যখন সখ করে, নামাবে কেন? ঘরে তো বিশাল ফ্রিজ মজুদ, সমস্যা কী? তুমি একা হলেও কী হবে? জিয়া আর পাপ্পু ভাইয়ের পরিবার আছে না? অচিরেই তাদের দাওয়াত দিয়ে নিজহস্তে রন্ধনকৃত তোমার সব অখাদ্য খাইয়ে দিলেই তো হলো। এছাড়া হাত বাড়ালেই তো আছে আমিন ইব্রাহিম। তাকেও মাঝে মাঝেই তোমার রন্ধনপ্রতিভার প্রমান দেবে। সমস্যা কী?

হ্যাঁ অকাট্য ঐ যুক্তিসমূহ উপেক্ষা করা যায়নি। তাই ট্রলিতে তোলা সব কিছুরই দাম মিটিয়ে বাসায় ফেরার পর, সাইফের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় ওগুলোকে ফ্রিজে রাখতে গিয়ে যখন আবিস্কার করলাম যে কাজ করছে না ওটা, তাতে এক্কবারে পড়েছিল মাথায় বাড়ি! অথচ এ তো হওয়ার কথা ছিল না। এরা তো সব সার্ভিসিং করে দিয়েছে বলেছিল!

আমার ঐ হতভম্ব অবস্থায় মৃদুভাষী সাইফের পরামর্শ কানে যেতেই কমপাউন্ডের মেইনটেন্সে ফোন করে সমস্যা জানাতেই, ভারতীয় নাকি শ্রীলংকান টোনের হোঁচট খাওয়া ইংরেজিতে তাৎক্ষনিক উত্তর এসেছিল “অসম্ভব, এ হতেই পারে না!”

মেজাজ খিঁচড়ানো সেই উত্তরের উত্তরে বলেছিলাম জোর দিয়ে, দেখে যাও তোমরা তবে এখন সরেজমিনে? তাতে আমতা আমতা করে বারবার সরি বলতে বলতে বলেছিল, ফ্রিজ ঠিক করার লোক তো নাই এখন। তবে সকালে অতিঅবশ্যই ফ্রিজ ঠিক করে দেবে ওরা!

আরে বলে কী ব্যাটা! এই মাছ, মাংশ আর সাধের ভোমা ভোমা সাইজের টাটকা চিংড়িগুলো কি রাতভর বাইরে ফেলে রাখবো নাকি? এ কথা ভাবতে ভাবতে আমার আগে এখানে আস্তানা গাঁড়া আমিন ইব্রাহিমের কথা মনে পড়তেই, ফোনে তাকে সাক্ষাৎ এই সমস্যার সংক্ষিপ্ত বিবরণ দিয়ে আজ রাতে তার ফ্রিজে আমার বাজার রাখা যাবে কি না জিজ্ঞেস করতেই, হো হো করে হাসিতে উত্তর এসেছিল

আরে বল কী? রান্নাও করতে জানো নাকি তুমি? কিন্তু কথা হচ্ছে রান্না জানলেই কি, প্রথমদিন বাড়িতে উঠেই রান্নাঘরে ঢুকতে হবে নাকি? আচ্ছা পাগল তো তুমি!’

এমত উপক্রমনিকা শেষে আমিন অতপর আশ্বস্ত করেছিল যে, তার ফ্রিজ একদম খালি। আমার বাজার রাখায় কোনই সমস্যা নাই। কিন্তু কথা হচ্ছে সে মুহূর্তে তো তা সম্ভব নয়। কারণ আছে সে বেশ দূরে, কোন এক ডিনার আড্ডায়। ফিরতে অনেক রাত হবে। তবে যতোই রাত হউক ফিরেই ফোন করবে সে আমায়।

ফোনে ফোনে বিনা মেঘে বজ্রাঘাতের মতো হাজির হওয়া এই ফ্রিজ সমস্যার সমাধান এভাবে হয়ে যেতেই, হৃষ্টচিত্তে রান্নাঘরে সাইফকে সে খবর দিতে গিয়ে দেখি সযত্নে সে ঢোকাচ্ছে সব ঐ ফ্রিজেই!

নষ্ট ফ্রিজে ওসব ঢোকানোর মতো বোকামি করতে দেখে যেই না মুখ খুলতে যাচ্ছিলাম, ঠিক তখনই মুখ ঘুরিয়ে হাসিমুখে জানিয়েছিল সাইফ যে, ফ্রিজটা সে ঠিক করে ফেলেছে! না, ফ্রিজ আসলে ঠিকই আছে। সমস্যা ছিল মূলত ঐটির পাওয়ার পয়েন্টে। টুকটাক ইলেকট্রিক কাজ জানে বলে, সাইফ এক ফাঁকে গাড়ি থেকে তার যন্ত্রপাতি এনে ফ্রিজ সরিয়ে ওটা পরীক্ষা করে রোগ ধরে ফেলতে পারায়, সেই পাওয়ার পয়েন্ট ঠিক করাতে ফ্রিজ চলতে শুরু করেছে।

সাইফের এই কথা শুনে, চলে গিয়েছিল মন তৎক্ষণাৎ সেই আফগানিস্তানে, বসবাস যেখানে আমাদের সাহিত্যের মশহুর দিকপাল সৈয়দ সাহেবের আব্দুর রহমানের । আফগান রহমানের মতো সুদানি সাইফও জুতা সেলাই থেকে চণ্ডীপাঠ পর্যন্ত সবই করতে পারে কি না জানি না, এখনো! তবে ড্রাইভার হওয়ার পরও সে যে ইলেক্টিশিয়ানের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে আপাত মুশকিলের আসান করলো তাতে মনে মনে বড়ই প্রীত হয়ে নিজেই খুলতে লেগে গেছি যখন রান্নাঘরের সরঞ্জামাদি সম্বলিত কার্টুনটি, মিন মিন করে বলল সাইফ, “ওটা রাখেন তো স্যার। ওটারও সব বের করে সাজিয়ে গুছিয়ে দিয়েই বাড়ি যাবো আমি। আপনি জামা কাপড় ছেড়ে একটু রেস্ট নেন।”

শুনে বলেছিলাম, তা ঠিক আছে। তুমিই সব সাজিয়ে গুছিয়ে দিও। আপাতত এর ভেতর থেকে একটু পর যে রান্না করবো, তার জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম গুলো বের করি নেই। কারণ ঐ বস্তু যে কোনগুলো, তা তো তুমি জানো না। এই বলে কার্টুনের পেটে দ্রুত হাত ঘুটে তা থেকে ডাল ঘুটুনি, এলুমিনিয়ামের ছোট একটা সসপ্যান, দস্তার কড়াই, আস্ত শুকনো মরিচের প্যাকেট ও হ্লুদের গুড়ার প্যাকেট বের করে নিয়েছিলাম দ্রুত।

লেখক : প্রাবন্ধিক, ভ্রমণসাহিত্যিক।

পূর্ববর্তী নিবন্ধযাযাবর এস্কিমো
পরবর্তী নিবন্ধসমকালের দর্পণ