বেশ আগ্রহ ও নিখাদ আন্তরিকতার মিশেলে ডাক্তার সাহেবকে করা আমার প্রশ্নের কোন উত্তর সাথে সাথেই না দিয়ে, আপাদমস্তক আমাকে জরীপ করে উনি অতীব সংক্ষেপে বললেন : “হুম”। বুঝলাম আমার আন্তরিক আগ্রহটি ওনার কাছে এই আদমের নিতান্তই গায়ে পড়া স্বভাব বলেই ঠেকেছে! এতে অবশ্যই তাকে দোষ দেয়া যায় না। কারণ প্রকৃতিপ্রদত্ত আমার ভুতো চেহারা জন্য নাহলেও, অধমের পরিধেয় পরিচ্ছদের বদৌলতে হলেও, যতোই এই বিমানের একই পঙক্তিতে বসি না কেন আমি তার সাথে, অবশ্যই সুটকোট পরা ডাক্তার সাহেবের কাছে, আমাকে তার পঙক্তির মানুষ হিসেবে মানতে কষ্ট হওয়াটাই স্বাভাবিক।
কিছুটা অপ্রস্তুত হয়ে তাই ওনাকে ফের ধন্যবাদ দিয়ে, নিজ সিটের দিকে ফিরতে ফিরতে বিমানের নানান সিটে বসে থাকা নানান জনের পোশাকের দিকে প্রথম বারের মতো চোখ বোলাতেই, হৃদয়ঙ্গম করলাম, যতোই পুরোপুরি সর্বহারা শ্রেণির হোক না কেন এই বিমানের সিট গুলো , তাতে যারা বসেছেন তাদের অনেকেই নিজেকে সর্বহারা মনে করেন না। বেশ কিছু যাত্রী আছেন যারা ঐ ডাক্তার সাহেবের মতোই সুট কোট পরে আছেন। এবং তারাই বেশ মুখ গম্ভীর করে বসে আছেন সিটে।
বিশেষত তারা, বসেছেন যারা আমার মতো কোন আদমসূরত পাশে, চেহারায় তাদের পরিষ্কার ছাপ কোষ্ঠ কাঠিন্যের। পরিধেয় পোশাক আশাক ও তাদের নির্বাক দেহভঙ্গিতে পরিষ্কার এটা যে, তেলের দেশের তেলের ছিটেফোঁটা হলেও ভাগ তার পান। একই সাথে বিমান যাত্রীদের তুমুল সংখ্যাগরিষ্ঠের চেহারায় সুরতে ও আদতে এও ফকফকা পরিষ্কার যে, ঐ তেলের দেশ তাদের মাথায় তেল তো ধলাছেই না বরং তাদের শরীরের তেলই নিংড়ে নিচ্ছে প্রতিনিয়ত।
“বাইচ্চাটার কি হইছিল ছার? এখন কেমন আছে বাইচ্চাটা?”
সিটে ফিরে এসে বসতেই করলো প্রশ্ন পাশের সিট। কি যে হইছিল তা তো জানি না। তবে মনে হয়ে বেহুশ হইয়া গেছিল গরমে। এখন ভাল আছে। উত্তরে এসব বলে সিটে থিতু হতে নে হতেই–পেছন দিক থেকে নতুন করে নানান জনের নানান রকম বিরক্তি আর হতাশা সূচক গুঞ্জরন কানে আসতেই, সাথে সাথে পাশের সিট থেকে তুমুল উদ্বেগ ঝরে পড়লো– “দেখেন তো ছার, আবার কিছু হইল নাকি বাইচ্চাটার।”
তড়াক করে সিট ছেড়ে উঠে, ঘাড় ঘুরিয়ে পেছনে তাকাতেই প্রমাণিত হল ফের হাতে হাতে যে, এ জীবনে আসলেই অবিমিশ্র আনন্দ বা বেদনার অস্তিত্ব নেই। ফলে কিছুটা আত্মতৃপ্তির ঘাড়ে চেপে অনেকটা বিরক্তিও এসে ঝাপটে ধরলো এ অধমকে আত্মতৃপ্তির কারণ হলো, ঐ যে বিমানখালাদের নেত্রী কথা দিয়েছিলেন অচিরেই খাওয়া দেওয়ার ব্যবস্থা করতে যাচ্ছেন উনি; এ মুহূর্তে বিমানের একদম লেজের দিকে দুই খালার একজনকে ট্রে ভর্তি ছোট সাইজের বন্রুটি, আর আরেকজনকে ট্রে বোঝাই মুখবন্ধ প্লাস্টিক গ্লাস ভরা পানি নিয়ে এগুতে দেখে বুঝলাম কথা রেখেছেন উনি।
তবে সমস্যা হলো, খাবার দেবার নামে এক লোকমা ভাতের চেয়েও ছোট আকারের রুটি কাউকে সাধতে দেখলে, যে কোন ক্ষুধার্ত লোকেরই তো মেজাজ তিরিক্ষি হয়ে যাওয়ার কথা। ফলে হয়েছেও তাই। আগেই তো বলেছি, এই বিমানে এমন অনেকেই আছেন, যাচ্ছেন যারা প্রথমবারের মতো সৌদিতে। তাদের অনেকেই সেই সকাল সাতটা আটটার দিকে হাজিরা দিয়েছিলেন ঢাকা এয়ারপোর্টে আদম ব্যাপারিদের কথায়। সেইসব যাত্রীরা ধরেই নিয়েছিলেন যে, এয়ারপোর্টে গিয়েই তার উঠে যাবেন প্লেনে সুড়ুত করে! আর প্লেনে উঠতে পারলেইতো পাওয়া যাবে সাথেসাথেই এক্কেবারে খাস সৌদি রাজকীয় খানা। এখন তার বদলে ট্রে ভর্তি এই পিচ্চি বন রুটি দেখে, বড়ই হট্টগোল শুরু করেছেন বিশেষত তারাই।
এদিকে ককপিটে পাইলটের কাছে যেতে উদ্যত আমার দাবী ঠেকানোর জন্য, নেত্রী বিমানখালা যখন আমাকে এই বলে আশ্বস্ত করেছিলেন যে, অচিরেই ব্যবস্থা তিনি খাবারের, আমিও ধরে নিয়েছিলাম দেবেন তারা অবশ্যই দুপুরের জন্য এয়রালাইন্স কর্তৃক বরাদ্দকৃত লাঞ্চপ্যাকেট। কিন্তু তা তো দেখছি হয়নি!
মনে মনে ত্যক্তবিরক্ত হয়ে ঠিক করলাম, পাইলটের কাছে যখন আর যেতে পারলাম না, রিয়াদ এয়ারপোর্টে নেমেই প্রথম খোঁজ করবো সাউদিয়ার অফিস। আর অফিস পেলেই এইসব অব্যবস্থাপনা, বিশেষত আমাদের মতো বাঙ্গালী যাত্রীদের প্রতি কেবিন ক্রুদের তুমুল অবজ্ঞার ব্যাপারে কঠিন একটা নালিশ দেব ঠুকে । যদিও জানতাম না তখনও , সামনে কতো যে আরো দুর্ভোগ আছে এই কপালে!
এভাবে নানান জনের নানান বাদ প্রতিবাদের মধ্যে মিলাদের তবুরকের মতো যখন বিতরিত হচ্ছিল বন্রুটি, তখনই বিমানের শব্দ প্রক্ষেপণ যন্ত্রসমূহ মানে সাউনড বক্সগুলো জীবন্ত হয়ে উঠতেই কানে গেল ককপিট থেকে আসা, পাইলট সাহেবের আরবি টানের ইংরেজি আশার বানী। বুঝলাম মধ্য ফাল্গুনের ঠা ঠা রোদ্দুরে ঢাকা এয়ারপোটের্র রানওয়েতে ঠায় দাঁড়িয়ে অনন্ত অপেক্ষার অবসান ঘটতে যাচ্ছে অচিরেই।
হ্যাঁ, হয়েছিলও তাই। বিমানের নাক ঘুরিয়ে পাইলট সাহেব অচিরেই হাজির হতে পেরেছিলেন অতপর ঢাকা এয়ারপোর্টের কোন একটা বোর্ডিং ব্রিজে। ওখানে পৌছুবার পর, বিমান প্রকৌশলীদের মাজেজায় বিমান উড্ডয়নক্ষম হতে লেগেছিল আরো ঘণ্টা দেড়েকেরও বেশি। কপাল ভাল যে, বিমান আকাশে উড়ার পর, আর কোন ভজঘট হয়নি। হয়েছে সবই নিয়মমাফিক। অতএব ছয় ঘণ্টার চেয়ে সামান্য কিছু বেশী সময় আকাশে উড়ে, এই মিনিট ২০/২৫ আগে যখন মরুর বুকের রিয়াদের বন্দরে এসে ভিড়েছিল প্লেন, তাতে এর পেটভর্তি যাত্রীদের মধ্যে দ্রুত বিমান থেকে নিষ্ক্রান্ত হবার জন্য বেজায় হুটোপুটি লেগে যেতেই, ভর করেছিল তা প্রথমবারের মতো বিমানে উড়ে এসে এই মরুতে হাজির হওয়া আমার সহসিটযাত্রীদের ঘাড়েও। ফলে তাদেরকে গেইটের দিকে এগুনোর সুযোগ করে দিয়ে, নিজে চুপচাপ সিটে বসে মনে মনে ভাবছিলাম এতক্ষণ, গত দশ এগার ঘণ্টায় ঘটেছিল যা যা প্লেনের ভিতর।
কী ব্যাপার? এনারা কারা? গত দশ এগার ঘণ্টায় এনাদের মতো কাউকে তো প্লেনের ভেতরে চোখে পড়েছে বলে তো মনে পড়ছে না? হ্যাঁ এইমাত্রই আইল ধরে দুই দুইটি কালো মূর্তিকে আমার পাশ দিয়ে বিমান থেকে বেরুবার জন্য অগ্রসর হতে দেখে কিছুটা ধন্দেই পড়ে গিয়েছিলাম। তবে সাথেসাথেই ঐ কালো মূর্তিদ্বয়ের পেছনের কিশোর, আর তারও পেছনে লাইন ধরে এগুতে থাকা স্যুটেড বুটেড ডাক্তার সাহেবের গম্ভীর মুখ দেখে, পরিষ্কার হল দৃশ্যটির অনুবাদ।
মনে পড়লো, মরুর বালির রঙ্গ বাদে, সৌদিতে আর যে দুটো রঙয়ের আছে বাড়াবাড়ি রকমের উপস্থিতি, সে দুটো হল সাদা ও কালো। এর মধ্যে সাদা বরাদ্দ হয়েছে পুরুষদের জন্য আর কালো মহিলাদের। ইউরোপ আম্রিকার বিপণনবিদরা তাদের পণ্য বিক্রি বাড়ানোর কৌশল হিসেবে, বাচ্চা ছেলেদের জন্য নীল আর মেয়ে বাচ্চাদের গোলাপি বরাদ্দ করে , রঙের যে লিঙ্গ নির্ধারণ করেছিল সম্ভবত শিল্প বিপ্লবের পর, ধারণা করি তারও বহু আগে থেকেই এই মরুর মানুষেরা রঙের লিঙ্গ ঠিক করেছিল। এখানে সাদা মানে পুরুষ, কালো মানে নারী!
ঢাকা থেকে প্লেনে উঠার সময় ডাক্তার সাহেবের কিশোরী কন্যা জিন্স আর টপস, এবং ওনার স্ত্রী হাল ফ্যাশনের সালোয়ার কামিজ পরা থাকলেও, রিয়াদ এয়ারপোর্টে প্লেন নামার পর, সিটে বসেই সম্ভবত এরই মধ্যে কোন একসময় দুজনেই গায়ে চড়িয়ে নিয়েছিলেন খাস সৌদি বোরকা। তাতে এমুহূর্তে দুজনের দু চোখ ছাড়া, কিছুই দৃশ্যমান নয়। এই দুইজনের মধ্যে কে যে মা, আর কে যে মেয়ে? তা বোজা ভার। অবশ্য আমার তা বোজারই বা দরকার কী? যার দরকার তা সে মানে ঐ ডাক্তার সাহেব বুঝলেই হল।
এই ভেবে তাকালাম আইলের লাইনটির লেজে দাঁড়ানো ডাক্তার সাহেবের দিকে। ভাবলাম জানাই তাকে বিদায়। কিন্তু নাহ, তার চোখে চোখে চোখ ফেলতে ব্যর্থ হলাম। ওনার চোখ দেখি তাকিয়ে আছে সুদূরের দিকে। অবশ্য এখানকার সুদূর শেষ হয়েছে বিমানের লেজেই! কে জানে? কী গুরুত্বপূর্ণ বস্তু খুঁজছে তার চোখ? তবে দেহভাষায় তার বোজা যাচ্ছে পরিষ্কার, আমার মতো সূরত আর পোশাকের আদমের সাথে, চলতি পথে উনি কোন বাইক্কা সম্পর্ক তৈরি করতে চাচ্ছেন না। রাজী নন তিনি কোন খাজুইরা আলাপে!
কিঞ্চিৎ বিব্রত হয়ে, ভাবলাম দিয়েছিলাম যেই নিদান ঐ বিমানখালাদের, দেব নাকি সেটা ইনাকেও। মানে নেব নাকি শরণ আমাদের সেই কলোনিয়াল প্রভুদের ভাষার? এই অধম আদমের মুখ থেকে এক্ষুনি যদি গড় গড় করে বেরুতে শুরু করে চোস্ত বাংলিশ, উনিও নির্ঘাত উঠবেন নড়েচড়ে ।
নাহ, থাক! কি দরকার আর? এমনিতেই এমনকি প্রয়োজনের মুহূর্তেও, দৈনন্দিন জীবনে কারো কাছে আগ বাড়িয়ে নিজেকে গুরুত্বপূর্ণ করে তোলার ব্যাপারে এক্কেবারেই ক্যাবলাকান্ত আমি। এছাড়া আছি তো এখন চলতি পথে। অবশ্য এখনতো নিজে কোন সুবিধা পাওয়ার জন্য ওনার সাথে ভাব জমাতে চাইছিলাম না। বরং নিজ পেশাগত দায়িত্ব যে ডাক্তার সাহেব ভালই পালন করেছেন অসুস্থ বাচ্চাটির জন্য, সেজন্যই তো ওনাকে ধন্যবাদ দিতে চাইছিলাম ফের। থাক নিজ সামাজিক অবস্থানের ব্যাপারে প্রখরভাবে সচেতন এই ডাক্তার সাহেবেকে আমার মতো আদমের ঐরকম বাইক্কা ধন্যবাদ দেবার কোন দরকারই নেই। অতপর ডাক্তার সাহেব পরিবারের পিছু পিছু গেটের দিকে এগিয়ে যাবার বেশ কিছুক্ষণ পর, প্লেন যখন একদম খালি হয়ে গেছে, শেষযাত্রী হিসেবে নিজে গেটের দিকে এগুতেই, গেইটের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা বিমানখালার সাথে দেখা হতেই, আমার রিয়াদ বাস যেন হয় অতীব আনন্দের এইরকম শুভকামনা জানিয়ে হেসে তিনি শুভরাত্রি জানাতেই, হাসিমুখে তাকেও প্রতিধন্যবাদ জানিয়ে বিমানের পেট থেকে বেরিয়ে দ্রুত চালালাম পা, প্রায় শূন্য এই বোর্ডিং ব্রিজ ধরে।
“কি ছার, এতো দেরী করলেন যে ? আমরা তো আফনের জন্য খাড়াইয়া আছি হেই তখন থেইক্কা!”
বিদেশ বিভুইয়ে বিশেষত এই মরুতে প্রথম এসে, বালির উপর দণ্ডায়মান রিয়াদ এয়ারপোর্টের এই দালানের মেঝেতে পা দিতেই, একদম খাঁটি দেশী ভাষার এই আন্তরিক কথাগুলো কান দিয়ে দ্রুত তা এক্কেবারে মরমে পশিয়া গেল। খানিক আগে ডাক্তার সাহেবের ডাক্তারির কারণে মনে যে গুমোট ভাব হয়েছিল, লাগলো তাতে বাংলার দখিনা হাওয়ার পরশ।
ঘাড় ঘোরাতেই দেখি কেবিন ব্যাগ হিসেবে সাথে নেয়া, চেইন নষ্ট হয়ে যাওয়ার কারনে, পাটের দড়ি তো নয়, নাইলনের দড়ি কষে দিয়ে বাঁধা ব্যাগটা পিঠের উপর রেখে কুঁজো হয়ে হাসি মুখে দাঁড়িয়ে আছেন সিটসহযাত্রী। তারই পেছনে আছেন মুখচোরা স্বভাবের দ্বিতীয়জনও। ওনার ব্যাগটা অবশ্য চকচকে নতুনই ।
হাসতে হসাতে বললাম, তাই নাকি? তাই নাকি? তা কেন? কেন দাঁড়িয়ে আছেন আমার জন্য? চলেন চলেন, যাই এখন ইমিগ্রেশনের দিকে। “পথমবার আসছি তো ছার। জানি না কেমনে কোন দিক দিয়া যাই। তয় বাইরে কফিলের লোক থাকবো। বাইর অইতে পারলে আর সমিস্যা নাই।”
ভাবলাম জানাই, অবস্থা আমারও তো তথৈবচ। আমিও তো আসছি প্রথম, এইখানে। আবার ভাবলাম, না থাক। কী দরকার তাদের আশার গুড়ে বালি দেবার? যেকোন কারণেই তারা যেহেতু আস্থা রেখেছে অধমের উপর, থাকুক না তা।
এরই মধ্যে চারদিকের দেয়াল খুঁজে ইমিগ্রেশনমুখী সাইনটি চোখে পড়তেই, আসেন আসেন বলে ঐদিকে রওয়ানা করতেই পড়লাম বেশ একটা ভিড়ের পেছনে। কারণ সামনের আরেকটি বোর্ডিং ব্রিজ থেকে সুরসুর করে বেরুচ্ছেন অনেক যাত্রী।
নাহ, বড়ই হতাশ হলাম। টের পেয়েছিলাম ব্যাপারটা বোর্ডিং ব্রিজেই । তবে যাকে বলে চক্ষুকর্ণের বিবাদ ভঞ্জন হওয়া, হলো তা পুরোপুরি এই এয়ারপোর্টে পা রেখে।
নিতান্তই অনুজ্জ্বল, ছোট আর পুরানো দিনের এই দালানে নেই তেলের উপর ভাসমান সৌদির তেল তেলে ভাবের ছিটেফোটাও। বরং আমাদের মতো দরিদ্র দেশের এয়ার পোর্টের চেয়েও মনে হচ্ছে মলিন এর ভাব।
লেখক : প্রাবন্ধিক, ভ্রমণ সাহিত্যিক