দেশে ছুটিতে যাওয়ার সব প্ল্যান প্রোগ্রাম ফাইনাল করাই ছিলো। শুক্রবার রাত ২টা ৪৫ মিনিটের ফ্লাইটে ওমান থেকে ছুটিতে দেশে আসার জন্য বিমানের টিকিটও কাটা হয়েছিলো ওমান প্রবাসী রেমিট্যান্স যোদ্ধা ফরিদের।
কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস, দেশে এসে পরিবার নিয়ে বাকি রমজান শেষ করে পবিত্র ঈদুল ফিতর পালন করা হলো না ফরিদের।
দেশে ফেরার মাত্র একদিন আগে হঠাৎ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন হাটহাজারীর ওমান প্রবাসী রেমিট্যান্স যোদ্ধা ফরিদ।
রবিবার (১৭ মার্চ) দুপুরের দিকে নিহত ওমান প্রবাসী ফরিদের পাশের রুমের প্রত্যক্ষদর্শী মামুন ফরিদের মৃত্যুর বিষয়টি দৈনিক আজাদীকে নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার ওমান সময় রাত সাড়ে দশটার দিকে নিজ শয়নকক্ষে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন তিনি। ওমান প্রবাসী নিহত ফরিদ চট্টগ্রাম জেলার হাটহাজারী পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডস্থ ওসমান আলী জমিদার বাড়ির মেহেরুজ্জামানের পুত্র।
নিহতের পাশের রুমের ওমান প্রবাসী মামুন মুঠোফোনে দৈনিক আজাদীকে জানান, প্রায় ১৪ বছর পূর্বে জীবিকার তাগিদে ফরিদ ওমানে আসেন। ওমানের নিজুয়া শহরের সানাইয়া এলাকায় একটি গাড়ির গ্যারেজে ডেন্টিংয়ের কাজ করতেন তিনি।
শুক্রবার রাত আড়াইটার একটি ফ্লাইট যোগে ছুটিতে দেশের বাড়িতে যাবার কথা ছিলো তার। ঘটনার দিন একসাথে ইফতার করি আমরা। পরে রাতে তারাবি নামাজ আদায় করে বাড়িতে আসবে বলে কিছু কেনাকাটা করতে বের হন তিনি।
কেনাকাটা সেরে বাসায় ফিরে পোশাক পরিবর্তন করার সময় শার্ট খুলে প্যান্ট পরিবর্তন করার মুহুর্তে হঠাৎ পড়ে যান ফরিদ।
এসময় তার শব্দে রুমে ঘুমিয়ে থাকা অপর দুই রুম মেটের ঘুম ভেঙে গেলে তারা ফরিদের এমন অবস্থা দেখে পাশের রুমের লোকজনকে ডাকেন। তারা রুমে এসে ফরিদকে ধরে বিছানায় শুইয়ে দেন।
এর পাঁচ মিনিটের মধ্যে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। পরে খবর পেয়ে তার ওমানি (নিয়োগ কর্তা) কফিল এসে ফরিদকে নিকটস্থ হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
বর্তমানে নিহতের মরদেহ ওমানের নিজুয়া শহরস্থ একটি হাসপাতালের হিম ঘরে রাখা হয়েছে।
মরহুমের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, প্রয়োজনীয় সকল প্রক্রিয়া শেষ হলে আগামী কয়েকদিনের মধ্যে নিহতের মরদেহ দেশে আনা সম্ভব হবে।
পৌরসভার সহায়ক কমিটির সদস্য মোহাম্মদ জাফর ওমান প্রবাসী ফরিদের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে দৈনিক আজাদী কে রবিবার বিকালের দিকে জানান, আনুমানিক গত দুই বছর দুই মাস পূর্বে তিনি দেশে ছুটি কাটিয়ে পুনরায় নিজ কর্মস্থল ওমানে ফিরে যান। মরহুম ফরিদের সিমরান নামের ১৩ বছর বয়সী একটি কন্যা সন্তান এবং সাইম নামের ১০ বছর বয়সী একটি পুত্র সন্তান রয়েছে।
এদিকে দুই সন্তানের জনক ফরিদের এমন মর্মান্তিক মৃত্যুর খবর তার গ্রামের বাড়িতে এসে পৌঁছলে স্বজনদের আহাজারিতে এক হৃদয় বিদারক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।