জাতীয় ক্রিকেট লিগে আড়াই দিনেই শেষ হয়ে গেছে খুলনা–ঢাকার ম্যাচটা। এরপর শেখ পারভেজ জীবন ও এনামুল হক বিজয় কাঁধে তুলে নেন ইমরুল কায়েসকে। ১৭ বছরের প্রথম শ্রেণির ক্যারিয়ারকে বিদায় বলার ঘোষণা দিয়েছিলেন তিনি আগেই। ঢাকার বিপক্ষে জাতীয় লিগে খুলনার ম্যাচটিই তার শেষ। আগের দুই দিনে দুবার গার্ড অব অনার পাওয়া ইমরুলের জন্য শেষদিনে থাকলো বিসিবির আয়োজন। তাকে দেওয়া হয় ক্রেস্টও। ১৭ বছর ও ১৩৪ ম্যাচের প্রথম শ্রেণির ক্যারিয়ার ইমরুলের। ২০ সেঞ্চুরিতে ৭৯৩০ রান করেছেন তিনি। খুলনার হয়ে প্রথম শ্রেণির ক্যারিয়ারের ইতি টানলেও রঙিন পোশাকে ক্রিকেট চালিয়ে যাবেন ইমরুল। সাদা পোশাকের ক্যারিয়ারটাও এত লম্বা হবে, ভাবেননি তিনি। মিরপুরে বিদায়ী সংবাদ সম্মেলনে ইমরুল বলেন, ‘২০০৬ সালে যখন আমার প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে অভিষেক হয়, আমি চিন্তা করিনি যে বাংলাদেশ দলের হয়ে এতগুলো টেস্ট খেলতে পারব। আর সব শেষে এখন যেভাবে বিদায় নিলাম, আমি খুব খুশি যে বাংলাদেশের হয়ে ৩৯টি টেস্ট ম্যাচ খেলতে পেরেছি। এটা আমার জন্য অনেক বড় প্রাপ্তি।’ ‘কারণ এক টেস্ট হোক পঞ্চাশ টেস্ট বা একশ টেস্ট খেলেন, বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করাই বড়। প্রায় ১০–১২ বছর দলের সঙ্গে থেকেছি, খেলেছি বিভিন্ন জায়গায়, বিভিন্ন দেশে। এটা আমার জন্য অনেক গর্বের ছিল। আমি চেষ্টা করেছি ব্যাটিং করে হোক বা কিপিং করে হোক, দলের প্রয়োজনে অবদান রাখতে। আমার হয়তো আরও ভালো টেস্ট ক্যারিয়ার হতে পারত। তবে যেটা হয়নি সেটা নিয়ে এখন আর আফসোস মনে করি না। যা হয়েছে আলহামদুলিল্লাহ্। ’ দীর্ঘ সময় বাংলাদেশের ক্রিকেটে পরিচিত মুখ হিসেবে আছেন ইমরুল। রঙিন পোশাকে খেললেও ক্যারিয়ারের অন্তিমে তিনি পৌঁছে গেছেন অবধারিতভাবেই। তার ভবিষ্যৎ তৈরি হচ্ছে অস্ট্রেলিয়ায়, ওখানেই ক্রিকেটের সঙ্গে জড়িয়ে থাকতে চান ইমরুল।
তিনি বলেন, ‘ক্রিকেট ক্যারিয়ার শেষ হওয়ার পর আসলে… এখন তো সবকিছু উন্মুক্ত। আমি বেশিরভাগ সময়ই অস্ট্রেলিয়ায় থাকি। সেখানেই আমার থাকতে হবে। কারণ আমার পরিবার সেখানে থাকে। ওখানেও অস্ট্রেলিয়ার একটা দলের হয়ে প্রিমিয়ার ডিভিশন খেলছি আমি। ওখানে একটা কোচিং একাডেমি দেওয়ার পরিকল্পনা আছে। এরই মধ্যে কথাবার্তা চলছে, কাজ করছি। আশা করছি, আগামী বছরের দিকে এটা আমরা শুরু করব।’ ‘আমি চাই ক্রিকেট ছাড়ার পর ক্রিকেটের সঙ্গেই থাকতে এবং ক্রিকেটের আরও উন্নত জ্ঞান পেতে। সবাই জানেন, অস্ট্রেলিয়ায় ক্রিকেটের সবকিছু আধুনিক। সেখান থেকেই আধুনিক সব বিশ্লেষণ হয়। আমি চেষ্টা করব, সেখানে বড় বড় পর্যায়ে কাজ করতে। সেখানে কোচদের সঙ্গে অভিজ্ঞতা নেওয়া। ভবিষ্যতে যদি কখনও বাংলাদেশ দলের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ হয়, আমি নিজেকে অনেক সৌভাগ্যবান মনে করব।’