দেশের নয় জেলায় বজ্রপাতে ১৫ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এ সময় আহত হয়েছেন আরও কয়েকজন। গতকাল সোমবার বিভিন্ন সময় বজ্রপাতে কুমিল্লায় ৪ জন, কিশোরগঞ্জে ৪ জন এবং হবিগঞ্জের বানিয়াচং, সুনামগঞ্জের শাল্লা, নেত্রকোণা, শরীয়তপুর, মাদারীপুর, যশোর (বেনাপোল) ও ঝালকাঠিতে একজন করে মারা গেছে।
কুমিল্লা : কুমিল্লার মুরাদনগর ও বরুড়া উপজেলায় বজ্রপাতে ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে; এ সময় আহত হয়েছে আরও একজন। সোমবার দুপুরে মুরাদনগরের কোরবানপুর গ্রামে দুজন কৃষক এবং বরুড়ার খোশবাস ইউনিয়নের পয়ালগচ্ছ গ্রামে দুই শিক্ষার্থী নিহত হয়েছে।
নিহতরা হলেন, বরুড়ার পয়ালগচ্ছ গ্রামের মৃত খোকন মিয়ার ছেলে ফাহাদ হোসেন (১৩) এবং বিলাল হোসেন ছেলে মোহাম্মদ জিহাদ (১৪), মুরাদনগরের কোরবানপুর গ্রামের জসীম উদ্দীনের ছেলে কৃষক জুয়েল ভূঁইয়া (৩৫) এবং মৃত বীরচরণ দেবনাথের ছেলে নিখিল দেবনাথ (৬০)। এর মধ্যে ফাহাদ ও জিহাদ বড়হরিপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র ছিল। আহত অবস্থায় পয়ালগচ্ছ গ্রামের সায়মন (৭) নামে এক শিশুকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। খবর বিডিনিউজের।
কিশোরগঞ্জ : কশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম ও মিঠামইন উপজেলায় বজ্রপাতে ৪ জনের মৃত্যু হয়ছে। নিহতরা হলেন অষ্টগ্রাম উপজেলার কলমা ইউনিয়নের হালালপুর গ্রামের কৃষক ইন্দ্রজিৎ দাস (৩০), আব্দুল্লাহপুর–খয়েরপুর ইউনিয়নের খয়েরপুর গ্রামের স্বাধীন মিয়া (১৪), মিঠামইন উপজেলার কেওয়ারজোড় ইউনিয়নের রানীগঞ্জ গ্রামের মৃত আশ্রব আলীর স্ত্রী ফুলেছা বেগম (৬৫) এবং কটিয়াদী উপজেলার ধনকিপাড়া গ্রামের আবু মিয়ার ছেলে মো. শাহজাহান (৩৮)।
হবিগঞ্জ : হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলার হাওরে বজ্রপাতে ধান কাটা শ্রমিক নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছেন আরও তিনজন। সকালে উপজেলার আড়িয়ামুগুর গ্রামের পূবের হাওরে ধান সময় বজ্রপাতে এই হতাহতের ঘটনা ঘটে বলে জানান বানিয়াচং থানার ওসি গোলাম মোস্তফা। নিহত দুর্বাশা দাস (৩৫) আড়িয়ামুগুর গ্রামের কালাবাসী দাসের ছেলে।
আহতরা হলেন নিহত দুর্বাশা দাসের ভাই ভূষণ দাস (৩৪) ও বোন সুধন্য দাস (২৮)। অপর আরেক কিশোর বায়েজিদ মিয়া (১৩) উপজেলার বাগহাতা গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে। তাকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
নেত্রকোণা : নেত্রকোণার মদন উপজেলায় মাদ্রাসায় যাওয়ার পথে বজ্রপাতে এক শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। সকাল সোয়া ৬টার দিকে উপজেলার তিয়শ্রী ইউনিয়নের তিয়শ্রী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে বলে ওই ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মোতাহার হোসেন জানিয়েছেন। মৃত আরাফাত মিয়া (৯) তিয়শ্রী গ্রামের আব্দুস সালামের ছেলে এবং স্থানীয় বাইতুল জান্নাত হাফিজিয়া মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ছিল।
সুনামগঞ্জ : শাল্লা উপজেলায় হাওরে গরুকে ঘাস খাওয়ানোর সময় বজ্রপাতে কলেজছাত্র নিহত হয়েছেন। সকাল সাড়ে ৭টায় উপজেলার আটগাঁও গ্রামের কালিকোটা হাওরে এ ঘটনা ঘটে বলে শাল্লা থানার ওসি শফিকুল ইসলাম জানান। নিহত রিমন তালুকদার আটগাঁও গ্রামের জাহেদ তালুকদারের ছেলে ও শাল্লা ডিগ্রি কলেজের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ছিল।
ওসি শফিকুল বলেন, বাড়ির পাশে কালিকোটা হাওরে নিজের চারটি গরুকে ঘাস খাওয়াতে নিয়ে গিয়েছিলেন রিমন। এ সময় তীব্র ঝড়বৃষ্টি শুরু হয়। সেখান থেকে ফেরার পথে বজ্রপাতে রিমনসহ তার একটি গরুও মারা যায়। পরে স্থানীয়রা খবর পেয়ে তার লাশ উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে যায়।
শরীয়তপুর : জেলার ভেদরগঞ্জে গরুর জন্য ঘাস আনতে গিয়ে বজ্রপাতে সেফালী বেগম (৩৫) নামের এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। তিনি উপজেলার সখিপুর ইউনিয়নের বেপারী কান্দি এলাকার এলাকার সোহরাব হোসেন বেপারীর স্ত্রী।
মাদারীপুর : জেলার রাজৈরে ধান কাটার সময় বজ্রপাতে কাজল বাড়ৈ (৪০) নামে আরেক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। তিনি উপজেলার বাজিতপুর গ্রামের জ্ঞান বাড়ৈর ছেলে।
যশোর (বেনাপোল) : বিকেলে জেলার শার্শায় বজ্রপাতে আমির হোসেন (৪০) নামে এক কৃষক নিহত হয়েছে। আমির হোসেন শার্শা উপজেলার বেড়ী–নারায়ণপুর গ্রামের কোরবান আলীর ছেলে।
ঝালকাঠি : ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলায় বজ্রপাতে আসমা আক্তার (২৫) নামে এক প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে। সোমবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে উপজেলার দপদপিয়া ইউনিয়নের উত্তর জুরকাঠি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত আসমা আক্তার ওই এলাকার ট্রাকচালক রুবেল মাঝির স্ত্রী। তিনি দুই সন্তানের জননী। নিহতের স্বামী জানান, তার স্ত্রী টয়লেট থেকে ঘরে ফেরার পথে বজ্রপাতে মারা যান। তার ছোট সন্তানের বয়স ১৫ দিন।