দেশের আধুনিকতম প্রযুক্তির গ্রিড সাব স্টেশন হয়ে উঠছে মদুনাঘাট

পুরোদমে চালু হচ্ছে জুনে, এখন চলছে টেস্টিং কমিশন

শুকলাল দাশ | রবিবার , ১২ মে, ২০২৪ at ১১:০১ পূর্বাহ্ণ

মদুনাঘাট ২১শ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন গ্রিড সাব স্টেশন পুরোদমে চালু হচ্ছে আগামী জুনে। এই গ্রিড সাব স্টেশনটি পুরোদমে চালু হওয়ার পর মাতারবাড়ি কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং বাঁশখালী এসএস পাওয়ারের উৎপাদিত বিদ্যুৎ এ সাব স্টেশনের মাধ্যমে সরবরাহ করা হবে। তখন হয়তো চট্টগ্রামবাসী লোডশেডিংয়ের দুর্ভোগ থেকে কিছুটা মুক্তি পেতে পারেন। সাব স্টেশনটির সংস্কার কাজ শেষ হওয়ায় এখন টেস্টিং কমিশনের কাজ চলছে বলে জানান পিজিসিবির চট্টগ্রাম মেইন পাওয়ার গ্রিড স্ট্রেনথেনিং প্রকল্পের পরিচালক। ২১শ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন ৪০০/২৩০ কেভি মদুনাঘাট গ্রিড সাব স্টেশনটি দেশের সর্বাধুনিক প্রযুক্তি নির্মিত।

পিডিবি সূত্রে জানা গেছে, মদুনাঘাট গ্রিড সাব স্টেশনটি ২০২২ সালে নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। প্রায় দুই বছরের কাছাকাছি সময় ধরে এই সাব স্টেশনটির সংস্কার কাজ চলার কারণে মাতারবাড়ি কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদিত বিদ্যুৎ মদুনাঘাট গ্রিড সাব স্টেশনে নিয়ে আসা যায়নি। এই কেন্দ্রের উৎপাদিত বিদ্যুৎ সরাসারি মেঘনা ঘাট গ্রিড সাব স্টেশনে চলে গেছে। শুধুমাত্র বাঁশখালী এসএস পাওয়ারের উৎপাদিত বিদ্যুৎ চট্টগ্রামের মদুনাঘাটে আনার জন্য তড়িঘড়ি করে ঐ সময় অস্থায়ীভাবে ৫২০ মেগওয়াটের একটি সঞ্চালন লাইন চালু করা হয়েছিল। আগামী জুনে মদুনাঘাট ৪০০/২৩০ কেভি গ্রিড সাব স্টেশনটি চালু হলে বাঁশখালী বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সমস্ত বিদ্যুৎ এবং মাতারবাড়ি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদিত প্রায় বিদ্যুৎ (৮০০ মেগাওয়াট) এই সাব স্টেশন দিয়ে সরবরাহ করা যাবে।

এই ব্যাপারে পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ লিমিটেডের ঢাকাচট্টগ্রাম মেইন পাওয়ার গ্রিড স্ট্রেনথেনিং প্রকল্পের পরিচালক (পিডি) প্রকৌশলী মো. এনামুল আজাদীকে বলেন, আগামী জুনে পুরোদমে চালু হবে ২১শ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন ৪০০/২৩০ কেভি মদুনাঘাট গ্রিড সাব স্টেশন। এখন টেস্টিং কমিশন চলছে। জুনে বাঁশখালী এসএস পাওয়ারের ১৩শ ২০ মেগওয়াট এবং মাতারবাড়ি কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে ৮শ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ মদুনাঘাট গ্রিড সাব স্টেশন দিয়ে জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা যাবে।

প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী মো. এনামুল বলেন, ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে ৪০০/২৩০ কেভি মদুনাঘাট গ্রিড সাব স্টেশন সংস্কারের সময় ক্রেন দিয়ে একটি যন্ত্রাংশ বসানোর সময় ক্রেনের রশি ছিঁড়ে আর একটার ওপর পড়ে দুটি হেভি যন্ত্রই নষ্ট হয়ে যায়। এসময় এই সাব স্টেশনের সুইচ গিয়ার নষ্ট হয়েছিল। এগুলোর একটির ওজন ১০ টনের ওপরে। এগুলো সর্বাধুনিক প্রযুক্তির যন্ত্রাংশ হওয়াতে তা সংগ্রহ করতে একটু সময় লেগেছে। এই কারণে মেরামত কাজ সম্পন্ন করতে কিছু বিলম্ব হয়। এখন কাজ শেষ হয়েছে, টেস্টিং কমিশন চলছে। আগামী জুনে পুরোদমে চালু হবে ৪০০/২৩০ কেভি মদুনাঘাট গ্রিড সাব স্টেশনটি। মদুনাঘাট গ্রিড সাব স্টেশনটি দেশের সর্বাধুনিক প্রযুক্তিতে নির্মিত।

মাতারবাড়ি কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন ক্ষমতা ১২শ মেগাওয়াট এবং বাঁশখালী এস আলম শিল্প গ্রুপের এস এস পাওয়ার প্ল্যান্টের উৎপাদন ক্ষমতা ১৩২০ মেগাওয়াট। প্রথম ধাপে বাঁশখালী এসএস পাওয়ার প্ল্যান্ট উৎপাদনের আসার সময় আমরা মদুনাঘাটে অস্থায়ীভাবে ৫২০ মেগাওয়াটের একটি সাব স্টেশন বসিয়েছিলাম। এটা দিয়ে এখনো এই কেন্দ্রের বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু আছে। আগামী জুনে ৪০০/২৩০ কেভি মদুনাঘাট গ্রিড সাব স্টেশনটি চালু হলে তখন বাঁশখালী বিদ্যুৎ কেন্দ্রে উৎপাদিত সব বিদ্যুৎ মদুনাঘাট চলে আসবে। একই সময়ে মাতারবাড়ি কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ১২শ মেগাওয়াট বিদ্যুতের মধ্যে ৮শ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ বাঁশখালী হয়ে মদুরাঘাট আসবে। অবশিষ্ট ৪শ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ মাতারবাড়ি থেকে সরাসারি মেঘনাঘাট চলে যাবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকাল রাতে কুতুবদিয়া পৌঁছাবে এমভি আবদুল্লাহ
পরবর্তী নিবন্ধগুরুত্বপূর্ণ তথ্য মিলেছে, মূল রহস্য উদঘাটন : পুলিশ