চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসের আয়োজনে ‘প্রবাসীর অধিকার, আমাদের অঙ্গীকার’ ও ‘বৈষম্যহীন বাংলাদেশ, আমাদের সবার’ স্লোগানে ‘দক্ষতা উন্নয়ন ও কর্মসংস্থানের জন্য পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর সাথে জনসংযোগ’ শীর্ষক সেমিনার গতকাল মঙ্গলবার বেলা ১১টায় সার্কিট হাউজের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়েছে। চট্টগ্রাম জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসের সহকারী পরিচালক মহেন্দ্র কুমার চাকমার সভাপতিত্বে ও হযরত শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর প্রবাসী কল্যাণ ডেস্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. জহিরুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. কামরুজ্জামান।
বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ–কোরিয়া কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের (বিকেটিটিসি) অধ্যক্ষ প্রকৌশলী পলাশ কুমার বড়ুয়া ও মহিলা টিটিসি’র অধ্যক্ষ প্রকৌশলী আশরিফা তানজীম। এ সময় সরকারি–বেসরকারি দপ্তরের কর্মকর্তাগণ সেমিনারে মতামত ব্যক্ত করেন। শুরুতে সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন চট্টগ্রাম জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসের সহকারী পরিচালক মহেন্দ্র কুমার চাকমা। বিভিন্ন জিও–এনজিও প্রতিনিধিগণ সেমিনারে অংশ নেন।
সেমিনারে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. কামরুজ্জামান বলেন, দেশের অর্থনীতির মেরুদণ্ড রেমিটেন্স। প্রবাসী কর্তৃক প্রেরিত রেমিটেন্স দেশে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের অন্যতম পন্থা। প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্স দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখছে। দক্ষতা উন্নয়ন ও কর্মসংস্থানের জন্য তরুণ প্রজন্মের সাধারণ শিক্ষার পাশাপাশি কারিগরি শিক্ষার বিকল্প নেই। উন্নয়নের জন্য দক্ষতার প্রয়োজন আর দক্ষতার উন্নয়ন হলে কর্মসংস্থান বাড়বে। তিনি আরও বলেন, স্বাবলম্বী হতে হলে দক্ষতা অর্জন অবশ্যই জরুরি। বিপদে পড়ে যাতে কেউ বিদেশ না যায় সে ব্যাপারে আমাদেরকে সচেতন হতে হবে। ১৭ কোটি মানুষের দেশে মাত্র দেড় কোটি লোক বিদেশ থাকেন। কর্মক্ষেত্রে পুরুষের পাশাপাশি নারী গোষ্ঠীকে কারিগরি শিক্ষায় সম্পৃক্ত করতে পারলে আমরা পিছিয়ে থাকবো না। সেমিনারে অন্যান্য বক্তারা বলেন, দালালদের খপ্পরে পড়ে বিদেশ না গিয়ে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ নিয়ে দক্ষ হয়ে সেই দেশের ভাষা শিখে আইন কানুন মেনে বিদেশ গেলে মর্যাদা ও অধিক বেতন আদায় করা যায়। প্রবাসীদের নানা সমস্যা ও তা সমাধানের উপায় এবং দেশের জিডিপিতে রেমিট্যান্সযোদ্ধাদের ভূমিকার সম্ভাবনা নিয়ে আলোকপাত করেন বক্তারা।
মহেন্দ্র কুমার চাকমা জানান, এ অফিসের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ নিয়ে চলতি ২০২৫ সালের মার্চ মাসে নারী–পুরুষ মিলে ১০ হাজার ৮৬ জন বিদেশ গমন করেছে এবং মার্চ মাসে বাংলাদেশ থেকে বিদেশ গমন করেছে ৩ লাখ ৩৭ হাজার ৫৮ জন। তন্মধ্যে পুরুষ ৩ লাখ ১৫ হাজার ৯৯৩ জন ও মহিলা ২১ হাজার ৬৫ জন। চলতি সালের ফেব্রুয়ারি মাসে বাংলাদেশে রেমিটেন্স এসেছে ৪ হাজার ৭১২ দশমিক ৭৭ মিলিয়ন ডলার। ডিইএমও চট্টগ্রাম থেকে প্রবাসে যাওয়ার উদ্দেশ্যে গত মার্চে রেজিস্ট্রেশন করেছিল ৫ হাজার ৬৫৬ জন, ফিঙ্গার দিয়েছে ৩ হাজার ৮২৩ জন, স্মার্ট কার্ড পেয়েছে ২ হাজার ৩৩৭ জন এবং পিডিও ১ হাজার ৯৮৩ জন। এছাড়াও চট্টগ্রাম জেলায় বিকেটিটিসি, মহিলা টিটিসিসহ অন্যান্য টিটিসিগুলো অভিবাসন প্রত্যাশী কর্মীদের প্রাক–বহির্গমন প্রশিক্ষণ প্রদান করে থাকেন। প্রেস বিজ্ঞপ্তি।