দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে অগ্রগতির কাজে অংশ নিতে হবে

রতন কুমার তুরী | মঙ্গলবার , ২১ নভেম্বর, ২০২৩ at ৭:২৪ পূর্বাহ্ণ

দেশপ্রেম এমন একটি শব্দ যে শব্দে জড়িয়ে আছে দেশের প্রতি গভীর মায়ামমতা এবং ভালোবাসা। যে ভালোবাসা হৃদয়ের গভীর থেকেই উদগিরিত হয়। যে ভালোবাসায় কোনো খাঁদ নেই। নিজ দেশের প্রতি এমন ভালোবাসা সাধারণত দেশের গণ্ডির মধ্যে থাকতে তেমন একটা দেখা না গেলেও বিদেশে অবস্থান করলে এমন ভালোবাসা মরমে মরমে উপলব্ধি করা যায়। কোনো দেশের মানুষ যদি তার দেশকে মনপ্রাণ দিয়ে ভালোবাসে তাহলে সে দেশটি উন্নতির পথে যেতে বেশিদিন সময় লাগে না। প্রকৃতপক্ষে একটির দেশের উন্নতির জন্য সকল শ্রেণি এবং পেশার মানুষের শ্রম প্রয়োজন হয়। নিজনিজ অবস্থান থেকে দেশপ্রেমে জাগ্রত হয়ে দেশের জন্য কাজ করার মধ্যে আলাদা একটা আনন্দ রয়েছে যেটি আর কোনো কাজে পাওয়া যায় না। ছোটবড় সব কাজই দেশ উন্নয়নে সমান গুরুত্ব বহন করে। দেশ স্বাধীনের পাঁচ দশকেরও বেশি সময় পার হয়ে গেছে। এখন আর পেছনে পড়ে থাকার সুযোগ নেই। এখন শুধু সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার পালা। আর বাংলাদেশকে বিশ্বের কাছে অনেক উঁচুতে তুলে ধরার পালা। দেশ যখন উন্নয়নের দীর্ঘপথ অতিক্রম করছে, ঠিক তখনও কিছু দেশবিরোধী ৭১ সালেই ঘোরপাক খাচ্ছে। এসব দেশবিরোধীর যাতনা এতোবেশি যে, পাঁচ দশকের পরও তারা সেই পাকিস্তান প্রীতি ছাড়তে পারেনি। আমাদের আশেপাশে এমনও উচ্চ শিক্ষিত মানুষ আছে যারা এখনও তাদের নিজের দেশটাকে মনেপ্রাণে মেনে নিতে পারেনি শুধুমাত্র এদেশে জন্মেছে বলেই আর তার পূর্বপুরুষ সাধারণ মানুষকে ঠকিয়ে বেশ কিছু সম্পত্তি হাতিয়ে নিয়েছে বলেই এদেশে থাকা। এমন মানুষ সব সরকারের আমলেই বহাল তবিয়তেই থাকতো এবং এসরকারের আমলেও আছে। অনেক দেশ বিরোধী আছে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় মানুষের জায়গাজমি দখল করেছে, ঘর দখল করেছে, দোকান দখল করেছে এককথায় তারা যুদ্ধকালীন আংগুল ফুলে কলাগাছ বনে গেছে, যুদ্ধশেষে এসকল মানুষের মধ্যে কেউ কেউ বীর মুক্তিযোদ্ধাও বনে গেছে।

দেশ স্বাধীনের পর এসব সুবিধাভোগী অন্যায়কারী দেশবিরোধীদের চিহ্নিত করা সম্ভব হয়নি। এরা সবাই খোলস পাল্টে কখনও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের দলে কখনওবা বিভিন্ন দলে ঢুকে তাদের অবস্থান মজবুত করেছে। এরা অনেক সময় প্রতিটি সরকারের সময়ই বেনিফেশিয়ারি হয়েছে। এরা কখনোই দেশের প্রতি কৃতজ্ঞতা দেখায়নি। দেশের প্রগতিশীল মানুষদের প্রতি একাত্মতা প্রকাশ করেনি। ভেতরে ভেতরে দেশের প্রগতিশীল দলগুলোকে, প্রগতিশীল মানুষগুলোকে কীভাবে আটকানো যায় সে চিন্তায় ব্যস্ত থেকেছে। অথচ তাদের এসব কূটবুদ্ধি পরিত্যাগ করে তারা যদি দেশকে সত্যিকার অর্থে ভালোবাসতো তাহলে দেশ আরো এগিয়ে যেতো। প্রকৃতপক্ষে আমরা যদি সবাই দেশপ্রেমে জাগ্রত হয়ে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করতে পারতাম দেশ আরো এগিয়ে যেতো। তাই আসুন সবাই দেশপ্রেমে জাগ্রত হয়ে দেশ উন্নয়নে এগিয়ে যাই।

লেখক : কলেজ শিক্ষক, প্রাবন্ধিক।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচাই আত্মবিশ্বাস ও চাই সৃজনশীলতা
পরবর্তী নিবন্ধষাট দশকের ছাত্র-আন্দোলন থেকে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ