দেশকে আরো কিছু দেওয়ার চেষ্টা করব

বেগম রোকেয়া পদক পেয়ে রাঙামাটির ঋতুপর্ণা

আজাদী ডেস্ক | বুধবার , ১০ ডিসেম্বর, ২০২৫ at ৭:৪৬ পূর্বাহ্ণ

দেশের নারী ফুটবলের অগ্রযাত্রায় নিজেকে প্রতিনিয়ত প্রমাণ করে এগিয়ে যাওয়া তারকা ফুটবলার রাঙামাটির মেয়ে ঋতুপর্ণা চাকমা এবার পেলেন রাষ্ট্রীয় সম্মাননা বেগম রোকেয়া পদক২০২৫। নারীশিক্ষা, নারী অধিকার, মানবাধিকার ও নারী জাগরণে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ চার বিশিষ্ট নারীর হাতে বেগম রোকেয়া পদক তুলে দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এই পদক তুলে দেন তিনি।

এর আগে দলীয়ভাবে বেশ কিছু পুরস্কার পেয়েছে বাংলাদেশ জাতীয় নারী ফুটবল দল। এ বছর সাফ জয়ী বাংলাদেশ দলকে একুশে পদক প্রদান করা হয়। কিন্তু ব্যক্তিগত এই সম্মাননা পেয়ে উচ্ছ্বসিত ঋতুপর্ণা। তাই তো এই পুরস্কার তার কাছে বিশেষ কিছু। তিনি বলেন, প্রতিটি পুরস্কারই সম্মান ও গৌরবের। এই বছরই একুশে পদক পেয়েছি, যা অত্যন্ত গৌরবের। সেটা ছিল দলীয়। এবার ব্যক্তিগতভাবে রোকেয়া পদক পেয়েছি, সরকারের এই পদকটি তাই আমার কাছে বিশেষ।

ঋতুপর্ণা সংবাদমাধ্যমকে বলেন, যেকোনো পুরস্কার বা সম্মাননা আমার জন্য অনেক বড় বিষয়। এটি আমাকে অনেক উৎসাহ দেয়। এই প্রথম কোনো ফুটবলার রোকেয়া পদক পেল, তাই এটা আমার কাছে বিরাট সাফল্য মনে হচ্ছে। আমি খুব, খুব খুশি। প্রতিটি খেলোয়াড় দেশের জন্য লড়েন। সব খেলোয়াড়ই কষ্ট করে উঠে আসেন। এমন একজন ব্যক্তির নামে এমন পদক পাওয়ার পর আমার দেশ ও সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতা আরো বেড়েছে। এই পদকে অনুপ্রাণিত হয়ে দেশ ও সমাজকে আরো কিছু দেওয়ার চেষ্টা করব।

২০২১ সাল থেকে জাতীয় দলে খেলছেন ঋতুপর্ণা। বাংলাদেশের জার্সিতে ৩৩ ম্যাচে করেছেন ১৩ গোল। ২০২৪ সাফে হয়েছেন টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড়। নারী সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশ দুইবার শিরোপা জয় করে। প্রথমবারের মতো এশিয়ান কাপে মূল পর্বে অংশ নিতে আগামী বছর অস্ট্রেলিয়া সফরে যাচ্ছে নারী দল। এসব সাফল্যের পিছনে ঋতুপর্ণাদের অবদান অনস্বীকার্য।

কিন্তু ‎ঋতুপর্ণার এত দূর আসাটা সহজ ছিল না। মা ভূজোপতি চাকমা দীর্ঘদিন ধরে ক্যানসারে আক্রান্ত। ২০১৫ সালে বাবা বরজ বাঁশি চাকমা মারা যান। তখন ঋতুপর্ণার বয়স ছিল মাত্র ১১ বছর। ২০২২ সালের জুনে দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় ছোট ভাই পার্বণ চাকমার। কিন্তু তারপরও থেমে থাকেননি ঋতুপর্ণা। দেশকে কিছু দেওয়ার প্রয়াসে এগিয়ে গেছেন স্বমহিমায়। তারই স্বীকৃতিস্বরূপ তার হাতে উঠল নারী অগ্রযাত্রায় দেশের এই রাষ্ট্রীয় সম্মান।

রাঙামাটি প্রতিনিধি জানান, ঋতুপর্ণা চাকমার বাড়ি রাঙামাটি জেলার কাউখালী উপজেলার ঘাগড়া ইউনিয়নের মঘাছড়ি গ্রামে। টানা দুইবার সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ শিরোপা জয়ের মধ্য দিয়ে আলোচনা আসেন তিনি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধআজ সন্ধ্যায় অথবা কাল সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা
পরবর্তী নিবন্ধলন্ডনযাত্রা স্থগিত, আপাতত ঢাকাতেই খালেদা জিয়ার চিকিৎসা