দেরিতে হলেও যৌক্তিক চিন্তা চেতনা

স.ম.জাফর উল্লাহ | শুক্রবার , ১২ ডিসেম্বর, ২০২৫ at ৯:০০ পূর্বাহ্ণ

বিশ্ববিদ্যালয় জ্ঞান আহরণের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ। এখানে গতানুগতিক শিক্ষার চেয়ে গবেষণামূলক শিক্ষা অর্জনের ব্যাপকতা বিস্তৃত। শিক্ষার সীমাবদ্ধতার প্রাচীর যেখানে জ্ঞান অনুসন্ধানুসারীদের আবদ্ধ সংকীর্ণতা আড়ষ্ট স্পর্শ করতে পারে না। শিক্ষা সাহিত্য সংস্কৃতি চর্চার মূল উৎস হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়। শহর নগর গ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলে কিছু সাহিত্য প্রেমীদের স্বউদ্যেগে সাহিত্য চর্চার বিছিন্ন বিক্ষিপ্ত প্রয়াস সাহিত্য প্রেমীদের আশা জাগিয়ে রেখেছিল। সাহিত্যের প্রধান উপাদান হচ্ছে লেখকের মনের অভিব্যক্তি কলমের আঁচড়ে যা প্রকাশ করে তার সমষ্টি। যে জাতির সাহিত্য যত উন্নত সে জাতির ইতিহাস ঐতিহ্য তত সমৃদ্ধ। বাঙালির সাহিত্য সংস্কৃতির রয়েছে এক গৌরবোজ্জ্বল সমৃদ্ধ ইতিহাস। পরাধীনতার নির্মম নিয়তি এ জাতিকে বারবার নিজস্ব স্বকীয়তায় আঘাতে জর্জরিত করার ফলে সাহিত্য সংস্কৃতি চর্চা সংকুচিত হয়ে পড়ে। স্বাধীনতার পর রাজনৈতিক নানা ঘাত প্রতিঘাতে পরিশুদ্ধ গণতন্ত্র চর্চা ব্যাহত হলে সর্বত্র দলীয়করণের থাবা থেকে সাহিত্য চর্চার ও নিস্তার মেলে নি। লেখকদের বিচরণ ক্ষেত্রও ছিল অলিখিত অবরুদ্ধ। মনের ভাব মুখের ভাষা প্রকাশের মাধ্যম কলমের গতি এক প্রকার নিয়ন্ত্রিত। ভাবতাম দেশের একটি সর্বোচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে লেখকদের সম্মিলিত সমষ্টিগত কোনও সংগঠন দৃশ্যমান নেই কেন বা থাকতে বাধা কোথায়। দেশের আনাচে কানাচে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পরিসরে লেখকদের নিয়ে নানা আয়োজন প্রায় সময় বিভিন্ন সংগঠনের অনুষ্ঠানাদি প্রতিষ্ঠিত অপ্রতিষ্ঠিত লেখকদের উৎসাহ উদ্দীপনা উদ্বুদ্ধ সৃষ্টি করে। বিশ্ববিদ্যালয় সাহিত্য চর্চার অবাধ সুষ্ঠু স্বাধীন উর্বর গবেষণার বিচরণ ক্ষেত্র হলেও উপযুক্ত পরিবেশ পৃষ্ঠপোষকতার অভাব দীর্ঘদিন যাবৎ প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়ায়। সাহিত্য চর্চা একেবারে হয়নি তা নয় তবে তা ছিল সরকার বা দলের নির্দিষ্ট নিয়ম নীতির গণ্ডির মধ্যে। দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ যেখান থেকে সাহিত্যিক দার্শনিক কবি লেখক সৃষ্টির সুতিকাগার জাতিকে শিক্ষা সাহিত্যে সমৃদ্ধ করবে সে ক্ষেত্রটি অর্বাচীন চিন্তা চেতনায় নেতিবাচক দৃষ্টিভঙির উপর্যুপরি আঘাতে নিস্তব্ধ হয়ে পড়ে। সমাজ ও রাষ্ট্র ব্যবস্থার নানা অসংগতি বিবেকের তাড়নায় শিক্ষিত স্বশিক্ষিত অল্প শিক্ষিত ব্যক্তি লেখা লেখনির মাধ্যমে তুলে ধরার চেষ্টা করে তা যদি একটি সাংগঠনিক কাঠামোর মাধ্যমে হয় তার গুরুত্ব সর্ব মহলে অধিক গ্রহণযোগ্যতা লাভ করে। প্রাতিষ্ঠানিক জ্ঞান ভিত্তিক সাহিত্য চিন্তা চেতনা সৃজনশীল সমাজ ও রাষ্ট্র কাঠামো গঠনে সাহিত্যের বিকল্প নেই। সাহিত্য সংস্কৃতি চর্চার অভিপ্রায়ে নিজস্ব স্বকীয়তার আন্দোলনের যে কেউ সাহস করে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙি নিয়ে এগিয়ে আসলে এতে ঘুমিয়ে থাকা লেখক ও সাহিত্য প্রেমিদের অভূতপূর্ব সাড়া পাওয়া যাবে এবং নিজেদের সাহিত্য সংস্কৃতির জায়গা করে নিতে সময় লাগবে না। আশার কথা হচ্ছে অনেক দেরিতে হলেও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়কেন্দ্রিক একটি লেখক পরিষদ গঠন হয়েছে যাঁদের চিন্তা চেতনায় এ পরিষদ আলোকবর্তিকা হয়ে সমাজ তথা জাতির সাহিত্য ভণ্ডার সমৃদ্ধ করবে সকলের ভূমিকা খাটো করে দেখার সুযোগ নেই অধ্যাপক ড. মাহবুবুল হক, . ওবাইদুল করিম ও সাহিত্যিক রাশেদ রউফের অবদান এ মহান উদ্যোগ প্রত্যাশিত সফলতা লাভ করবেএটাই কাম্য।

পূর্ববর্তী নিবন্ধঅন্ধকার ভেদ করে আলোর খোঁজে
পরবর্তী নিবন্ধঈমানদারের  বৈশিষ্ট্য