কর্ণফুলীতে অবৈধভাবে গড়ে উঠা দেয়াল ও ভবনের ছাদ ভেঙে ‘বাদামতল খালমুখ’ দখলমুক্ত করেছে উপজেলা প্রশাসন। উপজেলার চরপাথরঘাটায় বাদামতল খাল মুখের অবৈধ দখলদার উচ্ছেদে টানা পাঁচ ঘণ্টা অভিযান পরিচালনা করেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট পিযুষ কুমার চৌধুরী। অভিযানে সার্বিক সহযোগিতা দেন সিএমপি কর্ণফুলীর পুলিশ ও চরপাথরঘাটা ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা উজ্জ্বল কান্তি দাশ।
জানা যায়, চরপাথরঘাটার বাদামতল খালের মুখে প্রভাবশালী ব্যক্তিদের পরিচালিত দুটি কোম্পানি দীর্ঘদিন ধরে খালের জমি দখল করে স্থাপনা তৈরি করেছিলেন। এতে খাল মুখ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পানি চলাচল সম্পূর্ণ বাধাগ্রস্ত হয়। এমনকি জোয়ারের সময়ও কর্ণফুলী নদীর পানি বাদামতল শাখা খালের প্রবেশে বাধা হয়ে দাঁড়ায় ওসব স্থাপনার কারণে। কোম্পানি দুটি প্রভাবশালী হওয়ায় সহজে এলাকার কেউ প্রতিবাদ করার সাহস পেত না। কিন্তু গত কয়েকদিনে আবারও খালের মুখে দেয়াল নির্মাণ করছেন এমন দৃশ্য দেখে স্থানীয় লোকজন ক্ষোভ প্রকাশ করে এসিল্যান্ডের কাছে অভিযোগ করেন।
স্থানীয়রা জানান, প্রথমে খালের বিভিন্ন অংশে মাটি ফেলে ভরাট করা হয়। পরে সেখানে নির্মাণ করা হয় বিভিন্ন স্থাপনা, বাড়িঘর ও টয়লেট। এলাকাবাসীর মতে, প্রভাবশালীরাই এসব কাজে জড়িত। তারা অতীতে প্রশাসনের কোনো বাধা না পেয়ে এসব কাজ করার উৎসাহ পায়। শুধু দখল আর ভরাটই নয়, পুরো বাদামতল মূল খালে ময়লা আবর্জনা ফেলে একরকম অস্বস্তিকর পরিবেশ সৃষ্টি করা হয়েছে।
ইউনিয়ন ভূমি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চরপাথরঘাটার ১ নম্বর সিটে সরকারি খাস খতিয়ানভুক্ত এই খালে ২৮৫ দাগে জমি রয়েছে প্রায় ৮৭ শতক। কিন্তু খালটির পুরানো ঐতিহ্য হারিয়ে গেছে দখলদারিত্বের কারণে। আগে খালটির প্রশস্ততা ছিল ৪০ থেকে ৫০ ফুট। কোনো কোনো জায়গায় ৩০ ফুট। এখন তা দিনে দিনে দখলে সংকুচিত হয়েছে।
জানতে চাইলে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও এঙিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট পিযুষ কুমার চৌধুরী বলেন, স্থানীয় জনগণের অভিযোগ পেয়ে মাঠে গিয়ে এর সত্যতা পেয়েছি। খালের মুখ দখলের প্রমাণ পেয়েছি। খাল মুখে বিভিন্ন স্থানে স্থাপনা তৈরি করে বাধা সৃষ্টি করা হয়েছে। পরে আমরা তা অবমুক্ত করে দিয়েছি। নিজেরাও কিছু সরিয়ে নিয়েছে। বিগত ১৫ বছর ধরে এ দখলদারিত্বের রাজত্ব চালানো হয়। তিনি জানান, জলাবদ্ধতা নিরসনে উচ্ছেদ অভিযান এবং খাল খনন করতে চরপাথরঘাটার সব খালের অবস্থা পরিদর্শন করা হচ্ছে।