গত দুদিন ধরে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার প্রভাবে চট্টগ্রাম নগরীর প্রায় এলাকা ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন ছিল। এতে করে ভোগান্তিতে পড়েছেন বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারা। দিনভর থেমে থেমে মাঝারি ও ভারী বৃষ্টির সাথে দমকা হওয়ার কারণে নগরীর প্রায় এলাকা বিদ্যুতের ভোগান্তি বাড়ে। পিডিবির সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরা জানান, গত দুদিনে চট্টগ্রামে বিদ্যুতের কোনো লোডশেডিং ছিল না। চাহিদার দ্বিগুণের বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে। গতকাল চট্টগ্রামের চাহিদা ছিল মাত্র সাড়ে ৮শ মেগাওয়াট। উৎপাদন হয়েছে ২ হাজার মেগাওয়াট। পিডিবির প্রতিদিনের উৎপাদনের তালিকায় দেখা যায়, এর আগে ১২ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রামে উৎপাদন হয়েছিল ২৪৯৩ মেগাওয়াট। বিদ্যুৎ বিভাগে খবর নিয়ে জানা গেছে, কোথাও তার ছিঁড়ে যায়, আবার কোথাও ট্রান্সফর্মারে আগুন লেগে যায়। থেমে থেমে ভারী বর্ষণে বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মীরা কাজ করতে না পারায় নগরীর কোনো কোনো এলাকায় ৪ ঘণ্টা থেকে ৫ ঘণ্টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন ছিল।
পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস কর্মকর্তা জহিরুল ইসলাম আজাদীকে বলেন, গতকাল শনিবার বিকাল ৩টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রামে ১৮৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। সমুদ্র বন্দরসমূহকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত এবং নদী বন্দরগুলোকে ২ নম্বর নৌ সতর্কতা সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। সাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে চট্টগ্রামে আজ রোববারও বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এদিকে দিনভর থেমে থেমে মাঝারি ও ভারী বৃষ্টির কারণে চট্টগ্রামের নিচু এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। নগরীর বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে পড়ে। এতে ভোগান্তি পোহাচ্ছে চট্টগ্রামের বাসিন্দারা। শুক্রবার নগরীর খুলশী, দেওয়ানবাজার, জামালখান, মোমিন রোড, লাভ লেইন এলাকায় বিদ্যুতের আসা–যাওয়ার ভোগান্তিতে পড়েন গ্রাহকেরা।
রহমান নগর আবাসিক এলাকার বাসিন্দা জাহিদুল করিম চৌধুরী আজাদীকে বলেন, গত শুক্রবার আমাদের এলাকায় সন্ধ্যা ৬টায় বিদ্যুৎ চলে গেলে পিডিবিকে বারবার বলা হয়। রাত ১১টার পর বিদ্যুৎ এসেছে। এদিকে রহমান নগর হিলভিউ, খুলশী, আলফালাহ গলি, পূর্ব নাসিরাবাদসহ পুরো এলাকায় একটানা ৫ ঘণ্টা বিদ্যুৎ ছিল না। পিডিবি জানিয়েছিল, ট্রান্সফর্মারের সমস্যা হয়েছে।
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড চট্টগ্রামের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আশোক কুমার চৌধুরী আজাদীকে বলেন, এখন চট্টগ্রামে কোথাও লোডশেডিং নেই। চট্টগ্রামের চাহিদাও কম। উৎপাদন অনেক বেশি। শনিবার (গতকাল) চট্টগ্রামের চাহিদা ছিল মাত্র সাড়ে ৮শ মেগাওয়াট। উৎপাদন হয়েছে ২ হাজার মেগাওয়াট। বিদ্যুতের ভোগান্তি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে বিভিন্ন স্থানে তার ছিঁড়ে যাচ্ছে। কোথাও ট্রান্সফর্মার নষ্ট হচ্ছে। বৃষ্টির মাঝে আমাদের লোকজনের কাজ করতে সমস্যা হচ্ছে।