মাধব দেবনাথ নামে এক যুবককে গত শুক্রবার থেকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না-এমন একটি ফোন আসে কোতোয়ালী থানার ওসি মোহাম্মদ মহসীনের কাছে। ফোনটা করেন নিখোঁজ মাধবের ফুফাতো ভাই পিন্টু। শুরু হয় পুলিশি তৎপরতা। এর মধ্যে ঘটনাটি নগরীর টেরীবাজারের আফিমের গলি এলাকায় পিন্টুর বাসার আশেপাশে, মাধবের কাজের ক্ষেত্র হাজারিগলিতে জানাজানি হয়। একপর্যায়ে পিন্টুর প্রতিবেশীদের কাছ থেকে খবর পাওয়া যায় যে, তিন দিন ধরে তার বাসার আশেপাশে বেশ দুর্গন্ধ, যেন কিছু পচে গেছে। এর মধ্যে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলেন ওসি মহসীন। পরে কৌতূহলবশত অভিযান চালান পিন্টুর বাসায়। দুর্গন্ধের উৎস খুঁজতে ঢুকে পড়েন বেডরুমে। এক পর্যায়ে বেরিয়ে আসে গন্ধের উৎস। দেখা যায়, খাটের নিচে রেখে দেওয়া হয়েছে একটি লাশ। লাশটি অন্য কারো নয়, সেই মাধব দেবনাথের (২৪)। মাধব কুমিল্লার ভাঙ্গারবাজার থানার খাটাস গ্রামের হরিপদ দেবের সন্তান। তিনি হাজারী লেইনে একটি গহনা তৈরির কারখানায় কাজ করতেন।
লাশ উদ্ধারের পর আটক করা হয় পিন্টু, তার স্ত্রী, বাবা-মা ও দুই ভাইকে। শুরু হয় জিজ্ঞাসাবাদ। এদের মধ্যে একজন খুনের দায় স্বীকার করায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে বলে জানা গেছে।
ওসি মহসীন বলেন, নিহত মাধবের সঙ্গে নিজের স্ত্রীর পরকিয়া ছিল বলে সন্দেহ করছিল পিন্টু। এই সন্দেহ থেকে তাকে বাসায় ডেকে এনে খুন করা হয়। পরে লাশ ফেলে রাখা হয় খাটের নিচে। মাধবের হাত-পা বাঁধা ছিল। গলায় শ্বাসরোধের চিহ্ন পেয়েছি। মরদেহ কিছুটা পচে গেছে।
ওসি জানান, ওই বাসায় পিন্টু, তার স্ত্রী, তার ছোট দুই ভাই এবং মা-বাবা থাকেন। আর মাধব থাকতেন লালদীঘির পাড়ে একটি ব্যাচেলর বাসায়। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চমেক হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। থানা-পুলিশ ছাড়াও পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন ও সিআইডি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
পুলিশের নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র জানিয়েছে, স্ত্রীর সাথে পরকীয়া মাধবকে খুনের অন্যতম কারণ। বিষয়টি পিন্টু জেনে গিয়েছিল আগেই। তবে তাদের একান্ত মুহূর্তের কিছু দৃশ্য গোপনে মোবাইলে ধারণ এবং তা ফাঁস করে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে কিছুদিন পরপর টাকা আদায়ের বিষয়টিও এখানে কাজ করেছে। পুলিশ এখন খতিয়ে দেখছে খুনের ঘটনাটি স্বামী-স্ত্রী মিলে ঘটিয়েছে নাকি আরো কেউ জড়িত ছিল।