চট্টগ্রাম বন্দরের রেফার ইয়ার্ডের ধারে কাছে যাওয়া যাচ্ছে না। কন্টেনার ভর্তি করে ভারত থেকে আনা মহিষের পচা মাংসের দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। কন্টেনারটি সরিয়ে নেয়ার জন্য তাগাদা দেয়া হলেও গতকাল পর্যন্ত তা সরানো হয়নি। বন্দরের বাতাসে ভেসে বেড়ানো দুর্গন্ধে ওই ইয়ার্ডের পাশের ইয়ার্ডগুলোতে কাজ করা কঠিন হয়ে ওঠেছে। বন্দরের দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানায়, ঢাকার সি আর দত্ত সড়কস্থ ইগলু ফুডস লিমিটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠান ভারত থেকে কন্টেনারে বোঝাই করে মহিষের মাংস আনে। দিন কয়েক আগে আনা কন্টেনারটি বন্দরের রেফার ইয়ার্ডে রাখা হয়। সার্বক্ষণিক বিদ্যুৎ সংযোগে থাকা ফ্রিজার কন্টেনারের ভিতরে মাংস থাকলেও তা থেকে দুর্গন্ধ বের হতে থাকে। এতে করে বন্দরের শ্রমিক কর্মচারীরা ঠিকমত কাজ করতে পারছেন না। বন্দরের পক্ষ থেকে কাস্টমসকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানকে কন্টেনার দ্রুত খালাস করার তাগাদা দেয়া হয়। কিন্তু তারা তা না করায় বন্দরের পক্ষে থেকে পরিবেশ অধিদপ্তরকেও বিষয়টি জানানো হয়েছে।
বন্দরের শ্রমিক মোহাম্মদ ইমরান হোসেন গতকাল দৈনিক আজাদীকে জানিয়েছেন, জাহাজ থেকে নামিয়ে কন্টেনারটি ইয়ার্ডে রাখার পর থেকে গন্ধ বের হচ্ছে। মাংসগুলো জাহাজেই পচে গেছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
বন্দর কর্তৃপক্ষের পত্র পাওয়ার কথা স্বীকার করে পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম মেট্রোর পরিচালক মোহাম্মদ নুরুল্লাহ নুরীর বলেন, আমাদেরকে বন্দর থেকে জানানো হলে আমরা টিম পাঠাই। সরজমিনে পরিদর্শনে আমরা অভিযোগের সত্যতা পেয়েছি। দুর্গন্ধ বের হচ্ছিল কন্টেনার থেকে। এতে আশপাশের পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। আমরা শুনানি করে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান ইগলু ফুডস এবং সিএন্ডএফ এজেন্ট কর্ণফুলী লিমিটেডকে ৫০হাজার টাকা করে মোট এক লাখ টাকা জরিমানা করি এবং দ্রুত কন্টেনার খালাস করে নেয়ার নির্দেশনা প্রদান করি। কি করে কন্টেনারটি খালাস করা হবে এবং পণ্যগুলো কি করে ধ্বংস করা হবে আমরা তার নির্দেশনাও প্রদান করেছি। আমরা তাদেরকে নির্দেশনা দিয়েছি যে, মাংসগুলো এমনভাবে খালাস করতে হবে যাতে ওগুলো কোনো প্রাণী খেতে না পারে। এসব মাংস মাটি, পানি ও বাতাসে যাতে দূষণ ছড়াতে না পারে তা নিশ্চিত করতে হবে। পরিবেশ সম্মতভাবে কন্টেনারটি পরিস্কার করার ব্যাপারেও তাদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
এই ব্যাপারে গতকাল চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব মোহাম্মদ ওমর ফারুকের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, কন্টেনারটি এখনো খালাস করা হয়নি। আমরা তাদেরকে তাগাদা দিয়েছি। সংশ্লিষ্ট সিএন্ডএফ এজেন্টের উদ্বৃতি দিয়ে বন্দরের অপর একজন কর্মকর্তা বলেন, পরিবেশ অধিদপ্তরের বেঁধে দেয়া নিয়ম মেনেই মাংসগুলো ধ্বংস করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। তবে এজন্য আরো দুয়েকদিন সময় লাগবে বলেও তিনি জানিয়েছেন।