এক ধর্ষণকাণ্ডের প্রেক্ষাপটে কক্সবাজার সৈকতে নারীদের জন্য যে সংরক্ষিত এলাকা চালু করেছিল জেলা প্রশাসন, সমালোচনার মুখে ১০ ঘণ্টার মধ্যেই তা বাতিল করেছে। গতকাল বুধবার রাত ১০টায় কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ‘নারী ও শিশুদের জন্য বিশেষ সংরক্ষিত অঞ্চল’ বাতিলের সিদ্ধান্ত জানানো হয়। খবর বিডিনিউজের।
এদিন দুপুরেই সৈকতের লাবণী পয়েন্টে বিশেষায়িত এ অঞ্চল আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেছিলেন জেলা প্রশাসক মামুনর রশীদ। সেই খবর প্রচার হওয়ার পর বিরূপ সমালোচনার মুখে পড়ার কথা জানিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রচারিত সংবাদের প্রতিক্রিয়া পর্যালোচনায় বিষয়টি নিয়ে বিরূপ মতামত পাওয়া গেছে। পর্যটকদের মতামতের উপর সবসময় জেলা প্রশাসন শ্রদ্ধাশীল। সুতরাং সম্মানিত পর্যটকদের মতামতের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে নারী ও শিশুদের জন্য এক্সক্লুসিভ জোন চালু রাখার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা হল।
বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় পর্যটন শহর কক্সবাজারের সমুদ্র সৈকত থেকে এক নারীকে তুলে নিয়ে ধর্ষণের ঘটনা ঘটে গত সপ্তাহে। এরপর সেখানে নারীদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়ে প্রশাসন। এই অবস্থায় বুধবার বিস্তৃত সৈকতের লাবণী পয়েন্টের বালিয়াড়ির অন্তত দেড়শ মিটার এলাকায় দুই পাশে সাইনবোর্ড ও গোলাপী রঙের পতাকা লাগিয়ে চিহ্নিত করে ‘নারী ও শিশুদের’ সংরক্ষিত বিশেষ এলাকা ঘোষণা করে বলা হয়, এখানে শুধু নারী ও শিশুদের প্রবেশাধিকার থাকবে। রাতের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জেলা প্রশাসক বলেন, বিভিন্ন সময়ে পর্যটকদের মধ্য অনেকেই অনুরোধ করেছেন যে, নারী ও শিশু পর্যটকদের জন্য যারা ইচ্ছে পোষণ করবেন তাদের জন্য একটি এক্সক্লুসিভ জোন থাকলে ভালো হয়। সেটা বিবেচনায় বিচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির সিদ্ধান্তের আলোকে একটি পৃথক এলাকা চিহ্নিত করে নারী ও শিশুদের জন্য এক্সক্লুসিভ জোন করার উদ্যোগ নেয়। এক্সক্লুসিভ জোনে যাদের ইচ্ছা হবে যাবে, অন্য পর্যটকরা তাদের ইচ্ছেমত ঘুরবেন। এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি বলেছিলেন, সমদ্র সৈকতে নারী ও শিশুদের বিশেষ একটা সুরক্ষার ব্যবস্থা হিসেবে সংরক্ষিত জোন গড়ে তোলা হয়েছে। নারীদের মধ্যে শুধু যারা নিজেদের মতো করে সময় কাটাত চান তাদের জন্যই বিশেষায়িত এ ব্যবস্থা। পর্যটক ভাইয়েরা, বোনেরা যারা আসবেন, তারা অবশ্যই যেখানে ইচ্ছা সেখানে সমুদ্রের নৈসর্গিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন। কিন্তু আমরা চাচ্ছি, নারী ও শিশুদের মধ্যে যারা নিজেদের মতো করে সৈকতে সময় কাটাতে চান তাদের জন্য বিশেষ একটা জোন থাকুক।
এ আগে ২০১৮ সালের ৪ জানুয়ারি কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে নারীদের জন্য বিশেষ অঞ্চল চালু করা হয়েছিল। পরে সেটা বন্ধ হয়ে যায়।